সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রস্তুতি ম্যাচে ‘মজিদময়’ দিন

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

প্রস্তুতি ম্যাচে ‘মজিদময়’ দিন

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পর বিসিবি একাদশের ব্যাটসম্যান আবদুল মজিদের উদ্যাপন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘সকালের সূর্যই বলে দেয় দিনটি কেমন যাবে।’ এ প্রবাদের যথার্থ প্রমাণ মিলল যেন চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। তা প্রমাণে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফরমার আবদুল মজিদ। তার একদিনের ক্রিকেটের স্টাইলে সেঞ্চুরি আর শান্ত-মোসাদ্দেকের ব্যাটের ওপর ভর করে ইংল্যান্ড একাদশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিন নিজেদের করে নেয় বিসিবি একাদশ। দিন শেষে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চালকের আসনে রয়েছে বিসিবি একাদশ।

টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বিসিবি একাদশের অধিনায়ক সৌম্য সরকার। মজিদকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ব্যাট করতে নামেন সৌম্য। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ব্রডকে চার মেরে রানের খাতা খুলেন মজিদ। এরপর তার ঝড়ো ব্যাটিং চমকে দেয় সবাইকে। তার ব্যাটিং তাণ্ডবে দিশাহারা হয়ে পড়ে ইংল্যান্ডের শক্তিশালী বোলিং লাইন। চতুর্থ ওভারে ক্রিস ওকসকে টানা তিন বলে মেরেছেন চার। যার শেষ দুটি দারুণ অফ ড্রাইভে। পরের ওভারে ব্রডকে টানা দুটি অফ ও অন ড্রাইভে চার। বাঁ হাতি স্পিনার জাফর আনসারীকে স্বাগত জানান চার মেরে। মজিদ তাণ্ডবে ৭তম ওভারেই দলীয় অর্ধশত রান পূর্ণ করে বিসিবি একাদশ। যাতে সৌম্যের অবদান ৪ আর মজিদের রান তখন ২৯ বলে ৪২। পরের ওভারে ওকসের বলে সৌম্য সাজঘরে ফিরে গেলে কিছুটা স্লথ হয়ে যায় মজিদের ব্যাটিং গতি। তারপরও ৩৯ বলে ৯ চারের সাহায্যে অর্ধশত রান পূরণ করেন মজিদ। বিসিবি একাদশের বাকি সময়টুকু ছিল মজিদময়। দারুণ সব অফ ড্রাইভ, অন ও কাভার ড্রাইভ। লাঞ্চের আগেই ৮৬ বলে ৯২ রান করে সেঞ্চুরির অসাধারণ কীর্তি করেই ফেলেছিলেন মজিদ। কিন্তু লাঞ্চের আগের ওভারে স্টাইক না পাওয়ায় বঞ্চিত হন সেঞ্চুরি থেকে। লাঞ্চ করার পর আর ব্যাটিংয়ে নামেননি মজিদ। তবে তার আগেই  দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে শান্তকে নিয়ে করেন ৭৯ রানের দারুণ এক জুটি। ম্যাচে রানের দেখা পেয়েছেন নাজমুল  হোসেন শান্ত ও মোসাদ্দেক হোসেন। আচমকাই এ ম্যাচ  খেলতে নামা মুমিনুল হক ফিরে গেছেন ১ রান করে।  স্কোয়াডে না থাকলেও টেস্টের আগে প্রস্তুতির জন্য খেলতে নামেন এ ম্যাচে। মঈন আলীর সোজা বল কাট করতে গিয়ে  বোল্ড হন ১ রানে। মোসাদ্দেক খেলেছেন নিজস্ব স্টাইলেই। তিনি ৪৯ বলে ৪৭ করে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন আনসারীকে। তার ইনিংসে ছিল তিনটি ছক্কা ও দুই চার। ছক্কাগুলো মেরেছেন তিন স্পিনার ব্যাটি, মঈন ও রুটকে। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে তানভীর আউট হওয়ার পর ফের ব্যাটিংয়ে নামেন মজিদ। ৬৬তম ওভারে ব্রডকে চার মেরে ৯৮ থেকে তিন অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করেন মজিদ। যদিও এক বল পরে ব্রডের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মজিদ। কিন্তু ফেরার আগেই তাণ্ডব বয়ে দেন ইংলিশ বোলারদের ওপর। যার অন্যতম শিকারই হন ব্রড। তার বলে আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩৪ রান করেন মজিদ। ২৯৪ রানে বিসিবি অলআউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নামে ইংল্যান্ড একাদশ। আলো স্বল্পতার কারণে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে চার ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পান ইংলিশরা। ওই চার ওভারে তারা কোনো উইকেট না হারিয়ে করে ২ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বিসিবি একাদশ : (প্রথম ইনিংস) ৭৪.৪ ওভারে ২৯৪/১০ (মজিদ ১০৬, সৌম্য ৪, শান্ত ৭২, মুমিনুল ১, মোসাদ্দেক ৪৭, নুরুল ৩৯, আনসারী ৪/৬৮, ব্রড ২/৪৩, ওকস ১/৩৫, ব্যাটি ২/৫৫, মঈন ১/২৭)।

ইংল্যান্ড একাদশ : (প্রথম ইনিংস) ৪ ওভার ২/০ (হামেদ ০* ডাকেট ২*)।

সর্বশেষ খবর