ক্যামেরুনের কথা অনেকে ভুলতে বসেছিলেন। ১৯৯০ বিশ্বকাপে উদ্বোধনী ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের অবাক করে দেয়। ম্যাচ শেষে রজার মিলারে সে কি অদ্ভুত নৃত্য। যা এখনো মনে পড়ে। এরপর বিশ্বকাপে ততটা সুবিধা করতে না পারলেও আফ্রিকান নেশনস কাপে দাপট দেখাচ্ছিল তারা। এই টুর্নামেন্টেও ক্যামেরুন যেন ঝিমিয়ে পড়েছিল। ২০০২ সালের পর শিরোপা জেতাটা স্বপ্নে পরিণত হয়। দুবার অবশ্য ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু মিসরের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ক্যামেরুনকে।
এবার হতাশার বৃত্ত থেকে বের হয়ে এলো। আগের দুই হারের প্রতিশোধ নিয়েছে ক্যামেরুন। গতকাল ফাইনালে মিসরকে ২-১ গোলে পরাজিত করে ১৫ বছর পর আফ্রিকা জয় করল ক্যামেরুন। অবশ্য শুরুটা যেভাবে হয়েছিল তাতে অনেকেই ভেবেছিলেন অদম্য সিংহদের হাতে রানার্স আপেরই ট্রফি উঠবে। না, ক্যামেরুনদের প্রতিজ্ঞা ছিল এবার আর দেশবাসীকে হতাশ করবে না। হয়েছেও তাই ম্যাচে বেশ কটা সুযোগ নষ্ট করার পর কাউন্টার অ্যাটাকে গোল খেয়ে বসে ৯০ বিশ্বকাপ কাঁপানো দেশটি। ২২ মিনিটে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এললিনের গোল এগিয়ে যায় মিসর। এরপর তারা যে গতিময় খেলা শুরু করে তাতে তছনছ হয়ে যায় ক্যামেরুনের রক্ষণভাগ। দুর্ভাগ্য বলতে হয় মিসরের কমপক্ষে তিনটি সহজ গোল হাত ছাড়া করায় প্রথমার্ধে ১ গোলে এগিয়ে থাকে।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ছন্দে ফিরে ক্যামেরুন। সমতা ফেরানোর জন্য একের পর এক চাপ দিতে থাকে। তবে গোলের দেখা মিলছিল না। শেষ পর্যন্ত ৫৯ মিনিটে উৎসবে মেতে উঠে অদম্য সিংহরা। পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে ডি বক্সের ভিতর বল পেয়ে জালে বল পাঠান এন কলু। এরপর লড়াই হয়ে উঠে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। কে এগিয়ে যাবে বলাই যাচ্ছিল না। খেলা যখন ৮০ মিনিট ছাড়িয়ে যায় তখন অনেকে ভেবেছিলেন ম্যাচটি গড়াচ্ছে অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে রীতিমতো ম্যাজিক প্রদর্শন করেন আবু বকর। ৮৮ মিনিটে তার দুর্দান্ত গোল ১৫ বছর পর ক্যামেরুনকে শিরোপার মুখ দেখায়।