রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি শেখ রাসেল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি শেখ রাসেল

জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে শেখ রাসেল ও ঢাকা আবাহনী ম্যাচের উত্তেজনাকর মুহূর্ত (বাঁয়ে)। বিরতির সময় দীর্ঘ ফুটবল ক্যারিয়ারে ইতি টানেন আমিনুল। এ সময় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহানের পক্ষ থেকে তার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন ক্লাব সভাপতি নূরুল আলম চৌধুরী ও অন্য কর্মকর্তারা —রোহেত রাজীব

প্রতি ম্যাচেই গোল করেছেন সানডে চিজোবা। ম্যাচপ্রতি গোলের স্কোরিং রেট প্রায় ১। ঢাকা আবাহনীর ধারাবাহিকতার রূপকার কিন্তু চিজোবা নন, ইংলিশ মিডফিল্ডার লি টাক। গোল করছেন নিয়মিত। গোল করাচ্ছেনও। গতকাল হঠাৎ করে মাথা গরম করে লাথি মারেন শেখ রাসেলের ক্যামেরুনের ফুটবলার ইকাঙ্গাকে। রেফারি মিজানুর রহমান কোনো সময়ক্ষেপণ না করে সরাসরি লাল কার্ড দেখান লি টাককে। মুহূর্তে ১০ জনের দলে পরিণত হয় শিরোপা প্রত্যাশী আবাহনী। দলের ‘প্রাণভোমরা’ না থাকায় আবাহনীর আক্রমণ খুব সাঁড়াশি ছিল না। বিপরীতে শেখ রাসেল আগের যে কোনো ম্যাচের চেয়ে অনেক গতিশীল ফুটবল খেলেছে গতকাল। শেখ রাসেলের আমিনুল ইসলাম ক্যারিয়ারের ইতি টানেন। ঘটনাবহুল ম্যাচটিতে ফেবারিট হয়েও জিততে পারেনি আবাহনী। ভালো ফুটবল খেলেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি শেখ রাসেল। দুই হেভিওয়েটের ফুটবল লড়াইটি গোলশূন্য শেষ হয়। ১৯ ম্যাচ শেষে ঢাকা আবাহনীর পয়েন্ট ৪৩ এবং সমসংখ্যক ম্যাচে শেখ রাসেলের ২১। তবে এই ড্রয়ে পয়েন্ট টেবিলে অবস্থানের হেরফের হয়নি।

বিরতির ফাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফুটবলকে বিদায় জানান ১৩ বছর ধরে শেখ রাসেলের রাইটব্যাক আগলানো আমিনুল। ২০০৩ সালে জাতীয় দলের হয়ে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেছিলেন। ওই বছরই যোগ দেন শেখ রাসেলে। এর আগে ১৯৯৯-২০০২ সাল পর্যন্ত আবাহনীর হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন তিনি। বিরতির সময় শেখ রাসেলের কর্মকর্তারা ক্লাবের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহানের পক্ষে ফুল দিয়ে বিদায় জানান আমিনুলকে।

প্রথম পর্বে দুই দলের ম্যাচে জেতেনি কেউ। ১-১ গোলে ড্র ছিল। শেখ রাসেল সর্বশেষ উত্তর বারিধারার কাছে হারের পর রহমতগঞ্জকে ২-০, চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে ০-০, ফেনী সকার ক্লাবকে ৩-১, বিজেএমসির সঙ্গে ১-১, মুক্তিযোদ্ধাকে ২-০ এবং ব্রাদার্সের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করার আত্মবিশ্বাস নিয়ে গতকাল মাঠে নামে মানিকের শিষ্যরা। শিরোপা প্রত্যাশী আবাহনীর সঙ্গে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গোলশূন্য ড্র করে মাঠ ছাড়ে।  

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দুই হেভিওয়েটের লড়াই হয় শীতের সন্ধ্যায়। ম্যাচের শুরুতে প্রথম আক্রমণে যায় আবাহনী। চার মিনিটের ওই আক্রমণে গোল প্রায় পেয়েও গিয়েছিল ধানমন্ডি পাড়ার দলটি। লাল কার্ড দেখা লি টাকের বাড়ানো বলে ১৮ গোল করে সবার উপরে থাকা সানডে চিজোবা শট নেন। কিন্তু বল শেখ রাসেলের গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্যকে পরাস্ত না করে পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। ২০ মিনিটে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল শেখ রাসেলও। হাইতিয়ান মিডফিল্ডার সেবাস্টিয়ান থুরিয়ের ডিফেন্স চেরা পাস দেন ইকাঙ্গাকে। ইকাঙ্গা বল ধরে বাঁ পায়ের জোরালো শট নেন। তা ক্রসপিসের সামান্য ওপর দিয়ে বাইরে যায়। এরপর ৩০ মিনিটে ফের আক্রমণ চালায় আবাহনী। লিগে এখন পর্যন্ত ১৮ গোল করা সানডে শট নেন, কিন্তু বল তার ঠিকানা খুঁজে পায়নি। এর মধ্যে ৩৭ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন লি টাক। কোনো কারণ ছাড়াই ইকাঙ্গাকে ফাউল করেন লি টাক। লাল কার্ড দেখায় পরের ম্যাচ খেলতে পারবেন না ইংলিশ ফুটবলার। গোলশূন্য শেষ হয় প্রথমার্ধ।

আবাহনী দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নামে স্ট্রাইকার সানডেকে ছাড়া। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনের আবাহনীর ওপর মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালায় শেখ রাসেল। কিন্তু স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় গোল পায়নি। ৬৪ মিনিটে বক্সের ওপর থেকে ইমন বাবুর বাঁকানো শট ক্রসপিঠে লেগে ফিরে আসে। ফলে গোল হয়নি। শেষ দিকে শেখ রাসেল আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দিয়েও গোল পায়নি। তাই গোলশূন্যই শেষ হয় ম্যাচটি।

সর্বশেষ খবর