শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

কঠিন পরীক্ষা বোলারদের

বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট সিরিজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কঠিন পরীক্ষা বোলারদের

ওয়েলিংটনে বাংলাদেশ যখন প্রথম টেস্ট খেলতে নামে, তখন একাদশে তিন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি, তাসকিন আহমেদ ও শুভাশিষ রায়ের নাম দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন অনেকে। টেস্টে অভিষেক হয়েছিল তাসকিন ও শুভাশিষের। রাব্বির নামের পাশে ছিল দুই টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। এমন একটি পেস অ্যাটাক নিয়ে লড়াই করা একটু কষ্টকরই ছিল। তারপরও নিউজিল্যান্ডের সিমিং কন্ডিশনের ভাবনায় অনেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন এ যাত্রায় রক্ষা পাবেন টাইগার পেসাররা! কিন্তু কোনো কাজে দেয়নি তিন পেসারের গতি, সুইং ও বাউন্স। ক্রাইস্টচার্চে শুভাশিষের জায়গায় রুবেল হোসেনকে নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। এবারও একই হাল। ব্ল্যাক ক্যাপস ব্যাটসম্যানদের দাপটে অসহায়ত্ব ফুটে উঠে পেসারসহ স্পিনারদের। নিউজিল্যান্ড সফরের দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশ। ৯-১৩ ফেব্রুয়ারি হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একমাত্র টেস্টটি খেলবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ  টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল ভারত। বিরাট কোহলির ভারত গত ১৮ টেস্টে অপরাজিত। কোনো সন্দেহ নেই বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষা-ই দিতে হবে বাংলাদেশের পেস বোলার ও স্পিনারদের।

২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। এরপর ভারত চারবার বাংলাদেশ সফরে আসে। কিন্তু বাংলাদেশ এবারই প্রথম টেস্ট খেলতে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশটিতে। যদিও ভারতের মাটিতে গত মার্চে টি-২০ বিশ্বকাপ, ১৯৯০ সালে এশিয়া কাপ, ১৯৯৮ সালে তিন জাতির টুর্নামেন্ট ও ২০০৬ সালে নকআউট বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলেছে টাইগাররা। কিন্তু টেস্ট এই প্রথম। তবে একমাত্র টেস্টটি নিয়ে অনেক দিন ধরেই নাটকীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। বাংলাদেশ চেয়েছিল টেস্টটি যেন কলকাতায় হয়। কিন্তু আবহাওয়ার বিবেচনায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ভেন্যু ঠিক করে হায়দরাবাদ। প্রথমে তারিখ ঠিক করে ৮-১২ ফেব্রুয়ারি। পরে একদিন পেছানো হয়। নতুন সূচিতে একটি দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচও যুক্ত হয়েছে। ৬-৭ ফেব্রুয়ারি সেকেন্দ্রাবাদে ভারতীয় ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলবে বাংলাদেশ। ভারত সিরিজের জন্য ৩১ জানুয়ারি ক্যাম্প শুরু হবে টাইগারদের। টেস্টে মুশফিকুর রহিম খেলতে পারবেন কিনা, এখনো পরিষ্কার নয়। ওয়েলিংটন টেস্টে টিম সাউদির বাউন্সারে আহত হয়েছিলেন মুশফিক। ফলে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে খেলা হয়নি।

দারুণ খেলছে ভারত। তুখোড় ফর্মে দলটির অধিনায়ক বিরাট কোহলি। সর্বশেষ ইংল্যান্ড সিরিজে একটি ডাবল সেঞ্চুরি, একটি সেঞ্চুরিও করেছেন ৫৩ টেস্টে ৪ হাজার ২০৯ রান করা কোহলি। এ ছাড়া চেতেশ্বর পুজারা, লোকেশ রাহুল, পার্থিব প্যাটেল, মুরলি বিজয়, আজিঙ্কা রাহানেরা রয়েছেন দারুণ ফর্মে। এদের বিপক্ষে বোলিং করতে হবে বাংলাদেশের পেসার রাব্বি, তাসকিন, রুবেল, শফিউল ইসলাম, শুভাশিষদের। ফিরতে পারেন ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমানও। ভারতীয় ইনফরম ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে কতটা সাফল্য পাবেন পেসাররা সেটা প্রশ্নবোধক। নিউজিল্যান্ড সফরে দুই টেস্টে ৬ উইকেট পাওয়া রাব্বি অবশ্য ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আলাদা করে চাপ নিতে চাইছেন না, ‘ভারতের মাটিতে ভারত বরাবরই সেরা ক্রিকেট দল। তাদের ব্যাটসম্যানরাও রয়েছেন দারুণ ফর্মে। এমন দলের বিপক্ষে বোলিং করা কঠিন। তাই বলে চাপ নেওয়ার কোনো কারণ নেই। ক্রিকেটের বেসিক কথা হচ্ছে, আপনি যদি নির্দিষ্ট জায়গায় বোলিং করতে পারেন, তাহলে যত ভালো ব্যাটসম্যানই হোন না কেন, সাবলীল ব্যাটিং করতে পারবেন না। আমাদের কাজ হবে নির্দিষ্ট জায়গায় বোলিং করা।’

পেসাররা অনভিজ্ঞ বলেই টাইগারদের বোলিং লাইনে মূল চাপ সামাল দিতে হবে সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলামদের। বিশেষ করে ৪৬ টেস্টে ১৬৫ উইকেট পাওয়া সাকিবের ওপরই চাপ থাকবে বেশি। মিরাজও ধীরগতির উইকেটে ভালো বোলিং করেন, বলে টার্ন পান-সেটা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টে ১৯ উইকেটই তার প্রমাণ। তাইজুলের বলে টার্নের পাশাপাশি ফ্লাইটটাও ভালো। এই তিন স্পিনারকেই মূলত চাপ সামাল দিতে হবে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা আবার স্পিনের বিপক্ষে দারুণ শক্তিশালী। তাই বেশ কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে বাংলাদেশের বোলারদের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর