বুধবার, ১১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

উইকেট যখন প্রতিপক্ষ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

উইকেট যখন প্রতিপক্ষ

অকল্যান্ডে সবুজ উইকেটে অনুষ্ঠিত হবে টেস্ট ম্যাচ

নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটন। কাঁটা-কম্পাসের মাপজোকে আঁকা শহরটির অবস্থান তাসমান সাগরের পাড়ে। ‘ফুলের শহর’ বলে আলাদা পরিচিতি উত্তরাঞ্চলীয় শহরটির। তবে ক্রিকেটীয় দেশগুলোর কাছে এর পরিচয় শুধুই ‘বাতাসের শহর’ বলে। শহরটির একমাত্র ‘ক্রিকেট ভেন্যু’ বেসিন রিজার্ভ। সবুজ ঘাসের উইকেট যার মূল আকর্ষণ। যে উইকেটে পেসারদের সুইং, বাউন্স ও মুভমেন্টের কাছে অসহায় থাকেন ব্যাটসম্যানরা। সেই বেসিন রিজার্ভেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ আগামীকাল ভোরে। খেলবে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে হোয়াইওয়াশের তিক্ত স্বাদ নিয়ে।

এ নিয়ে চতুর্থবার নিউজিল্যান্ড সফর করছে বাংলাদেশ। ২০০১-০২, ২০০৭-০৮ ও  ২০১০ সালে টাইগাররা চির সবুজের দেশটিতে গিয়েছিল। এবার চতুর্থবারের মতো সফর করছে। আগের তিনবারের মতোই এবারও ব্যর্থতা সঙ্গী মাশরাফি, সাকিব, মুশফিকদের। ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। সেই ভঙ্গুর মানসিকতা নিয়েই টেস্ট সিরিজ খেলতে নামছে মুশফিকবাহিনী। আগামীকাল প্রথম টেস্ট শুরু। প্রতিপক্ষ প্রবল শক্তিধর। ঘরের মাটিতে দলটিকে হারানো খুবই কঠিন। সেই প্রবল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নামার আগে মুশফিক বাহিনীকে লড়তে হবে কন্ডিশন ও উইকেটের সঙ্গে। বেসিন রিজার্ভে এর আগে দুবার টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ২০০১ সালে হেরেছিল ইনিংস ও ৭৪ রানে। ২০১০ সালে হারে ইনিংস ও ১৩৭ রানে। দুটি টেস্টের ফলই স্পষ্ট করে দিয়েছে স্বাগতিক বোলারদের কাছে কতটা অসহায় ছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নিউজিল্যান্ড এবারও বেসিন রিজার্ভের উইকেটকে সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত করছে। উইকেটের চেহারা এতটাই সবুজ ছিল যে, গতকাল অনুশীলনের সময় উইকেট খুঁজে পাচ্ছিলেন না অধিনায়ক মুশফিক, বাঁ হাতি ড্যাসিং ওপেনার তামিম ইকবাল, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। উইকেটে ঘাস দেখে টেস্ট অধিনায়ক দুষ্টুমিও করছিলেন প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে, ‘ভাই উইকেট কোনটি?’ ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে খেললেও টেস্টে খেলতে হবে ঘাসের উইকেটে। যেখানে পেসাররা বাড়তি সুইং ও বাউন্স পাবেন। বেসিন রিজার্ভে সবুজ উইকেটের পাশাপাশি আরও একটি প্রতিপক্ষ থাকছে মুশফিকবাহিনীর। বাতাস। তাসমান সাগরের পাশে বলে বাতাস থাকে সব সময়। সেই বাতাসের সঙ্গে জোর লড়াই করতে হবে তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন, কামরুল ইসলাম রাব্বি. শুভাশীষ রায়দের। বাতাসের সঙ্গে মানিয়ে বলের লাইন লেন্থ রাখা খুবই কষ্টকর বলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ আশরাফুল, ‘ওয়েলিংটনে টেস্ট খেলা যে কোনো দলের জন্যই খুব কষ্টকর। সেখানকার উইকেট আমার খেলা অন্যতম বাউন্সি। বোলাররা বাড়তি বাউন্স ও সুইং পেয়ে থাকেন। উইকেটের পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ের সঙ্গেও লড়াই করতে হবে বাংলাদেশের বোলারদের। আর তা হলো বাতাস। সমুদ্রের পাড়ে বলে বাতাস একটু বেশি। সেখানে বোলিং করা সত্যিই কষ্টকর।’

ওয়েলিংটনে অভিষেক হতে পারে ‘স্পিড স্টার’ তাসকিন আহমেদের। গতিতে ঝড় তুলতেই মুখিয়ে থাকা তাসকিন বলেন, ‘উইকেট দেখে আমাদের বোলাররা খুশি। বেশ সবুজ ও শক্ত। মুভমেন্ট ও বাউন্স থাকবে। আমার বিশ্বাস আমরা এন্জয় করব।’ তাসকিন নিজেদের বোলিংয়ের কথা বললেও প্রতিপক্ষের টিম সাউদি, ইয়ান বুল্টদের গতি, সুইংয়ের বিপক্ষে কঠিন লড়াইয়ে নামতে হবে মুশফিক, তামিম, মাহমুদুল্লাহদের। যদিও ম্যাচের আগের দিন উইকেটের চেহারা থেকে পুরোপুরি সবুজ ভাবটি উবে যেতে পারে! সেটাই হয়তো আত্মবিশ্বাস জোগাবে মুশফিকদের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর