মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চার অধিনায়কের অন্যরকম লড়াই

ক্রীড়া প্রতিবেদক

চার অধিনায়কের অন্যরকম লড়াই

আজকের ম্যাচটি উপভোগ্য হবে। অনুশীলনের ফাঁকে চিটাগং ভাইকিংসের অধিনায়ক তামিম ইকবাল এই কথাই কি বলছেন প্রতিপক্ষ রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক ড্যারেন স্যামিকে —রোহেত রাজীব

দুর্ভাগ্য মাশরাফি বিন মর্তুজার। বিপিএলের প্রথম তিন আসরের শিরোপাজয়ী দলের অধিনায়ক মাশরাফি। অথচ এবার দর্শক হয়ে দেখবেন ফাইনাল। যদিও তার দল গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস টানা চার জয়ে আসর শেষ করেছে। কিন্তু সেটা ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ের রাস্তায় টেনে তুলতে পারেনি। ওয়ানডে ও টি-২০ অধিনায়কের মতো দুর্ভাগ্য টেস্ট মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলসের সেরা পারফরমার। কিন্তু তাকেও ফাইনাল দেখতে হবে দর্শকের আসনে বসে। দুই অধিনায়ক ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে না থাকলেও চার অধিনায়ককে আজ তাদের মেধার লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে ফাইনালে উঠতে। ফলে ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে লড়তে হচ্ছে খুলনা টাইটানসের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বিপক্ষে। একই দিন এলিমিনেটর লড়াইয়ে চিটাগং ভাইকিংসের তামিম ইকবালের প্রতিপক্ষ রাজশাহী কিংসের ক্যারিবীয় ক্রিকেটার অধিনায়ক ড্যারেন স্যামিকে।

চার অধিনায়কের তিন জন স্থানীয় এবং একজন বিদেশি। এরমধ্যে তামিম ইকবাল ছাড়া বাকি তিনজনই অলরাউন্ডার। পারফরম্যান্সের বিচারে সবার চেয়ে এগিয়ে চিটাগংয়ের তামিম ইকবাল। বাঁ হাতি ড্যাসিং ওপেনার রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। সেটা ঘরোয়া ক্রিকেটই হউক, কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। বিপিএলে এবার তার ব্যাট যেন কথা বলছে। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এবারের আসরে চার শতাধিক রান করেছেন তামিম। ১২ ম্যাচে ১১৬.৪৩ স্ট্রাইক রেটে চিটাগং ভাইকিংসের অধিনায়কের ব্যাট থেকে বেরিয়েছে ৪২৫ রান। সেঞ্চুরি নেই। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি পাঁচটি। সর্বোচ্চ ৭৫ রানের ইনিংসটি বরিশালের বিপক্ষে। এছাড়া বাকি চার হাফসেঞ্চুরির তিনটি আবার টানা। ঢাকার বিপক্ষে ৭৪, খুলনার বিপক্ষে অপরাজিত ৬৬ ও রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে অপরাজিত ৬২। তবে আজকের প্রতিপক্ষ রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে তার ব্যাট কথা বলেনি। একটিতে ৫ ও অপরটিতে শূন্য রান করেন। তারপরও চিটাগং ভাইকিংসের সাফল্য বাঁ হাতি ওপেনারের ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে। প্রতিপক্ষ রাজশাহীর অধিনায়ক স্যামি রয়েছেন ফর্মে। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে তিনি বেশ ভালোই করছেন। ব্যাটিংয়ে চিটাগংয়ের বিপক্ষে এক ম্যাচে ৭ বলে ২ ছক্কায় ১৪ ও আরেক ম্যাচে অপরাজিত থাকেন ৩ রানে।  উইকেট নেই। সব মিলিয়ে আসরে স্যামি ১২ ম্যাচে ১৬৯.২৯ স্ট্রাইক রেটে ২১৫ রান করেন। হাফসেঞ্চুরি একটি। ২০ ওভারে ১৯৪ রানের খরচে নিয়েছেন মাত্র ৪ উইকেট। দুই দলের বিজয়ী দল খেলবে কোয়ালিফাইয়ার ওয়ানের পরাজিত দলের বিপক্ষে।

কোয়ালিফাইয়ার ওয়ানে মুখোমুখি হবে ঢাকা ডায়নামাইটস-খুলনা টাইটানস। দুই দলের জয়ী দল সরাসরি ৯ ডিসেম্বর ফাইনাল খেলবে। পরাজিত দল আগামীকাল দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে খেলবে চিটাগং ভাইকিংস-রাজশাহী কিংসের বিজয়ী দলের বিপক্ষে।

ঢাকার অধিনায়ক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। আগের আসরগুলোর মতো জ্বলে উঠতে পারছেন না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ১২ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে বেরিয়েছে ১৯৬ রান। উইকেট ২৯ গড়ে ১০টি। তবে ঢাকায় তারকা ক্রিকেটার ভরা। কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়বর্ধন, এভিন লুইস, আন্দ্রে রাসেল, ডুইন ব্রাভোদের মতো ম্যাচ উইনার থাকায় সাকিবের পারফরম্যান্স খুব চাপে ফেলছে না ঢাকাকে। কিন্তু মাহমুদুল্লার পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করে খুলনার সাফল্য। শেষ ওভারে মাহমুদুল্লাহর ম্যাজিক্যাল বোলিংয়ে দুটি জয় পায় খুলনা। এমনকি শেষ ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে দুরন্ত ব্যাটিং করে অবিশ্বাস্য জয় উপহার দেন মাহমুদুল্লাহ। ১২ ম্যাচে স্টাইলিস্ট মাহমুদুল্লাহ ৩৬.৯০ গড়ে রান করেন ৩৬৯। ২১১ রানে নেন ৯ উইকেট।

চার অধিনায়কের অন্যরকম লড়াইয়ে ম্যাচগুলো উপভোগ্য হবে কোনো সন্দেহ নেই।

সর্বশেষ খবর