বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

আবাহনী-মোহামেডান ড্র

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

আবাহনী-মোহামেডান ড্র

বল দখলের লড়াইয়ে ঢাকা মোহামেডান ও চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলোয়াড়রা —দিদারুল আলম

এক সময় নামের পাশে আবাহনী-মোহামেডান থাকলেই যেন উত্তেজনায় ভরপুর থাকত গ্যালারি। মাঠেও খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের মধ্যে থাকত টান টান উত্তেজনা। এখন এসব সোনালি অতীত হলেও শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে ফের দেখা মিলল দুই চীর প্রতিদ্বন্দ্বীর ফুটবল লড়াই। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অন্তত এক ম্যাচের জন্য হলেও ফিরেছে সেই অতীত। ম্যাচ জুড়েই ছিল টান টান উত্তেজনা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ভরপুর। শেষ পর্যন্ত ম্যাচে কোনো পক্ষই গোল করতে না পারায় অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচ। দিনের অপর ম্যাচে নেপালের মার্সিয়াংদি ক্লাবকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমির সম্ভাবনা জিইয়ে রাখল আফগানিস্তানের শাহীন আসমাই ক্লাব।

 খেলার শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে ঢাকা মোহামেডান। মধ্য মাঠ মোহামেডানের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ফিনিশিংয়ের অভাবে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পাচ্ছিল না। যদিও মোহামেডানকে বঞ্চিত রাখার বড় ভূমিকা পালন করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা।  ৩ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত মোহামেডান। বামপ্রান্ত দিয়ে মধ্য মাঠের খেলোয়াড় মোস্তাফার কাট বেক থেকে বল পেয়ে যান অধিনায়ক সবুজ। তার প্লেসিং শট অসাধারণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন রানা। ২৫ মিনিটে অনেকটা সে াতের বিপরীতে মোহামেডানের রক্ষণ দুর্গে হানা দেয় আবাহনী। মাঝ মাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায় ডি বক্সে ঢুকে পড়েন বিদেশি খেলোয়াড় ওয়ালসন। কিন্তু এবার মোহামেডানের গোলরক্ষক মামুন এগিয়ে এসে রক্ষা করে দলকে। পাল্টা আক্রমণে আবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে মোহামেডানের। ২৭ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে সবুজের লব চলন্ত বলে শট নেন দাউদা। তার ভলি শট কর্নারের বিনিময় রক্ষা করে রানা। ৩০ মিনিটে মোহামেডানের আরেকটা পরিকল্পিত আক্রমণ। ডানপ্রান্ত থেকে মোস্তাফার থ্রু পাস থেকে বক্সের ওপর দাউদার প্লেসিং শট আবারও কর্নারের বিনিময় রক্ষা করেন মামুন। ৬৩ মিনিটে এগিয়ে যাওয়া সুযোগ আসে চট্টগ্রাম আবাহনীর। জাহিদের ক্রস থেকে বল পায় অধিনায়ক মামুন। ডি বক্সের বাইরে থেকে তার নেওয়া জোরালো শট ক্রসবার লেগে গোল বঞ্চিত হয় আবাহনী। এরপর একাধিক পরিকল্পিত আক্রমণ হলেও কোনো দলই কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি।

গ্রুপের অপর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয় আফগানিস্তানের শাহীন আসমাই ও নেপালের মার্সিয়াংদি ক্লাব। এ ম্যাচের শুরু থেকে শৈল্পিক ফুটবল খেলতে থাকে দুদল। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে শাহীন আসমাইর একটি পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে। বামপ্রান্ত থেকে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় ফারদিনের ক্রস থেকে ডি বক্সে বল পেয়ে যান স্ট্রাইকার ফায়েজি। তার নেওয়া শট মানাং মার্সিয়াংদির রক্ষণভাগের খেলোয়াড় কামালের পায়ে লেগে প্রতিহত হয়। পরে আবার সেই বল পেয়ে যান শাহীন অধিনায়ক আমির উদ্দিন। তার নেওয়া শটটি রক্ষণভাগের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। পরের মিনিটেই সফলতা পায় আফগান  দল। সংঘবদ্ধ একটি আক্রমণ থেকে গোল করে দলকে ১-০ এগিয়ে দেন আমির উদ্দিন। মধ্যমাঠের খেলোয়াড় আনোয়ারের ক্রস থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে প্লেসিং শট করে দলকে উল্লাসের উপলক্ষ এনে দেন অধিনায়ক। পাল্টা আক্রমণ থেকেই ৪০তম মিনিটে সমতায় ফিরতে পারত মানাং মার্সিয়াংদি। কিন্তু ভাগ্য অনুকূলে না থাকায় ফিরতে পারেনি নেপালের এ দল। সতীর্থের উড়ন্ত শটে বল পেয়ে হেড করেন নেপাল অধিনায়ক অনিল। তার নেওয়া শটটি ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। ৬৫ মিনিটে শাহীন আসমাইর অধিনায়ক আমির উদ্দিনের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আফগানরা। মাঝ মাঠ থেকে থ্রু পাসে বল পেয়ে দ্রুতগতিতে ঢুকে পড়েন মানাং রক্ষণ দুর্গে। ডি বক্স থেকে নেওয়া জোরালো শট জালে জড়ালে ব্যবধান ২-০ করে শাহীন আসমাই। ৭২ মিনিটে ব্যবধান কমায় মানাং। সজলের নেওয়া কর্নার কিক থেকে বল পেয়ে হেড করে ব্যবধান ২-১ করেন বিমল। পরের মিনিটে আসমাইর একটি পাল্টা আক্রমণ থেকে ডানপ্রান্ত দিয়ে হাকিমীর বাড়ানো বলে ছোট বক্সে বল হাতে লাগে মানাংয়ের খেলোয়াড় আদমার। ফলে পেনাল্টি নির্দেশ দেন রেফারি। পেনাল্টি শট থেকে নিজের হ্যাটট্রিক এবং দলের পক্ষে তৃতীয় গোল করেন আসমাই অধিনায়ক আমির উদ্দিন। শেষ পর্যন্ত ৩-১ ব্যবধানে শেষ হয় ম্যাচ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর