শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফুটবলে দুর্দশা : সাবেকদের ক্ষোভ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফুটবলে দুর্দশা : সাবেকদের ক্ষোভ

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও কর্মকর্তারা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভুটানের কাছে হারার পর ক্রীড়াঙ্গনে যতোই ক্ষোভে আগুন জ্বলুক না কেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ফুটবল নিয়ে এখনো আশাবাদী। কিছুদিন আগে তিনি বলেছেন, তিন বছরের মধ্যে ফুটবলের এই সংকট কেটে যাবে। কিন্তু তার এ কথা ফুটবল অঙ্গনে কেউ বিশ্বাস করছেন না। ক্ষোভের মাত্রা বেড়েই চলেছে। ‘রাহুর কবলে ফুটবল’ এই ব্যানার টাঙিয়ে গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার গোলাম সারোয়ার টিপু, শামসুল আলম মঞ্জু, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, কায়সার হামিদ, আমিনুল হক, হাসান আল মামুন ছাড়াও বাফুফের সাবেক সহ-সভাপতি মনজুর হাসান মালু উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

সবার মুখে একই কথা রাহুর কবলে ফুটবল। এ থেকে আমরা মুক্তি চাই। গোলাম সারোয়ার টিপু বলেন, ‘সালাউদ্দিন ভিশন ২০২২ ঘোষণা করেছিলেন। অর্থাৎ তিনি কাতারে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। অনেকে তখন এনিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু সালাউদ্দিন বলেছিলেন কোনো ভিশন ছাড়া ফুটবলে উন্নয়ন সম্ভব নয়। ভুটানের কাছে হেরে তিন বছর আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাইরে থাকবে বাংলাদেশ। বাফুফের সভাপতির কাছে প্রশ্ন রাখছি এখনো কি তিনি বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখছেন। আজগুবি সব কথাই বলেছেন। তার নেতৃত্বে বাফুফের কমিটি ফুটবল উন্নয়নে কোনো কাজই করেনি। আর কত? অনেক তো দেখলাম। ফুটবলের স্বার্থে সালাউদ্দিনের উচিত হবে নতুনদের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া।’ শামসুল আলম মঞ্জু বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা সালাউদ্দিনের বিপক্ষে ছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম যোগ্য নেতৃত্বে ফুটবলের চেহারা পাল্টাতে। কিন্তু কেউ কেউ বলেছিলেন বাংলাদেশের ফুটবলে সালাউদ্দিনের বিকল্প নেই। এখন আপনারা কি বলবেন, ফুটবল বাঁচাতে নেতৃত্ব পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কিনা। ফুটবল বাঙালির মনের খেলা ও প্রাণের খেলা একে বাঁচাতে যে ধরনের সহযোগিতা করা দরকার আমরা করব। ভোটে জেতা মানে এই নয় যে দেশের মানসম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা।’

হাসানুজ্জামান খান বাবলু বলেন, ‘বাফুফের নির্বাহী কমিটি বলতে কিছুই নেই। এখানে ওয়ানম্যান শো। সালাউদ্দিন সবকিছু নিয়ন্ত্রণ রাখতে চান। কাউকে তিনি কাজ করতে দেন না। মান নিয়ে কথা বলবেন এটাও তার পছন্দ নয়। সুতরাং ওয়ানম্যান হলে ফুটবলের যে পরিণতি সেটাই হয়েছে। লজ্জায় আমরা বাইরে মুখ দেখাতে পারছি না। কেউ কেউ বলছেন ফুটবল এখন কফিনে। আমিতো বলবো সালাউদ্দিনের কমিটি ফুটবলের দাফনও সম্পন্ন করেছে। এখন নতুনভাবে শুরু করতে হবে। সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’ কায়সার হামিদ বলেন, ‘সেদিন এক অনুষ্ঠানে গিয়ে অচেনা ব্যক্তি বলে উঠলেন ভুটানের কাছে হারার পর আপনারা বসে আছেন কেন? সবাইকে বের করে বাফুফে ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। বুঝতেই পারছেন ফুটবল নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কতটা।’

আমিনুল হক বলেন, ‘আমরা এখানে কোনো ব্যক্তির সমালোচনা করতে আসিনি। ফুটবলার ছিলাম, তাই এই খেলার এমন দুর্দশা মেনে নিতে পারছি না। ভুটানের কাছে হারছি। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে আমাদের অবস্থান ১৮৮ নম্বরে। এরপর কি কেউ বিশ্বাস করবে বর্তমান বাফুফে কমিটি ফুটবলের উন্নয়ন ঘটাবে?’ হাসান আল মামুন বলেন, ‘ফুটবল উন্নয়নে বাফুফের কোনো পরিকল্পনা নেই। এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না।’ মনজুর হোসেন মালু বলেন, ‘ফুটবলের এই করুণ পরিণতির জন্য এককভাবে কাউকে দায়ী করা যায় না। আমরাও কমবেশি দায়ী। এখন এই দুর্দশা কাটাতে নিতে হবে নতুন উদ্যোগ। তা না হলে বিপর্যয় থেকে বের হওয়া যাবে না।’

সর্বশেষ খবর