রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড়

রাজধানীর বাইরে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড়

তরুণদের এই ঘোড়দৌড় দেখতে প্রচুর দর্শকের সমাগম ঘটে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

নবান্নের ধান কাটা শেষ হলো এই তো কদিন আগে। ধান কাটা শেষে কৃষকের এখন অফুরন্ত অবসর। পঞ্চগড়ের কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে পিঠে পুলির উৎসব, দাওয়াত আর বিয়েবাড়ির জিয়াপত। গরু ছাগলের বিচরণ আর খড় নিয়ে পড়ে আছে বিস্তীর্ণ মাঠ। অপেক্ষা করছে পরের ফসল বুকে ধারণের জন্য। ঠিক এ সময় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল বিনয়পুর সেনপাড়া গ্রামের উদ্যোমী তরুণদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ঘোড়দৌড় উৎসব। উৎসবে নির্মল আনন্দে উপচে পড়েছিল মানুষ। মায়ের কোলে বসে অথবা বাবার ঘাড়ে চড়ে  বাঁধ ভাঙ্গা এ আনন্দে যোগ দিয়েছিল হাজার হাজার শিশু, তরুণসহ বয়োজ্যেষ্ঠরা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ঘোড়া নিয়ে এসেছে প্রতিযোগীরা। শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই বিস্তীর্ণ মাঠের চার দিক থেকে দর্শকরা আসতে থাকে প্রায় বিলুপ্ত ঘোড়দৌড় খেলা উপভোগ করতে। বিকাল চারটার দিকে হালকা শীতের নরম রোদ আর বেলা পড়ে আসা আলোয় শুরু হয় উৎসব। দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘোড়দৌড়ের উদ্বোধন ঘোষণা করলে মুহুর্মুহু করতালির মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঘোড়দৌড় উৎসব। শুরুতেই বি গ্রেডের প্রতিযোগীরা অংশ নেয় । এই গ্রেডে ১৭ জন প্রতিযোগীর মধ্যে অধিকাংশই ছিল স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী আর ক্ষুদে নারী শিক্ষার্থী মরিয়মের অংশগ্রহণ উৎসবটিকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। এ গ্রেডের ১০ জন ঘোড়দৌড় প্রতিযোগী যখন ঘোড়া ছুটানো শুরু করে তখন দর্শকের আনন্দে মাঠ উদ্ভাসিত। শীতের ক্ষণস্থায়ী বিকাল পেরিয়ে সূর্য ডুবছে প্রায়। ঠিক সন্ধ্যার আগে আগেই উৎসব শেষ হলে দর্শক ঘরে ফিরতে থাকে। এ সময় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, আলমগীর কবির স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামেদুল ইসলামসহ গণ্যমান্যরা। আয়োজক তরুণরা  আশা করেন সরকারি পৃষ্ঠপোকতা পেলে প্রতিবছর এই খেলা আয়োজন করবে তারা।

আয়োজক তরুণদের মধ্যে ইসমাইল হোসেন জানান, আয়োজনে অনেক কষ্ট হলেও মানুষকে আনন্দ দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলা থেকে নিজের ঘোড়া নিয়ে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছেন আবদুল হাদী (৩৮)। তিনি জানান, ৫ম শ্রেণিতে পড়ার সময় ঘোড়ার প্রেমে পড়ি। বিশেষ করে যখন থেকে লেখাপড়া  করে যে গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে কবিতাটি পড়েছি সেই থেকে। ঘোড়া নিয়ে বাংলাদেশের নানা প্রান্তে চলে যাই। এটা একটা সখ। এই খেলা গ্রামেগঞ্জে বেশি বেশি আয়োজন জরুরি। অন্যদিকে ক্ষুদে দর্শকরাও চায় এই খেলা প্রতিবছর আয়োজন হোক।

সর্বশেষ খবর