বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বৃষ্টিতে ভেস্তে গেল টাইগারদের অনুশীলন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বৃষ্টিতে ভেস্তে গেল টাইগারদের অনুশীলন

কলম্বো বিমানবন্দরে পৌঁছার পর ফুল দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের বরণ করে নেয় শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড —সৌজন্য

বাংলাদেশে এখন বসন্ত কাল। পাতা ঝড়ছে। অথচ কলম্বোয় এখন বর্ষাকাল। হুটহাট বৃষ্টি ঝরছে। গতকাল মুষলধারায় ঝরেছে। ফলে অনুশীলনই করতে পারেননি মুশফিকরা। মাঠে নেমে ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং না করলেও জিমন্যাশিয়ামে সময় পার করেছে টাইগাররা। ৭ মার্চ গলে প্রথম টেস্ট খেলতে নামার আগে ২-৩ মার্চ মরুতোয়ায় দুই দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। সোমবার দুপুরে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলতে ঢাকা ছাড়েন মুশফিকরা। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় কলম্বোয় পা রাখেন টাইগাররা। বরাবরের মতো উঠেন ভারত মহাসাগরের তীরঘেঁষা হোটেল তাজ সমুদ্রে। সন্ধ্যায় কলম্বো পৌঁছায় ক্রিকেটারদের কোনো কাজ ছিল না। তাই সন্ধ্যাটা সমুদ্রপাড়েই কাটিয়েছেন। সেখানে সার্কাস দেখে মনোরঞ্জন করেছেন সবাই। সার্কাস দেখার ছবিও আপলোড করেছেন ফেসবুকে। রাতটা বিশ্রামে কাটিয়ে গতকাল দুপুরে অনুশীলন করার পরিকল্পনা ছিল টাইগারদের। অনুশীলন করতে বেরও হয়েছিলেন। কিন্তু মাঠে নামা হয়নি বৃষ্টির জন্য। সুতরাং শ্রীলঙ্কা সফরের প্রথম অনুশীলনটাই ভেস্তে গেছে বৃষ্টিতে। কলম্বো থেকে টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘দলের সব ক্রিকেটার সুস্থ আছেন। বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন। গতকাল অনুশীলন করার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে হতে পারেনি।’

অনুশীলন করতে না পারলেও জিম করেছেন মুশফিকরা। সন্ধ্যায় স্থানীয় মিডিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। সেখানে টাইগার অধিনায়ক পজিটিভ ক্রিকেট খেলার কথা বলেছেন, ‘আমরা দুই বছর ধরে ভালো ক্রিকেট খেলছি। এটা সত্যি ওয়ানডের মতো হয়তো টেস্ট ক্রিকেটে তেমন ধারাবাহিক নই। কিন্তু এটাও সত্যি, আমরা এখন টেস্টেও ভালো খেলছি। আমরা এখানে এসেছি ভালো ক্রিকেট খেলার প্রত্যাশায়। ক্রিকেটাররা সবাই মুখিয়ে আছেন ভালো ক্রিকেট খেলতে।’ ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফর করেছিল। গলে ড্র করলেও হেরেছিল কলম্বোয়। গলে বাংলাদেশ ৬৩৮ রান করেছিল তিন সেঞ্চুরিতে। ওই টেস্টেই বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের ২০০, মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৯০ ও নাসির হোসেনের ১০০ রানের ইনিংস সহায়তা করেছিল টেস্ট ড্র করতে। কলম্বোয় টাইগাররা হেরেছিল রঙ্গনা হেরাথের ঘূর্ণি জাদুতে। হেরাথ উইকেট নিয়েছিলেন ১২টি। সেই হেরাথ এবার শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়ক। ইনজুরির জন্য নিয়মিত অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলি ম্যাথিউস খেলছেন না সিরিজে।

এবার বাংলাদেশ গেছে অনভিজ্ঞ পেস স্কোয়াড নিয়ে। পাঁচ পেসারের মধ্যে রুবেল হেসেনের শুধুমাত্র রয়েছে শ্রীলঙ্কায় খেলার অভিজ্ঞতা। রুবেল টেস্ট খেলেছেন ২৪টি। সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেসার। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও শুভাশীষ রায় এই প্রথম টেস্ট খেলতে গেছেন দ্বীপরাষ্ট্রে। এরই মধ্যে মুস্তাফিজ টেস্ট খেলেছেন মাত্র ২টি। রাব্বি ৫টি, তাসকিন ৩টি ও শুভাশীষ একটি। সব মিলিয়ে পাঁচ পেসারের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা মোট ৩৫টি। স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের টেস্ট ৫টি, বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের ১২ এবং সাকিব টেস্ট খেলেছেন ৪৫টি। এই হলো স্পিনারদের অভিজ্ঞতা। এমন অনভিজ্ঞ দল নিয়ে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার ২০ উইকেট নিয়ে জেতার স্বপ্ন দেখা একটু বেশিই বাড়াবাড়ি। তবে ড্র করাই যায়। শুধু ভালো ব্যাটিং করতে হবে ব্যাটসম্যানদের। সেই দায়িত্বটা পালন করতে হবে তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিক, সাকিব, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমানদের। তাহলেই ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজটি উদযাপনের উপলক্ষ পাওয়া যাবে।    

সর্বশেষ খবর