বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
স্ক্যান্ডাল

কোন পথে যাচ্ছেন ক্রিকেটাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কোন পথে যাচ্ছেন ক্রিকেটাররা

রুবেল - শাহাদাত - আরাফাত

বছর খানেক আগে নিউজিল্যান্ডে ক্রিকেট খেলছে ভারত। পারফরম্যান্স আহামরি নয় ভারতীয় ক্রিকেটারদের। তখনই খেলাকে আড়াল করে সংবাদের শিরোনামে জায়গা নেন বিরাট কোহলি। ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায় কোহলি-আনুস্কা শর্মার যুগল ছবি। শোরগোল পড়ে যায় গোটা ভারতে। সমালোচনায় মুখর হয়ে পড়েন নিন্দুকেরা। লিখতে থাকেন, বলতে থাকেন-ক্রিকেটাররা এখন ক্রিকেট বাদ দিয়ে ক্রিকেটের বাইরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। একই অবস্থার মুখোমুখি এখন বাংলাদেশের ক্রিকেট ও ক্রিকেটাররা। যেভাবে একের পর এক ক্রিকেটারদের স্ক্যান্ডাল বেরুচ্ছে, তাতে বাবা-মা, অভিভাবকরা প্রিয় সন্তানদের ক্রিকেটার বানাতে দ্বিতীয়বার ভাববেন কোনো সন্দেহ নেই। নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে গোটা দেশ হতাশার কালো মেঘে যখন ছেয়ে পড়েছে, তখন টাইগারদের বাজে পারফরম্যান্সকে আড়ালে ফেলেছে আরাফাত সানির স্ক্যান্ডাল। রবিবার তথ্য প্রযুক্তি আইনে আরাফাত সানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নাসরিন সুলতানা নামে এক তরুণী মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন জাতীয় দলের বাঁ হাতি স্পিনারের বিপক্ষে। দুটি মামলা করেন নাসরিন। মামলার অভিযোগ বিয়ে করে এখন অস্বীকার করছেন আরাফাত। নাসরিনের অভিযোগ পরিবারের অমতে ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর দুজনের বিয়ে হয়। কিন্তু এখন ঘরে তুলতে আপত্তি জানাচ্ছে আরাফাত। এছাড়াও তরুণীর অভিযোগ গত ১২ জুন দুজনের কিছু ব্যক্তিগত ছবি ও কিছু আপত্তিকর ছবি ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে আরাফাত হুমকি দেন। এরপর ২৫ নভেম্বর পুনরায় আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে ফের হুমকি দেন আরাফাত সানি। এরপরই তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেন নাসরিন। যদিও নাসরিনের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন আরাফাত। কিন্তু গতকাল আরাফাতকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শুধু আরাফাত সানি নন, ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আগে জাতীয় দলের আরেক ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের নামেও অভিযোগ তুলে দেশে শোরগোল তুলে ফেলেছিলেন মডেল ও নায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপী। রুবেল-হ্যাপীর বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, বিব্রতকর হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। হ্যাপী মামলা করেছিল রুবেলের বিরুদ্ধে। পুলিশ গ্রেফতার করেছিল রুবেলকে। বিশ্বকাপে যাতে রুবেলের শতভাগ সার্ভিস পায় ক্রিকেট দল, সেজন্য রুবেলকে সহায়তা করেছিল বিসিবি। শোনা যায়, বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও মামলায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল। রুবেল-হ্যাপী বিষয়টি তখন ছিল মুখরোচক দেশব্যাপী। বিশ্বকাপ চলাকালীন একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল একাধিক ক্রিকেটারের ওপর। রুবেলের অভিযোগ শেষ হতেই গ্রেফতার হন শাহাদাত হোসেন রাজিব। শিশু পরিচারিকা নিগৃহের জন্য পুলিশ গ্রেফতার করে রাজীব ও তার স্ত্রীকে। রাজীব জেলও খাটেন এজন্য। যদিও পরবর্তীতে অভিযোগ থেকে খালাস পান জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার। বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বড় সেলিব্রেটি ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারই মনে-প্রাণে চাইছেন, তাদের পরিবারের ছেলেরা যেন ক্রিকেটার হন। পরিবারের সঙ্গে দেশের নাম উজ্জ্বল করেন। একজন ভালোমানের ক্রিকেটার হতে পারলে আর্থিক স্বচ্ছলতাও থাকছে। এতসব ভাবনায় গোটা দেশ যখন ক্রিকেট নিয়ে মশগুল, তখন রুবেল, আরাফাত, আল-আমিন, শাহাদাত রাজীবদের ঘটনাগুলো অবশ্যই বাধা হয়ে দাঁড়াবে বাবা-মায়ের চিন্তা ভাবনায়।

 

সানি প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি

নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে জেলে গেছে তারকা ক্রিকেটার আরাফাত সানি। এ নিয়ে বিসিবি বিব্রত। আগের দিন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন সুজন স্পষ্ট করেই বলেছেন, সানি দোষী প্রমাণিত হলে বিসিবি তার পাশে থাকবে না। গতকাল মুখ খুললেন স্বয়ং বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ক্ষুব্ধ ভাষায় বললেন, জানি না প্রকৃত ঘটনা কি ঘটেছে। তবে যে নারী সানির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তা যদি সত্যি হয়ে থাকে তা সত্যিই লজ্জার। এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটিয়েছে ক্রিকেটাররা। কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলেছে বিসিবি কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। সানির বেলায় আমরা একই পথ অনুসরণ করব। ও যদি সত্যিই এমন জঘন্য অপরাধ করে থাকে তাহলে আমরা নীরব থাকব না। অবশ্যই অ্যাকশনে ভাবো।

সর্বশেষ খবর