বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ছন্দ ধরে রাখতে চাই

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছন্দ ধরে রাখতে চাই

তামিম ইকবাল

চট্টগ্রাম টেস্ট আফসোস বাড়িয়ে দিয়েছে। আর একটু ভালো খেলতে পারলে ম্যাচটা জেতা যেত। ২২ রানে হার— যেন তীরে এসে ডুবে গেছে তরী। জিতলে সেটা হতো বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনা। তবে ইংলিশদের বিরুদ্ধে পুরো পাঁচ দিন টাইগাররা যে সমানতালে লড়াই করবে সেটাই বা কে ভেবেছিল?

দীর্ঘ ১৫ মাস পর খেলতে নেমে বাংলাদেশ কত বড় ব্যবধানে হারবে সেটাই ছিল ভাবনায়! কিন্তু মুশফিকরা দাপুটে পারফর্ম করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। আর একটু হলে তো জয়টাও এসে যেত। তবে এমন পরাজয়ে কষ্ট থাকলেও আক্ষেপ নেই।

খেলায় হারজিত থাকবে। তবে লড়াইটাই আসল কথা। বাংলাদেশ তো ইংল্যান্ডকে নাকানিচুবানি খাইয়ে ছেড়েছে। চট্টগ্রাম টেস্টে হারলেও বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে নিজেদের সামর্থ্য। দুই পেসার ছাড়া পুরো দলই দুর্দান্ত খেলেছে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং— তিন বিভাগেই ভালো করেছে বাংলাদেশ। কাল মিরপুরে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। চট্টগ্রামের মতো ঢাকায়ও ইংল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ।

দীর্ঘ বিরতির পর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ অনেক ভালো করলেও সেটাকে জাদুকরী কিছু বলতে চান না তামিম ইকবাল। তিনি মনে করেন- এটা একটা কঠোর পরিশ্রমের ফল। তবে চট্টগ্রামের ছন্দটা ঢাকায় ধরে রাখতে চান তামিম, ‘আমরা মেন্টালি চেষ্টা করছিলাম। আমরা জানতাম যে, এরকম সময় আসবে ১০ মাস ১৫ মাস একটা গ্যাপ থাকবে। আমরা একটা ভালো টেস্ট ম্যাচ খেলেছি দেখে বলাটা খুব সহজ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটা খুব সহজ কাজ নয়, ১৫ মাস পর হঠাৎ করে একটা টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেলা। তারপরও আমার কাছে মনে হয়, খেলোয়াড়রা যেভাবে মানিয়ে নিয়েছে খুবই ভালো করেছে। দল হিসেবে আমরা খুবই ভালো করছি। এখন থেকে পরবর্তী ছয় মাসে আমাদের কিন্তু বেশ কয়েকটি টেস্ট ম্যাচ আছে। এটাই আশা করব চট্টগ্রাম টেস্ট থেকে যে ভালো একটা ছন্দ আমরা পেয়েছি এই ছন্দটা যেন ধরে রাখতে পারি।’

চট্টগ্রামে ভালো খেলায় প্রশংসায় ভাসছেন ক্রিকেটাররা। তবে ভালো খেলার বিষয়টি মাথায় রাখতে চান না তামিম ইকবাল। কেননা তখন মনে একটা আলাদা স্বস্তি কাজ করবে। যা পরবর্তীতে ভালো পারফর্ম করতে অন্তরায় হিসেবে কাজ করতে পারে। তার চেয়ে ম্যাচ হারার পর খারাপ লাগাটুকু ছিল সেটা মনে করে আরও ভালো খেলার ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয়ী হতে চান এই তারকা ওপেনার। তামিম মনে করেন, ‘গণমাধ্যমে বা মানুষজন সবাই বলছে, আমরা খুব ভালো খেলেছি। দলে আলোচনা করলাম, এতটুকুতে যদি খুশি হয়ে যাই, তাহলে আমরা কোনো সময় উন্নতি করতে পারব না। হারায় আমরা সবাই কষ্ট পেয়েছি। আমরা একটা ম্যাচ হেরেছি, খারাপ লাগার অনুভূতিটা আমাদের মধ্যে রয়েছে। কিছু ইতিবাচক জিনিস তো অবশ্যই ছিল যে, আমরা পাঁচ দিনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। যদি আমরা ম্যাচ জিততে পারতাম অন্যরকম অনুভূতি থাকত। যখনই খেলব, আমাদের চেষ্টা থাকবে ম্যাচটা জেতার। আমাদের টেস্ট রেকর্ডও এমন না যে বলব জিতব বা এমন কিছু। একটা জিনিস নিশ্চিত করতে পারি, মাঠে যে ১১ জন খেলে সবার মাঝেই জেতার চিন্তা থাকে। পারি না পারি এটা অন্য বিষয়। পরের টেস্টেও আমাদের এই একই পরিকল্পনা থাকবে, আমাদের প্রথম বল থেকে শেষ বল পর্যন্ত নিজেদের কাজটুকু আমরা ভালোভাবে করি।’

প্রতিটি দেশই ঘরের মাঠে খেলা হলে বাড়তি সুবিধা পায়। যাকে বলা হয় ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’! উইকেট নিজের মতো করে তৈরি করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বরাবরই উইকেট নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তবে চট্টগ্রামের উইকেট ছিল মনের মতো। উইকেট নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই ক্রিকেটারদের। ঢাকায়ও একই রকম উইকেট চান কিনা এ সম্পর্কে সরাসরি কিছু বলেননি তামিম, ‘উইকেট কেমন হবে, এটা আসলে টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। আমার বলে দেওয়া সঠিক হবে না। এটা নিয়ে নিশ্চয়ই পরিকল্পনা হচ্ছে। আমরা সবাই আলোচনা করব। যে আমাদের জন্য ভালো, যেটা আমাদের দলের সঙ্গে বেশি মানানসই হবে আমার মনে হয়, তেমন ধরনেরই উইকেট হবে। একটা জিনিস খুব মজা লাগে, যখন এই অংশে (উপমহাদেশে) খেলা হয় তখনই উইকেট নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। আমরা তো কোনো সময় ইংল্যান্ডে গিয়ে স্পিনিং উইকেট আশা করি না। আমরা জানি ওখানে সিমিং কন্ডিশন, এটা সবাই জানে। আমাদের অংশে এলেই, বাংলাদেশ বা ভারতে খেলা হলেই উইকেট নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। আমার মনে হয়, হোম অ্যাডভান্টেজ একটা থাকা উচিত।’

নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে তামিম বলেন, ‘আমার সবসময় একটাই লক্ষ্য থাকে বাংলাদেশ দলের হয়ে যত বেশি রান করা সম্ভব। আমি যদি সেট হই, আমার যদি সুযোগ থাকে ইনিংসটাকে বড় করার। এটাই। এর চেয়ে বেশি কিছু তো আর বলতে পারব না। আমি চেষ্টা করব সুযোগ পেলে সেটা কাজে লাগানোর।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর