শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফের প্রশ্নবিদ্ধ সানির বোলিং

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফের প্রশ্নবিদ্ধ সানির বোলিং

বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়ে কিছুদিন আগেই নিজেকে বিশুদ্ধ প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশের স্পিনার আরাফাত সানি। কিন্তু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আবার তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মাঠের আম্পায়াররা। এ যাত্রার একটুর জন্য রক্ষা পেয়েছেন সানি। তাকে বোলিং অ্যাকশন শোধরানোর নতুন করে পরীক্ষা দিতে হবে না। তবে বিপিএলে না ঘটে ঘটনাটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে হলে বড় বিপদে পড়ে যেতেন তিনি। কেননা আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী কোনো বোলারের বল এক বছরের মধ্যে দুবার প্রশ্নবিদ্ধ হলে তিনি পরের এক বছরের মধ্যে আর কোনো পরীক্ষা দেওয়া সুযোগই পাবেন না।

রাজশাহী কিংসের বিরুদ্ধে গত ২৮ নভেম্বরের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলার সময় আরাফাত সানির একটি বলের অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আম্পায়াররা। ওই ম্যাচে রাজশাহীর ইনিংসের ১৯তম ওভারের প্রথম বলে মেহেদী হাসান মিরাজের যে ডেলিভারি দিয়েছিলেন সেটা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মাঠের আম্পায়াররা। তবে প্রশ্ন হওয়ার পরও বিপিএলে খেলতে কোনো সমস্যা হবে না সানির। রাইডার্সের হয়ে তিনি খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন।

বিসিবির বোলিং অ্যাকশন রিভিউ কমিটি ও বিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিপিএলের পর আমরা সানির বোলিং অ্যাকশন বিশ্লেষণ করে দেখব। যদি সন্দেহজনক কোনো কিছু পাওয়া যায় তার পর আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তখন তাকে শোধরানোর জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করব। তবে আমাদের কাছে যদি অ্যাকশনটা ঠিক মনে হয়, তাহলে তো আর পুনর্বাসনের প্রয়োজন হবে না।’

মাঠের আম্পায়াররা বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও এখনই সানিকে অভিযুক্তের কাঠগড়ার দাঁড় করানো হচ্ছে না। আগে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হতে হবে। গত টি-২০ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে পেসার তাসকিন আহমেদের সঙ্গে সানির বোলিং প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। বিশ্বকাপ চলাকালীন দুজনেই চেন্নাই পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ-ই কৃতকার্য হতে পারেননি। পরে তাসকিনের সঙ্গে সানিও সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।

দীর্ঘ পুনর্বাসনের পর দুজনেই অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে মুক্ত হয়েছেন। কিন্তু আবারও সেই সানির বোলিং নিয়ে প্রশ্ন উঠল। তবে এবার পুরো বিষয়টি দেখভাল করবে বিসিবি।

বিপিএলে এর আগে ১২ নভেম্বর চিটাগং কিংসের বিরুদ্ধে খুলনা টাইটানসের ক্যারিবীয় বোলার কেভন কুপারের বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অবশ্য এ বিষয়ে ক্যাবিরীয় ক্রিকেটকে ইতিমধ্যে অবহিত করেছে বিসিবি। কুপারের বিষয়টি নিয়ে মাথাব্যথা নেই। বিসিবির দুশ্চিন্তা সানিকে নিয়েই।

বিপিএলের আগের তিন আসরেই কোনো না কোনো কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। সে দিক দিয়ে এবারের আসর শুরু হয়েছিল দারুণভাবে। ঢাকার প্রথম পর্বটা খুব ভালোভাবেই শেষ হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম পর্বের পর থেকেই একের পর এক নানা বিতর্কিত ঘটনা ঘটতে থাকে। এবারের আসরকে ঘিরেও ফিক্সিংয়ের গুঞ্জন উঠেছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো কিছুই প্রমাণ হয়নি। তবে এমন নয়, ফিক্সিংয়ের ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে প্রমাণিত হয়। ধীরে ধীরে বেশি আসে ‘কালো’ অধ্যায়গুলো।

প্রথম দিকে বিপিএল নিয়ে দর্শকের হতাশা ছিল, সেটা হচ্ছে ঠিকঠাক রান উঠছে না! ছক্কা-চারের বন্যা দেখতে এসে মাঠে অবিরাম উইকেট পতন দেখে ঘরে ফিরতে হয়েছে দর্শককে। কিন্তু এখন বিপিএল জমে উঠেছে। অনেক রান উঠছে। ছক্কা-চারের ফুলঝুরি ছুটছে। একের পর এক নেতিবাচক ঘটনাও ঘটছে। রাজশাহীর মারকুটে ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানকে ব্যাট দিয়ে আঘাত করায় এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন রংপুর রাইডার্সের আফগান তারকা মোহাম্মদ শাহজাদ। জরিমানা করা হয়েছে সাব্বিরকেও।

এছাড়া চিটাগংয়ে হোটেলে সাব্বির ও আল আমিনের ঘটনাটি এখন ‘ওপেন-সিক্রেট’। শোনা যায়, এজন্য নাকি বড় জরিমানাও গুনতে হয়েছে দুই ক্রিকেটারকে। বিসিবি তাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছে। তবে মাঠের লড়াই জমে উঠেছে। ইতিবাচক-নেতিবাচক নানা ঘটনাসহ এগিয়ে চলেছে এবারের বিপিএল। ৯ ডিসেম্বর ফাইনাল—তার আগে আরও নতুন কোনো কিছু ঘটে কিনা এখন সেটা দেখার অপেক্ষা।

সর্বশেষ খবর