রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে শেরপুরের মাঠ

এভাবেই অযত্নে পড়ে আছে শেরপুরের খেলার মাঠ

শেরপুর প্রতিনিধি

হারিয়ে যাচ্ছে শেরপুরের মাঠ

নয়আনি জমিদারের বাড়ি বলে খ্যাত বর্তমানে শেরপুর জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে বড় একটি মাঠ ছিল। এখানে শহরের প্রায় লোকই খেলাধুলা করত। এখানে জজ কোর্ট ও জেলা প্রশাসকের গাছের বাগানের ফলে এখন আর দৌড় দেওয়ারও উপায় নেই। শহরের নিউমার্কেটের পেছনে মহিলা কলেজ সংলগ্ন আড়াইআনি জমিদারের ছোট বাড়ি বলে খ্যাত স্থানটি ছিল খেলাধুলার এক মনোরম পরিবেশ। এখানে এখন জেলা প্রশাসকের কর্মচারীরা যেনতেনভাবে বাসা-বাড়ি করে কেউ লিজ কেউ আবার কাগজপত্র বানিয়ে নিজের করে ফেলেছেন। শেরপুরের কামারিয়ার ঘুষের মাঠ, তারা গড়ের ঠাকুরের মাঠ, কামারের চর, ফটিয়ামারির নজগর আলীর  মাঠ। নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা, গণপদ্দি ও মোজাকান্দা মাঠ, শ্রীবর্দীর ভটপর, পাইকুড়া, ঝগড়ারচর ও সরকারি কলেজ মাঠ। ঝিনাইগাতি উপজেলার বিখ্যাত গরুহাটি মাঠ। নালিতাবাড়ীর নন্নী, বরুয়াজানি ও তারাগঞ্জ স্কুল মাঠগুলো ছিল খেলোয়াড় আর দর্শকদের মুখে মুখে। মাঠগুলোর কোনো কোনোটি অস্তিত্ব হারাতে বসেছে আবার কোনো কোনোটি অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে। কিছু মাঠ আছে সংস্কার করলেই খেলার উপযুক্ত হয়ে যায় কিন্তু কে রাখে কার খোঁজ। ছেলেরা যা হোক জেলার স্টেডিয়ামে এসে যে কোনো সময় খেলতে পারে কিন্তু মেয়েরা না পারে মাঠে যেতে না আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো খেলার ব্যবস্থা। জেলার নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম মডেল গার্লস কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শহীদ আবদুর রশিদ মহিলা কলেজের মাঠের কিছু জায়গা থাকলেও নতুন নতুন ভবন নির্মাণে মাঠ হারিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে গত ১০ বছরের মধ্যে মাঠ সংস্কারে এক কোদাল মাটিও ফেলানো হয়নি। জাতীয় ২/১টি কর্মসূচি ছাড়া প্রতিষ্ঠানের কোনো খেলাধুলায় মন নেই শরীরচর্চা শিক্ষকদের। মেয়েদের খেলাধুলার আয়োজনে নামে প্রতিষ্ঠানের কেউ কেউ শুধু সরকারি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগ রয়েছে সর্বত্র। মাঠের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শুধু নকলার চৌধুরী ছবুরুন্নেছা কলেজ। এখানে সুন্দর একটি মাঠ থাকলেও মেয়েদের খেলারচর্চা নেই বললেই চলে। এ ব্যাপারে জেলার বিশিষ্ট ফুটবল প্রশিক্ষক সাধন দাস বলেছেন এখন মানুষের মধ্যে মাঠ ও খেলা নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। হালুয়া রুটি পেতে সবাই ছুটছে রাজনীতির মিছিলে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ও বিএফএর শেরপুরের সভাপতি মানিক দত্ত বলেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির অসহযোগিতার জন্য মাঠ, খেলা দুটিই হারিয়ে যাচ্ছে। মাঠ রক্ষার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা থাকলেও কেউ মানছেন না। জেলা শহরের মডেল গার্লস কলেজের মাঠটি সংস্কার করে মহিলাদের জন্য অন্তত একটি খেলার জায়গা করে দেওয়ার জন্য দাবি করেন। 

সর্বশেষ খবর