শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশকে আরও বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ দেওয়া উচিত

রিচার্ড হ্যাডলি

ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশকে আরও বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ দেওয়া উচিত

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৪০০ উইকেট নেন রিচার্ড হ্যাডলি। আশি ও নব্বই দশকে বিশ্ব কাঁপানো চার বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের একজন। তার আউট সুইং ও লেট সুইংয়ে বিভ্রান্ত হয়ে বিশ্বের তাবৎ তাবৎ ব্যাটসম্যানরা অকাতরে উইকেট বিলিয়ে ফিরেছেন সাজঘরে। বিশ্ব যখন দাবড়ে বেরিয়েছেন মাইকেল হোল্ডিং, অ্যান্ডি রবার্টস, ইয়ান বোথাম, ডেনিস লিলি, কপিল দেব, ইমরান খানরা। তখন দুর্বল শক্তির নিউজিল্যান্ডের বোলিং লাইনকে একাই টেনেছেন হ্যাডলি। নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে প্রতিপক্ষ দলগুলো তখন যত না চিন্তায় থাকত, তার চেয়ে বেশি চিন্তিত থাকত হ্যাডলিকে সামলানোর পরিকল্পনা আঁকতে গিয়ে। ৮৬ টেস্টে ৪৩১ উইকেট বলে, কতটা বিধ্বংসী ছিলেন হ্যাডলি। অসাধারণ এই ফাস্ট বোলার একমাত্র ক্রিকেটার যিনি ক্যারিয়ার চলাকালীন ‘নাইটহুড’ বা স্যার উপাধি পান। খেলা ছেড়েছেন অনেক আগে। এখন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের একজন ক্ষমতাধর কর্মকর্তা। থাকেন ক্রাইস্টচার্চে। গতকাল ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম দিন এসেছিলেন মাঠে। খেলা দেখেছেন। খেলা দেখার ফাঁকেই বাংলাদেশের ক্রিকেট, নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং নিজেদের ক্রীড়া পরিবার নিয়ে কথা বলেন। বলার ফাঁকে শুধু জানিয়েছেন, শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হতে বাংলাদেশকে আরও বেশি করে টেস্ট খেলতে হবে। ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস। এরপর থেকে গত ১৭ বছরে ৯৭টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। যার অধিকাংশই ঘরের মাঠে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ায় একটিমাত্র সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। ভারতে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলবে আগামী মাসে। নিউজিল্যান্ডে অবশ্য এবার নিয়ে চতুর্থবার সিরিজ খেলছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো ম্যাচ খেলেননি হ্যাডলি। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটের দিকে তার নজর ছিল সব সময়। নজর ছিল বলেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টাকে অসাধারণ বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে সাফল্য পেয়েছে, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। দারুণ একটি সাফল্য। আমরা (নিউজিল্যান্ড) প্রথম জয় পেতে কত বছর অপেক্ষা কমরছে (অভিষেক টেস্টের ২৫ বছর জয় পায় নিউজিল্যান্ড)। অথচ এর মধ্যেই বাংলাদেশ অনেক টেস্ট জিতে ফেলেছে। এটা কিন্তু দারুণ ব্যাপার।’

অভিষেকের পর বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত টেস্ট জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সাকল্যে ৮টি। স্যার হ্যাডলির বিবেচনায় এই সংখ্যা আরও অনেক হতে পারত। যদি অভিজ্ঞ হতো বাংলাদেশ। আরও বেশি টেস্ট খেলত। তাই কিংবদন্তির ক্রিকেটার রিচার্ড হ্যাডলি তাগিদ দিয়েছেন, বেশি করে টেস্ট খেলতে, ‘অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলোর উচিত বাংলাদেশের বিপক্ষে আরও বেশি টেস্ট খেলা। এতে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বাড়বে। টেস্ট খেলার কাঠিন্যতা বুঝবে। আমার বিশ্বাস অভিজ্ঞতা বাড়লেই বাংলাদেশ প্রতিপক্ষ হিসেবে মক্তিশালী হবে।’ হ্যাডলির পরিবার ক্রীড়া পরিবার। বাবা ওয়াল্টার হ্যাডলি এক সময় নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ও পরে ব্ল্যাক ক্যাপসদের সঠিক পথে পরিচালনা করেছেন। হ্যাডলির এক ভাই ব্যারি হ্যাডলি ১৯৭৫ সালের প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের হয়ে। আরেক ভাই ডিন হ্যাডলি ২৬ টেস্ট খেলেছেন। এমন এক পরিবারের সদস্য হয়ে ক্রিকেট বিশ্ব কাঁপানোই স্বাভাবিক। আর কাঁপিয়েছেনও বল হাতে। তবে ব্যাট হাতেও কিন্তু কম যাননি স্যার রিচার্ড হ্যাডলি। তাই তিনি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি। 

সর্বশেষ খবর