শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

লড়াইয়ের আশ্বাস মুশফিকের

হায়দরাবাদ টেস্ট

ক্রীড়া প্রতিবেদক

লড়াইয়ের আশ্বাস মুশফিকের

হায়দরাবাদে ঐতিহাসিক টেস্টের আগে অনুশীলনে ব্যাটিংয়ের অপেক্ষায় সাকিব, মুমিনুল ও তামিম —বিসিবি

রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে যখন দুপুরে মুশফিকরা পা রাখেন, তখন কেমন যেন পরিচিত পরিচিত মনে হচ্ছিল মাঠ, গ্যালারি। কারণ আর কিছু নয়, দলের সঙ্গে না আসলেও মুস্তাফিজুর রহমান হায়দরাবাদের আদ্যপান্ত বলে দিয়েছিলেন মুশফিকদের। তাই হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামটি এতটাই পরিচিত টাইগার ক্রিকেটারদের কাছে! এই স্টেডিয়ামটি না হলেও, হায়দরাবাদ আবার বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সোনালি হরফে। ১৯ বছর আগে ১৯৯৮ সালে ‘নিজামের শহর’ হায়দরাবাদে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম জয়ের আস্বাদ নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই হায়দরাবাদ এবার নতুন করে আতিথেয়তা দিচ্ছে মুশফিকদের। এবার বাংলাদেশ খেলবে ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট। ৯ ফেব্রুয়ারি বিরাট কোহলির সঙ্গে টস করতে নামবেন মুশফিক, তখন ছবিটির ঠাঁই হবে ইতিহাসের সোনালি পাতায়। ভাইরাল হয়ে যাবে ছবিটি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। ঐতিহাসিক টেস্ট খেলতে বাংলাদেশ এখন হায়দরাবাদে। পরশু রাতে মুশফিকরা পৌঁছান ইতিহাস বিজরিত শহরটিতে। কাল দুপুরে অনুশীলন করেন ক্রিকেটাররা।

পরশু দুপুর সাড়ে ১২টায় কলকাতায় পা রাখেন মুশফিকরা। ঐতিহাসিক টেস্টে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে দারুণ আগ্রহী ভারতীয় মিডিয়া ছেঁকে ধরেন টাইগার অধিনায়ককে। জানতে চান টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষ দল ভারতের বিপক্ষে কতটা লড়াই করবে বাংলাদেশ? ভারতের মাটিতে খেলা বলে এমনিতেই স্বাগতিকতার সুবিধা পাবেন কোহলিরা। তার ওপর দলটি রয়েছে দারুণ ফর্মে। গত ১৮ টেস্টে হারেনি। বিরাট কোহলি, রবীচন্দন অশ্বিনদের বিপক্ষে লড়াইটা একপেশে হবে না বলেই আশ্বস্ত করেছেন টাইগার অধিনায়ক। স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন মুশফিক, শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করবেন।

ভারতের মাটিতে এর আগেও খেলেছে বাংলাদেশ। গত মার্চ-এপ্রিলে টি-২০ বিশ্বকাপ খেলেছে টাইগাররা। এর আগে ২০০৬ সালে আইসিসি নক আউট বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব, ১৯৯৮ সালে তিন জাতির কোকাকোলা কাপ ও ১৯৯০ সালে এশিয়া কাপ খেলেছিল। নক আউট বিশ্বকাপ ছাড়া প্রতিটি আসরেই প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ভারতকে। কিন্তু এবারের উপলক্ষ একেবারেই ভিন্ন। ১৭ বছর আগে, ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেক বাংলাদেশের। এরপর আরও তিনবার টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে পা রেখেছে ভারত। কিন্তু বাইলেটারাল সিরিজ খেলতে কখনই আমন্ত্রণ জানায়নি বাংলাদেশকে। এবারই প্রথম আতিথিয়েতা দিচ্ছে। তাই টেস্টটি আগ্রহের সর্বোচ্চ পারদ স্পর্শ করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে।

মুশফিকদের ২০১৭ সাল শুরু হয়েছে নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে। ব্ল্যাক ক্যাপসদের বিপক্ষে প্রতিটি ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু টেস্ট সিরিজে লড়াই করেছে হাড্ডাহাড্ডি। বিশেষ করে ওয়েলিংটন টেস্টে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েও হেরে যায়। শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়েই হায়দরাবাদে কোহলিদের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামছেন মুশফিকরা। রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে ঐতিহাসিক টেস্টে ছাড় দিবে না টাইগার অধিনায়ক মুশফিক স্পষ্ট করেই বলেছেন ভারতীয় মিডিয়াকে, ‘আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি, ভারতীয় দলকে এক বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিব না।’ প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ, সেটা নিয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘সিরিজটি অবশ্যই আমাদের জন্য ঐতিহাসিক। ভারতের মাটিতে এই প্রথম টেস্ট খেলব আমরা। আমরা নিজেদের প্রমাণে মুখিয়ে আছি। আমরা প্রমাণ করতে চাই ওয়ানডের মতো টেস্ট ক্রিকেটেও ভালো দল।’

গতকাল অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন সবাই। শুরুতে রানিং করার পর নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করেন মুশফিক, সাকিব, ইমরুলরা। আজ আবার দুপুরে অনুশীলন। ক্রিকেটাররা উঠেছেন ডেকান তাজ হোটেলে। ৫-৬ ফেব্রুয়ারি সেকেন্দ্রাবাদ জিমখানা মাঠে ভারতীয় ‘এ’ দলের বিপক্ষে দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। সফরের একমাত্র টেস্টটি ৯-১৩ ফেব্রুয়ারি। যা হবে বাংলাদেশের ৯৯ নম্বর টেস্ট।

সর্বশেষ খবর