মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফুটবলে রেফারির গুরুত্ব নেই!

বাফুফের মেগা পরিকল্পনা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফুটবলে রেফারির গুরুত্ব নেই!

চার বছরের কর্মসূচি বা ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন যে টার্গেট নিয়েছেন তা সত্যিই চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বাস্তবায়ন নিয়েই যত প্রশ্ন। কেননা ২০০৮ সালে দেশের ফুটবলে অভিভাবকের দায়িত্ব নেওয়ার পর সালাউদ্দিন প্রতিশ্রুতির জোয়ার বইয়ে দেন। কিন্তু তার সিকিভাগও পূরণ হয়নি। এ জন্য অবশ্য সালাউদ্দিনকে এককভাবে দায়ী করা যাবে না। এক্ষেত্রে তিনি যেমন অন্যদের সহযোগিতা পাননি। তেমনিভাবে ক্লাবগুলো নানা বিষয়ে আপত্তি তোলায় এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

এবার অবশ্য বাফুফে সভাপতি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, কোনো বাধাই তাকে থামাতে পারবে না। অক্ষরে অক্ষরে প্রতিটি পদক্ষেপ বাস্তবে রূপ দেবেন। যে চ্যালেঞ্জ তিনি নিয়েছেন সফল হলে অন্ধকারে বন্দী থাকা ফুটবল আলোর মুখ দেখবেই। কথা হচ্ছে বিশাল কর্মসূচি দেওয়ার পরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বাদ পড়েছে। ফুটবলের সঙ্গে রেফারির মান উন্নয়নটা বড় একটা ফ্যাক্টর। ঘরোয়া আসরে বাজে রেফারিংয়ের শিকার হয়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ফুটবলারদের হিমশিম খেতে হয়। রেফারির নিরপেক্ষতা নিয়ে আগেও কম বেশি বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে দুর্বল রেফারিং নিয়ে অনেক ক্লাবই বিরক্ত। বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই। এবার পেশাদার লিগে রেফারি নিয়ে যা ঘটছে তা সবারই চোখে পড়ছে। খেলার হার-জিত থাকবেই। কিন্তু রেফারি যদি কোনো দলের পয়েন্ট নষ্ট করতে পক্ষপাতিত্ব বাঁশি বাজান তখন কি একে ফুটবল বলা যায়?

বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ইকবাল হোসেন বর্তমানে রেফারিস কমিটির চেয়ারম্যান। তিনিও স্বীকার করেছেন দেশে মানসম্পন্ন রেফারি সেইভাবে নেই। এতে করে মাঠে তাদের ভুলটা বেশি ধরা পড়ছে। ইকবাল বলেছেন, ট্রেনিং ছাড়া কোনোভাবেই ভালো মানের রেফারি হওয়া যায় না। আগে শুধু ফুটবলার নন দেশে রেফারিরাও তারকা খ্যাতি পেয়েছেন। এখন তো সেই অবস্থা নেই। বাঁশি বা পতাকা উড়িয়ে সংকেত দিলেই ভালো রেফারি হওয়া যায় না। তিনি বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে বাফুফে ভাবছে। আশা করি সামনে ফুটবলারদের পাশাপাশি রেফারিদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

চার বছরের ৭১ পৃষ্ঠার কর্মসূচিতে কোথাও রেফারিদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। ব্যাপারটি কেন গুরুত্ব দেওয়া হলো না সেটিই প্রশ্ন। বাফুফের নির্বাহী কমিটির এক সদস্য অবশ্য বলেছেন, রেফারির বিষয়টি পুরোপুরি আলাদা। তাদের মানোন্নয়ন নিয়ে বাফুফের চিন্তাভাবনা রয়েছে।

কথা হচ্ছে রেফারির বিষয়টি আলাদাভাবে দেখা হবে কেন? চার বছরের পরিকল্পনায় রেফারির ইস্যুটি থাকা উচিত ছিল। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মারাত্মক ফাউল করার পরও কাউকে শুধু হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। তেমনিভাবে কাউকে আবার অযথা লালকার্ড দেখানো হচ্ছে। এখানেই পক্ষপাতিত্ব রেফারিং স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ফুটবলাররা বুঝতে পারছেন না কোনটা ন্যায় বা অন্যায়। যার প্রভাব আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পড়ছে। কর্মসূচিতে তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলার সন্ধানের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রিফারিংয়ের মানের যে অবস্থা, তাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা না করলে ফুটবল এগোতে পারবে কি?

সর্বশেষ খবর