সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দুই ভায়রার লড়াইয়ে মাহমুদুল্লাহর জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে

দুই ভায়রার লড়াইয়ে মাহমুদুল্লাহর জয়

বরিশাল বুলসের আরেকটি উইকেটের পতন। উৎসাহে মেতেছে খুলনা টাইটানসের ক্রিকেটাররা। ২২ রানে জিতে বিপিএলে এখন তারাই শীর্ষে অবস্থান করছে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

শফিউল ইসলাম ভিন্ন ধরনের নৃত্য করলেন। এ যেন জয়োৎসবের ট্রেইলার। মুশফিকের বাতাসে ভাসিয়ে দেওয়া বল ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে লুফে নিতেই খুলনার মধ্যে দারুণ প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিল। খুলনা টাইটানসের অধিনায়ক ও মুশফিকের ভায়রা ভাই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও এই উৎসবে শামিল হলেন। খুলনার ছুড়ে দেওয়া ১৫২ রানের লক্ষ্যে শম্বুক গতিতে ছুটে চলা বরিশাল বুলসের যে গতি এনেছিলেন তা মুশফিকের আউটের মধ্য দিয়েই থমকে যায়। ১০ ওভারে ৫১/৩ রান করার পর বরিশালের পরাজয় যারা দিব্যদৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছিলেন তারা ক্ষণিকের ভ্রমে পড়েছিলেন মুশফিক ও শাহরিয়ার নাফিসের ব্যাটিংয়ে। এ দুজনের বিদায়ের পরই ম্যাচটা নিজেদের করে নেয় ছন্দে থাকা খুলনা টাইটানস। জয় তুলে নেয় ২২ রানের। বরিশাল বুলস থেমে যায় ১২৯ রানে। রংপুর রাইডার্সের কাছে হারের পর এটা খুলনার টানা চতুর্থ জয়। এ জয়ের মধ্য দিয়েই পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করলেন মাহমুদুল্লাহরা। ৬ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট।

খুলনা টাইটানস আর বরিশাল বুলসের লড়াইয়ে দুই ভায়রা ভাইয়ের লড়াই ছাড়া ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক দুই গুরুর লড়াইও। স্টুয়ার্ট ল আর ডেভ হোয়াটমোর। এ লড়াইয়ে জিতলেন স্টুয়ার্ট ল’ই! খুলনা টাইটানসকে শুরুতে কেউ গুরুত্ব না দিলেও দলটা নিজেদের রেসের ‘কালো ঘোড়া’ বলেই নিজেদের প্রমাণ করেছে। ছন্দময় ক্রিকেট খেলে এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে। গতকাল ওয়েসেলস (৪০), মাহমুদুল্লাহ (৪৪) আর আরিফুল হকের (২৬) ব্যাটিংয়ে ১৫১ রানের মোটামুটি নিরাপদ সংগ্রহ করে খুলনা। তবে রাতে চট্টগ্রামের ব্যাটিং উইকেটেও এই রান তোলা কঠিন। এটাই প্রমাণ করলেন মুশফিকরা। বরিশাল বুলসের জন্য ‘আতঙ্ক’ হয়ে দেখা দিলেন শফিউল ইসলাম। তিনি ৩.৩ ওভারে মাত্র ১৭ রানে তুলে নেন ৪টি উইকেট। ১৩ উইকেট শিকার করে তিনিই এখন বিপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। ১২ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন ঢাকার মোহাম্মদ শহীদ। এছাড়াও খুলনার পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন জুনায়েদ খান ও মোশাররফ হোসেন।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সবুজ চত্বরে অতিরিক্ত শিশির বার বারই বাদ সাধল। আউটফিল্ড খেলার উপযোগী করার জন্য বিরতি নিতে হলো বার বার। গ্রাউন্ডসম্যানরা শিশির মুছে দিলেন। শিশির শোষণকারী মেশিনও মাঠে নামল বারকয়েক। নির্ধারিত সময়েরও অনেকটা পর শেষ হলো ম্যাচ। ম্যাচ দেরিতে শেষ হলেও জয়োৎসবে মেতে উঠতে মোটেও সময় নিলেন না মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা।

ম্যাচ শেষে দুই অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক দলের ব্যাটিং নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ১৫১ রান করলেও আমাদের উচিত ছিল টার্গেটটা আরও বড় দেওয়া। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় তা আর হয়নি। অন্যদিকে মুশফিক বলেন, ১৫১ রান টপকানোটা আমাদের জন্য কঠিন কিছু ছিল না। কিন্তু আমরা পারিনি। এটা ব্যাটসম্যানদের জন্য ব্যর্থতাই বলব। সামনের ম্যাচে ভুলত্রুটি শুধরে ব্যাটিং করতে হবে। তা না হলে টুর্নামেন্টে টিকে থাকাটা মুশকিল হবে।

 সংক্ষিপ্ত স্কোর

খুলনা টাইটানস : ১৫১/৭, ২০ ওভার (মাহমুদুল্লাহ ৪৪, ওয়েসেলস ৪০, আরিফুল হক ২৬*, হাসানুজ্জামান ১৯, তাজুল ইসলাম ৩/১৮, পেরেরা ১/২৫, এমিয়েট ১/৩০, রুম্মন ১/৩২)

বরিশাল বুলস : ১২৯/১০, ১৯.৩ ওভার (মুশফিকুর রহিম ৩৫, শাহরিয়ার নাফিস ২৮, মেন্ডিস ২১, এমিয়েট ১৪, শামসুর রহমান ১২, শফিউল ইসলাম ৪/১৭, মোশাররফ হোসেন ২/২৪, জুনায়েদ খান ২/২৯, মাহমুদুল্লাহ ১/২৮

ফলাফল : খুলনা টাইটানস ২২ রানে জয়ী।

সর্বশেষ খবর