বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রেফারি নিয়ে ফুটবলে একি কাণ্ড

ক্রীড়া প্রতিবেদক

রেফারি নিয়ে ফুটবলে একি কাণ্ড

টিম বিজেএমসির ম্যানেজার আরিফুল হক চতুর্থ রেফারিকে লাঞ্ছিত করেন —ফাইল ফটো

রেফারি নিয়ে বিতর্ক সব সময় হচ্ছে। ৭০ ও ৮০ দশকে ভুল বাঁশি বাজার কারণে মাঠে বড় ধরনের হট্টগোল ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জের পাশাপাশি ফাঁকা গুলিও ছুড়তে হয়েছিল। তথা ফুটবলে মান ও জনপ্রিয়তা না থাকায় আগের সেই উত্তপ্ত পরিবেশ নেই। কিন্তু পেশাদার লিগে রেফারিং নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। এবার ফেডারেশন কাপে হারের পর বাফুফের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, একটি বিশেষ দলের পক্ষ নিয়েছেন রেফারিরা। তাই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হলো। বাফুফের নির্বাচিত কর্মকর্তা যখন এই কথা বলেন, তখন এ নিয়ে বিতর্ক বা প্রশ্ন উঠাটা স্বাভাবিক।

এবার পেশাদার লিগে চট্টগ্রামে প্রথম পর্বে শেখ রাসেল দুই ম্যাচে হারে রেফারির শিকার হয়ে। এবারও ফেনী সকারের বিপক্ষে রেফারির বেশ কিছু ভুলের শিকার হয় শেখ রাসেল। বিশেষ করে সাখাওয়াত রনিকে কী কারণে লালকার্ড দেখানো হলো এনিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে। যদিও শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে ওই ম্যাচে জয় পেয়েছিল শেখ রাসেল। টিম বিজেএমসির বিপক্ষেও রেফারিং নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন শেখ রাসেলের কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক।

শুধু শেখ রাসেল কেন অন্য দল সমানে অভিযোগ আনছে। বিতর্কিত বাঁশি বাজার কারণে শেখ জামালের বিরুদ্ধে ফেনীর ফুটবলাররা প্রতিবাদ জানিয়ে মাঠে দাঁড়িয়ে ছিল। যা ফুটবলে কখনো ঘটেনি। সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটান টিম বিজেএমসির ম্যানেজার আরিফুল হক। মঙ্গলবার চট্টগ্রামে রেফারির একটি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আরিফুল চতুর্থ রেফারিকে লাঞ্ছিত করেন। যা দেখে দর্শকরা হতবাক হয়ে যান।  জানা গেছে, আরিফ এক উপমন্ত্রীর ভাগ্নে। মাঠে তিনি রেফারিকে শাসিয়ে বলেন, ‘জানিস আমি কার ভাগ্নে?’ রেফারির বিপক্ষে অভিযোগ থাকতেই পারে কিন্তু শারীরিক লাঞ্ছিত ঘটনা কোনোভাবেই মানা যায় না।

বিতর্কিত রেফারিং ও মাঠে অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে আলাপ হচ্ছিল জাতীয় দলের সাবেক নন্দিত ফুটবলার ইকবাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও রেফারিস কমিটির চেয়ারম্যান। রেফারিদের ভালোমন্দ দেখার দায়িত্ব তারই। ইকবাল বললেন, রেফারির বিষয়টি এতদিন তেমনভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এটাও ঠিক দেশে আগের মানের রেফারি নেই। দায়িত্ব নেওয়ার পর চেষ্টা করছি রেফারিংয়ে মান বাড়াতে। এ জন্য বেশ কিছু প্রোগ্রাম হাতেও নেওয়া হয়েছে। পেশাদার লিগে বিতর্কিত রেফারিং নিয়ে বললেন, শুধু লিগ নয় ফেডারেশন কাপেও অভিযোগ উঠেছিল। পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট দেখার পর ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আমরা তদন্ত করে দেখছি রেফারি কোনো পক্ষ নিচ্ছেন কিনা? যদি প্রমাণ মেলে কেউ রেহাই পাবেন না। ভুল হতেই পারে, আন্তর্জাতিক ফুটবলেও হচ্ছে। কিন্তু ইচ্ছা করে কাউকে হারাবে তা যদি ধরা পড়ে সেই রেফারির বিরুদ্ধে বড় ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে।

কিন্তু ভুল হচ্ছে আমিও শিকার করছি। আসলে উপযুক্ত ট্রেনিং না থাকায় এমনটি হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো দলের লিখিত অভিযোগ পায়নি। তারপরও আমরা একজন রেফারিকে শোকজও করেছি। রেফারি লাঞ্ছিত ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, বিজেএমসির ম্যানেজার যা ঘটিয়েছেন তা আমরা শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠিয়েছি। আবারও বলছি রেফারি বা কর্মকর্তারা যিনিই অন্যায় করুক না কেন শাস্তি তাকে পেতেই হবে। এখানে কোনো ছাড়ের প্রশ্নই উঠে না।

সর্বশেষ খবর