শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সমস্যায় জর্জরিত জিমন্যাস্টিকস

ফেডারেশনের হালচাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সমস্যায় জর্জরিত জিমন্যাস্টিকস

যেমন কঠিন তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ খেলা জিমন্যাস্টিকস। তবুও বিশ্বে জনপ্রিয় খেলার অন্যতম এটি। বাংলাদেশও একেবারে কম জনপ্রিয় ছিল না। প্রতিযোগিতা দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমনেসিয়ামে উপচেপড়া দর্শকের সমাগম হতো। রবিউজ্জামান, কাওসার, দেওয়ান নজরুল, সাইফুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামানদের নৈপুণ্য দেখে দর্শকরা চমকে যেতেন। মেয়েরাও একেবারে পিছিয়ে ছিল না। লুসি, ছবি, সুলতানাও ফ্লোর কাঁপিয়েছেন। এখন কেমন জানি ঝিমিয়ে পড়ছে জিমন্যাস্টিকস। একেবারে নীরবভাবে এই খেলা পরিচালিত হচ্ছে।

কেন এ অবস্থা? এ ব্যাপারে জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আহমেদুর রহমান বললেন, অচলাবস্থা নেমে এসেছে এ কথা কেউ বলতে পারবে না। ক্রীড়া পরিষদ থেকে বার্ষিক যে অনুদান আসে তা দিয়ে ফেডারেশন চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। স্পন্সরশিপেও সেভাবে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও জাতীয় প্রতিযোগিতা, জুনিয়র জাতীয় প্রতিযোগিতা ও অন্য টুর্নামেন্ট নিয়মিতভাবেই করছি। তবে সিনিয়র লেভেলে এখন নতুন কোনো খেলোয়াড় সৃষ্টি হচ্ছে না। জুনিয়রদের দিয়ে তো আর প্রতিযোগিতায় সাড়া ফেলা যায় না। হ্যাঁ, এ সংকট বেশি দিন থাকবে বলে মনে হয় না। নতুন খেলোয়াড়ের সন্ধানে আমরা তৃণমূলে কাজ করেছি। ৪০ জন খেলোয়াড়কে বাছাই করা হয়েছে। জায়গার অভাবে ঢাকায় তাদের প্রশিক্ষণ শুরু করতে পারছি না। আহমেদুর বলেন, এক সময় জিমন্যাস্টদের চাকরির নিশ্চয়তা ছিল। এখন একমাত্র আনসার ছাড়া কোনো জিমন্যাস্ট বেতন পান না। তাই জিমন্যাস্ট হওয়ার আগ্রহটাও কমে গেছে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আক্ষেপ করে বললেন, সমস্যা তো অসীম। কিন্তু বড় ট্র্যাজেডি হচ্ছে জিমন্যাস্টরা যে নিয়মিত প্রশিক্ষণ করবেন সে জায়গাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জিমন্যাস্টিকস করতে আলাদা জিমনেসিয়ামের প্রয়োজন পড়ে। তা না হলে সম্ভব নয়, কিন্তু প্রশিক্ষণের জায়গা তো দিতে হবে। আগে ক্রীড়া পরিষদের কিছু অংশে জিমন্যাস্টিকস করা যেত। এখন যে অবস্থা তাতে তো ঠিকমতো সাজসরঞ্জামই বসানো যায় না। এ অবস্থা চললে এগোব কীভাবে? জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে বারবার বলেও লাভ হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকসে সাফল্য নেই বললেই চলে। তবে ২০১২ অলিম্পিকে ক্রীড়ামোদীদের পদক জেতার স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। যাকে ঘিরে স্বপ্ন সেই সাইফ সিজারই হিটে আউট। অথচ আমেরিকার ঘরোয়া গেমসে সাইফের পারফরম্যান্স ছিল ঈর্ষণীয়। আহমেদুর বলেন, সাইফ নিঃসন্দেহে উঁচুমানের জিমন্যাস্ট। কেন যে অলিম্পিকে এমন করল বুঝে উঠতে পারছি না। সাইফ তো প্রবাসী ছিলেন। দেশে কি তার মানের জিমন্যাস্ট তৈরি করা যায় না। আহমেদুর বলেন, ‘অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু সে মানের ট্রেনিং ও সুযোগ-সুবিধা তো পেতে হবে।’

সর্বশেষ খবর