বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সমালোচকদের মুখে এখন টাইগারদের প্রশংসা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সমালোচকদের মুখে এখন টাইগারদের প্রশংসা

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এনিয়ে কারও সংশয় নেই। বিশ্বকাপ অভিষেকেই পাকিস্তানকে হারানোর কৃতিত্ব রয়েছে। ক্রিকেটে এমন কোনো দেশ নেই যে বাংলাদেশের কাছে হারেনি। জিম্বাবুয়েকে সিরিজ হারানোটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, পাকিস্তান ছাড়াও নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে। শুধু কি জয়, জিম্বাবুয়ে ছাড়াও নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ করেছে। দুই বার এশিয়া কাপ ফাইনালে উঠলেও দুর্ভাগ্যক্রমে শিরোপা জিততে পারেনি। ২০১২ সালে ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হারার পর সাকিবদের কান্না এখনো ভাসে। গতবছর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালেও উঠেছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনালে খেলতে পারেনি। তবে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে অ্যাম্পায়ারিং পক্ষপাতিত্ব না হলে ফলাফল অন্যরকম হতে পারত। টি-২০তেও পারদর্শিতার ছাপ রাখছে টাইগাররা। বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে টাইগারদের প্রশংসা বিশ্ব জুড়েই।

সেই তুলনায় টেস্টে বাংলাদেশ পারদর্শিতার ছাপ রাখতে পারছিল না। জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জেতা ছাড়া অন্যদের বিপক্ষে জয়ের দেখা মিলছিল না। দুই দেশকে হারানোর পরও উৎসবটা সেভাবে হয়নি। কারণ বোর্ডের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জিম্বাবুয়ে বা ওয়েস্ট ইন্ডিজ তেমনভাবে শক্তিশালী দল মাঠে নামায়নি। ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাস্টাস পেলেও মাত্র চার বছরের মাথায় সিরিজ জেতার কৃতিত্ব রয়েছে। যা অনেক দেশেরই নেই। ২০০০ সালে আইসিসির সভায় বাংলাদেশকে টেস্ট খেলার অনুমতি দিলে তখন অনেকেই সমালোচনায় ফেটে পড়েছিলেন। কোনো কোনো সদস্য ক্ষুব্ধ হয়ে সভা থেকে বের হয়ে যান। নবজ্যোত সিঁধু বলেছিলেন টেস্টে দলের সংখ্যা বাড়ুক আমিও চাই। কিন্তু বাংলাদেশ কি সেই যোগ্যতা রাখে কি-না আইসিসির তা ভেবে দেখার উচিত ছিল না? সত্যি বলতে কি টেস্ট মর্যাদার বারোটাই বাজিয়ে দিল। বোথাম বলেছিলেন আইসিসি এমন পাগলামি না করলেই পারত।

যারা সেই সময়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছিল। তারাই এখন সুর পাল্টাতে শুরু করেছেন। ঢাকা টেস্টে ইংল্যান্ডকে ১০৮ রানে হারানোর পর সমালোচকরা এখন টাইগারদের প্রশংসায় ব্যস্ত। সিঁধু বলেছেন ‘নিঃসন্দেহে অসাধারণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ১৫ মাস একটা দল টেস্টের বাইরে। অথচ ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে দুই টেস্টে মুশফিকরা কি খেলাটাই না খেলল। প্রথম টেস্টে কিছু ভুলের জন্য জিততে পারেনি। ঢাকা টেস্টে তা কাটিয়ে অসাধারণ জয় পেয়েছে। এজন্য বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধন্যবাদ জানায়। বিশেষ করে নতুন খেলতে এসে স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ দুর্দান্ত বল করেছে। সাকিবও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। একটা ছেলে টেস্টে নতুন খেলতে এসে দুই টেস্টে ১৯ উইকেট পাবে তা কি ভাবা যায়। ইংল্যান্ডের এই হার অন্যান্য দলের জন্য সতর্ক বার্তাই বলা যায়।’

ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ইয়ান বোথাম যিনি কথায় কথায় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডে এসে বাংলাদেশ জিতে যাক। তখন টেস্টে তাদের আসল শক্তির প্রমাণ মিলবে। এমন মন্তব্যের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের টেস্টে ইংল্যান্ড এমনভাবে হারবে তা ভাবতেই পারিনি।’ ভারতের সুনীল গাভাস্কার সমালোচনার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রশংসাও করেন। ঢাকা টেস্টে ইংল্যান্ড হারার পর তিনি বলেন, ‘টেস্টেও বাংলাদেশ এগিয়েছে তা প্রমাণ দিল। পেসার মুস্তাফিজের পর এবার স্পিনে জাদু দেখাল মেহেদী। বাংলাদেশে একেক করে নতুন প্রতিভার সন্ধান মিলছে। যা ক্রিকেটে অন্যান্য দেশের জন্য হুমকিও বটে।’

সর্বশেষ খবর