শিরোনাম
রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

খুলনায় নৌকাবাইচে মানুষের ঢল

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় নৌকাবাইচে মানুষের ঢল

খুলনার রূপসা নদীর প্রায় চার কিলোমিটার লম্বা দুই তীরে গতকাল বিকালে মানুষের ঢল নেমেছিল ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ দেখতে। গ্রামীণফোনের আর্থিক সহায়তায় ‘খুলনা নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ এই নৌকাবাইচের আয়োজন করে।  নির্মল বিনোদন থেকে বঞ্চিত খুলনাবাসী গত কয়েক বছরের মতো এবারের নৌকাবাইচ উপভোগ করেছেন নেচে-গেয়ে আনন্দ-উল্লাস করে। নৌকাবাইচ চলাকালে নদীর দুই তীর, রূপসা সেতুর ওপর ও নদীর বুকে শত শত ট্রলার লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো রূপসা নদীতে নৌকাবাইচের আয়োজন করা হয়েছিল। গত বছরও লাখো মানুষ নৌকাবাইচ উপভোগ করতে উপস্থিত হয়েছিল। এবার গত বছরের চেয়েও বেশি লোকসমাগম হয়েছে বলে আয়োজক কমিটি দাবি করেছে। বেলা আড়াইটায় মহানগরীর ১ নম্বর কাস্টম ঘাট এলাকা থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে খানজাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু) এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। সর্বমোট ২৮টি বাইচ নৌকা এতে অংশ নেয়। এর আগেই বেলা ১টা থেকেই রূপসা সেতুসহ দুই নদীর তীর মানুষে ভরে যায়। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কয়েকশ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, বড় বড় অসংখ্য কার্গো এবং নদীর পারের বড় বড় সরকারি-বেসরকারি ভবনে চড়ে লক্ষাধিক মানুষ নৌকাবাইচ উপভোগ করেন।

নৌকাবাইচ দেখতে আসা বাগমারা গ্রামের আমীর হোসেন, এস এম মাহবুবুর রহমান ও ইউনুস শেখ বলেন, একসঙ্গে এত লোককে বিনোদন দেওয়ার একমাত্র ব্যবস্থা হচ্ছে নৌকাবাইচ। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে উপভোগ করতে এসেছি। তাদের মতো হাজার হাজার মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে পরিবারসমেত এই নৌকাবাইচ দেখতে আসেন। সারি সারি  নৌকা একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলছে। আর নদীর দুই পাড়ে তখন আনন্দ আর উত্তেজনা। পুরো এলাকা যেন  মেতেছে প্রাণের উৎসবে। প্রতিযোগিতায় বড় গ্রুপে কয়রা উপজেলার সুন্দরবন টাইগারস্ প্রথম হওয়ায় নগদ ১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় তেরখাদার ভাই ভাই জলপরীকে ৬০ হাজার ও তৃতীয় তেরখাদার আল্লাহ ভরসাকে ৪০ হাজার টাকা উপহার দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছোট গ্রুপে বিজয়ী সোনার তরি ৫০ হাজার, দ্বিতীয় জয় মা কালী ৩০ হাজার ও তৃতীয় জয় মা ঐশ্বর্যকে ২০ হাজার টাকা উপহার দেওয়া হয়।

উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কে এম পি) কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি, জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, গ্রামীণফোনের খুলনা সার্কেলের হেড মোল্লা নাফিজ ইমতিয়াজ, নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রধান উপদেষ্টা শেখ আশরাফ-উজ-জামান উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারী নৌকায় ঢোল-ডগর, কাঁসর ও ঝাঁঝর বাদ্যের তালে-তালে মুখরিত হয়ে ওঠে রূপসা নদীর দুই কূল। প্রতিযোগিতা শেষে সন্ধ্যায় রূপসা ঘাট এলাকায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সর্বশেষ খবর