শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শিরোপার স্বপ্ন দেখছে ঢাকা আবাহনী

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শিরোপার স্বপ্ন দেখছে ঢাকা আবাহনী

২০০২ সালের পর ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান লিগ শিরোপা জিততে পারেনি। ২০০৭ সালে পেশাদার লিগের যাত্রা হলেও ট্রফি জেতাটা যেন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। অথচ তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী ২০০৯ সালে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব নতুনভাবে আত্মপ্রকাশের পর তিনবার লিগ জিতেছে। শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র জিতেছে একবার। শিরোপা যাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল এখন তা রীতিমতো স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে মোহামেডানের।

প্রথম তিন বছরে টানা ট্রফি জিতে পেশাদার লিগে হ্যাটট্রিকের কৃতিত্বও পেয়েছে জনপ্রিয় আবাহনী। চারবারের চ্যাম্পিয়ন তারা। এবার লিগে তাদের যে অবস্থান শিরোপা উদ্ধারের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম পর্বে ১১ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।  চট্টগ্রাম আবাহনী ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে। ২২ পয়েন্ট নিয়ে রহমতগঞ্জ তৃতীয় আর ১৯ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে আছে শেখ জামাল। তবে ফুটবল বিশ্লেষকদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত শিরোপা লড়াই সীমাবদ্ধ থাকবে দুই আবাহনীর মধ্যে। চট্টগ্রাম আবাহনী শেষ পর্যন্ত শীর্ষে থাকলে লিগ ইতিহাসে নতুন চ্যাম্পিয়নের দেখা মিলবে।

তবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ঢাকা আবাহনীর খেলার ধার বা গতিটা বেড়েই চলেছে। লিগে এখন পর্যন্ত তারাই অপরাজিত রয়েছে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলোয়াড়রা প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে লড়াই করছে। প্রথমদিকে ডিফেন্ডারদের আস্থার অভাব দেখা গেলেও এখন তা কাটিয়ে উঠছে। প্রথম পর্বে শেষ ম্যাচে রহমতগঞ্জকে হারানোয় সামনে তা ঢাকা আবাহনীর টনিক হিসেবে কাজ করবে। দুর্বল দল গড়েও পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ ক্লাব চমক সৃষ্টি করছে। শেখ রাসেল ও চট্টগ্রাম আবাহনীর মতো শক্তিশালী দলকে পরাজিত করেছে তারা। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত আবাহনীর কাছেই তাদের হার মানতে হয়।

প্রথম পর্বে শেষ কয়েকটি ম্যাচে ঢাকা আবাহনীকে বেশ গোছানো মনে হয়েছে। চমৎকার টিম স্পিরিট লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে দুই বিদেশি ফুটবলার সানডে ও টাকের পারফরম্যান্স চোখে পড়ার মতো। দুজনে যেমন গোল পাচ্ছেন তেমনি পুরো দলকে খেলাচ্ছেন। মাত্র ১ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় পর্বে যদি এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে তাহলে ট্রফি পুনরায় আবাহনীর ঘরে আসতে পারে।

৯ আসরে ঢাকা আবাহনী যদি পাঁচবার লিগ জিতে নেয় ঘরোয়া ফুটবলে তারাই যে শ্রেষ্ঠ এ নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকবে? দলের ম্যানেজার জাতীয় দলের সাবেক অভিজ্ঞ ফুটবলার সত্যজিত দাস রুপু বলেন, ‘এখনো অনেক ম্যাচ বাকি। সুতরাং শেষ পর্যন্ত কে যে বিজয়ের পতাকা ওড়াবে বলা মুশকিল’। নিজের দল প্রসঙ্গে বলেন, নিঃসন্দেহে ছেলেরা ভালো খেলছে। দ্বিতীয় পর্বে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে কোনো বাধাই আমাদের আটকাতে পারবে না। আবাহনী শিরোপা জেতার জন্যই দল গড়ে। আমরা তাই চ্যাম্পিয়ন ছাড়া কিছুই বুঝি না।

কথা হচ্ছে, ঢাকা মোহামেডান যেখানে ১৪ বছর ধরে লিগ জিততে পারছে না, সেখানে আবাহনী এগিয়ে যাচ্ছে কীভাবে? এ নিয়ে মোহামেডানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়জন সাবেক ফুটবলার বলেছেন, এখানে বড় জিনিস হচ্ছে কমিটমেন্ট। তাদের ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত শক্ত। যে কারণে টিম স্পিরিটটা রয়েছে। মোহামেডান যেভাবে চলছে তাতে ফুটবল কেন, সব খেলাতেই নাজুক অবস্থা। কর্মকর্তারা নিবেদিত না হলে দলের কোনো উপকারে আসবে না। তাই তো দুই দলের মধ্যে পার্থক্য এখন আকাশ-পাতালই বলা যায়।

সর্বশেষ খবর