শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্বস্তির জয় শেখ রাসেলের

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

স্বস্তির জয় শেখ রাসেলের

ফেনীর দুর্গে শেখ রাসেলের আক্রমণ। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে আলোচিত এ ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও শেখ রাসেল ৩-১ গোলে জিতে মাঠ ছেড়েছে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফুটবলে জয়-পরাজয় থাকবেই। কিন্তু রেফারি যদি পক্ষ বেছে নেন তাহলে কি স্বাভাবিক খেলাটা খেলা যায়! দেশের জনপ্রিয় দল শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র পেশাদার লিগে তারকানির্ভর দল গড়লেও এখনো বেশ পিছিয়ে। এর জন্য রেফারির ভুল বাঁশিকেও দায়ী করা যায়। চট্টগ্রামে লিগের প্রথম পর্বে তিন ম্যাচে শেখ রাসেলকে হারতে হয়েছিল পক্ষপাতিত্ব বাঁশি বাজানোর জন্যই। গতকালও চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে দেখা গেল একই পরিণতি। প্রথম পর্বে ফেনী সকারের কাছে হেরে যায় শেখ রাসেল। এবার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়েই মাঠে নেমেছিল মানিকের শিষ্যরা। কিন্তু অদ্ভুত এক দৃশ্য। শুরু থেকেই রেফারির ভুল বাঁশি শেখ রাসেলের আধিপত্যে ব্যাঘাত ঘটায়। জালাল উদ্দিন এমনভাবে খেলা পরিচালনা করছিলেন, দেখে মনে হচ্ছিল তিনি শেখ রাসেলের পয়েন্ট নষ্ট করতেই মাঠে নেমেছেন। রুম্মন-জামাল ভূঞারা গতিময় খেলা খেললেও এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ান রেফারি ও দুই সহকারী রেফারি। আক্রমণে গেলেই অযথা অফসাইডের সংকেত দেওয়া হচ্ছিল। আর ফেনীর অনুকূলে যেভাবে ফাউল ধরা হচ্ছিল তা দেখে দর্শকরাও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ম্যাচের ১৪ মিনিটেই জালাল উদ্দিনের একটি সিদ্ধান্তে সবাই হতবাক হয়ে যায়। ফেনী সকারের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় সুশান্ত হঠাৎ করে শেখ রাসেলের রনির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। এতে সুশান্তই লাল কার্ড পাওয়ার কথা। কিন্তু রেফারি সুশান্তকে দেখানোর পাশাপাশি রনিকেও লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন। এরপরও থেমে থাকেননি। রেফারি ও দুই সহকারী রেফারির ভূমিকা দেখে মনে হচ্ছিল শেখ রাসেল ১৪ জনের বিপক্ষে লড়ছে। এরপরও দেশের জনপ্রিয় দলটিকে আটকানো সম্ভব হয়নি। পিছিয়ে থেকেও ৩-১ গোলে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে শেখ রাসেল।

সত্যি বলতে কি, বাজে রেফারিং সত্ত্বেও শেখ রাসেলই মাঠে প্রাধান্য বিস্তার করে। একের পর এক সুযোগ পেলেও গোল পাচ্ছিল না শেখ রাসেল। ৩৭ মিনিটে ইকাঙ্গার জোরালো হেড ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। দুই মিনিট পরই আবারও আক্রমণ। অরূপকে ট্যাকেল করলেও ফাউলের বাঁশি বাজাননি রেফারি। পরের মিনিটেই রাজুর নেওয়া অসাধারণ ফ্রি কিক প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক ওসমান রুখে দিলে গোল বঞ্চিত হয় শেখ রাসেল। প্রথমার্ধে কোনো দলই গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধেও চাপ অব্যাহত থাকে শেখ রাসেলের। আক্রমণ সামলাতে ফেনী ফাউলের আশ্রয় নিলেও রেফারি নীরব ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে রুম্মনকে ডি-বক্সের ভিতর ফাউল করলেও জালাল উদ্দিন নিশ্চিত পেনাল্টি এড়িয়ে যান। ৬৩ মিনিটে ফেনীকে এগিয়ে দেন হেলাল। তবু ভেঙে পড়েনি শেখ রাসেল। ৬৯ মিনিটেই সমতা ফিরিয়ে আনে। রাজুর ফ্রি কিকে অসাধারণ ব্যাক হেডে রুম্মন জাল স্পর্শ করেন। ৭৩ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট হওয়ায় এগিয়ে যেতে পারেনি শেখ রাসেল। ৮৪ মিনিটে ঠিকই এগিয়ে যায়। জামাল ভূঞার কর্নার কিক থেকে ইকাঙ্গা হেডে জালে বল পাঠালে ২-১ গোল এগিয়ে যায় শেখ রাসেল। পরের মিনিটে রুম্মন গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। এ জয়ে ১৫ ম্যাচে শেখ রাসেল ১৫ পয়েন্ট নিয়ে আটে ওঠে গেল। ম্যাচ শেষে শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘রনিকে অযথা লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। ন্যায্য পেনাল্টি বঞ্চিত করা হয়েছে আমাদের। এরপরও ম্যাচ জিতেছি। খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ জানাই।’ এদিকে দিনের প্রথম ম্যাচে শেখ জামাল ১-০ গোলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে পরাজীত করে। ৬৩ মিনিটে বিজয়ী দলের ল্যান্ডিং গোল করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর