মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শেখ রাসেলের প্রশংসনীয় উদ্যোগ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শেখ রাসেলের প্রশংসনীয় উদ্যোগ

শেখ রাসেলের জার্সি পরেই খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানেন রজনী ও আমিনুল

ফুটবলারদের অবসর আনুষ্ঠানিকভাবে হবে এটাই স্বাভাবিক। বিদায় বেলায় ফুলেল শুভেচ্ছা পাবেন এই আশা তারা করতেই পারেন। কিন্তু বাংলাদেশে কজন ফুটবলারের বিদায় বেলায় তা জুটে। হাসান আল মামুন, নজরুল বা গোলরক্ষক আমিনুল হকদের মতো তারকা ফুটবলারদের ক্যারিয়ার শেষ প্রান্তে এসে ঠেকলেও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ফুটবলকে বিদায় জানাতে পারছেন না। ফুটবল ক্যারিয়ারে এরা ক্লাবের হয়ে জানপ্রাণ দিয়ে লড়েছেন। তাদের অসাধারণ নৈপুণ্যে দল সাফল্যও পেয়েছে। জাতীয় দলে খেলেছেন সুনামের সঙ্গে। তারপরও কোনো ক্লাব তিনজনকে বিদায় জানানোর প্রয়োজন মনে করছে না। মামুন, নজরুল বা আমিনুল কেন অনেক তারকা ফুটবলার আছেন যারা অবসরের সুযোগ না পেয়ে অভিমানে নীরবভাবে ফুটবলকে ‘গুডবাই’ জানিয়েছেন। স্বাধীন বাংলা ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রথম অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। টানা আট বছর ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অনেক ট্রফি জিতেয়েছেন দলকে। তবু প্রিয় ক্লাব বা জাতীয় দল থেকে জাকারিয়া পিন্টু অবসর নিতে পারেননি। নীরবে সরে গেছেন।

এ ক্ষেত্রে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে ব্যতিক্রমই বলতে হয়। তারা ফুটবলারদের সম্মানের সঙ্গে বিদায় জানাচ্ছে। ক্লাব চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান বরাবরই বলছেন, ‘ফুটবলারদের উপযুক্ত সম্মান জানাতে হবে। তা না হলে তাদের প্রতি অবিচার করা হবে।’ শেখ রাসেল সেই পথই অনুসরণ করছে। এবার শেখ রাসেল থেকে আমিনুল ইসলাম ও রজনী কান্ত বর্মণ দীর্ঘ ফুটবল ক্যারিয়ারে ইতি টেনেছেন। ফুটবল ঘিরে বাংলাদেশের ইতিহাস লিখতে গেলে অনায়াসে রজনীর নাম ঠাঁই পাবেই। ছিপছিপে শরীর অথচ মাঠে তার খ্যাতি ছিল চীনের প্রাচীর বলেই। সাফের বিশ্বকাপ বলে খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ ট্রফি জিতেছে একবারই। ২০০৩ সালে তা সম্ভব হয়েছে রজনীর নেতৃত্বে। ১৯৯৯ সালে সাফ গেমসে বাংলাদেশ প্রথম বারের মতো সোনা জিতেছিল। সেই দলে রজনীও ছিলেন। দেশের হয়ে মাঠে জানপ্রাণ দিয়ে লড়েছেন অথচ সেই রজনীকে ফুটবলপ্রেমীরা ভুলতে বসেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছিল এই কিংবদন্তি ফুটবলার নীরবে সরে যাবেন।

সেটা হতে দেয়নি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ১৫ ডিসেম্বর এই ক্লাব থেকে রজনী ফুটবলকে বিদায় জানালেন রাজকীয়ভাবে। যোগ্য ফুটবলারকে যোগ্যতার পুরস্কার দিয়েছে শেখ রাসেল। বিদায়ী ম্যাচে রজনীর হাতে অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ড বেঁধে দেওয়া হয়। যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাফ জিতেছে। সেই রজনী জীবনের শেষ ম্যাচ খেললেন অধিনায়ক হিসেবে। একজন ফুটবলারের জীবনে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে। শেখ রাসেলের এমন উদ্যোগ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে ক্রীড়াঙ্গনে। শেখ রাসেল তার বিদায়ের উদ্যোগ নিয়েছিল বলে সেদিন অনেক তারকা ফুটবলার ও কর্মকর্তা রজনীকে শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে আসেন। বিদায়ের বেলায় ফুলে ফুলে ভরে গিয়েছিলেন রজনী। আবেগাপ্লুত হয়ে রজনী সেদিন বারবার উচ্চারণ করছিলেন শেখ রাসেলের নাম। ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, ‘সত্যিই আমি বড় ভাগ্যবান। এমন সম্মান ও ভালোবাসা পাব তা ভাবতেই পারিনি।’

সর্বশেষ খবর