শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
প্রতিপক্ষ মার্জিয়া ক্লাব

শুরুতেই বড় চ্যালেঞ্জ আবাহনীর

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শুরুতেই বড় চ্যালেঞ্জ আবাহনীর

আবাহনী অধিনায়ক মামুন মিয়া, মার্জিয়ার অধিনায়ক আসাদুল্লাহ

৮০ কিংবা ৯০ দশক হলেও নিশ্চিত করে বলা যেত ম্যাচের ফল। ক্লাব কিংবা জাতীয় দল মালদ্বীপের বিপক্ষে লড়াই মানে বাংলাদেশের বড় ব্যবধানে জয়। কালের বিবর্তনে অনেক কিছুই ওলট-পালট হয়েছে। যে মালদ্বীপ এক সময়ে দাঁড়াতেই পারত না। তাদের এখন বাংলাদেশকে হারানোটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বা কিছুদিন আগে প্রস্তুতি ম্যাচে মামুনুলদের নিয়ে ছেলেখেলা খেলেছে মালদ্বীপ। ক্লাব ফুটবলেও একই অবস্থা। সদ্য সমাপ্ত শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস। অথচ এই দলটিই এবার দ্বিতীয় বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম বিভাগে উঠেছে।

দ্বিতীয় বিভাগের চ্যাম্পিয়ন দল ট্রফি জিতেছে। অথচ বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী শেখ কামাল টুর্নামেন্টে গ্রুপপর্ব খেলেই বিদায়। টিসি স্পোর্টস টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করেছিল ঢাকা আবাহনীকে হারিয়ে। আজ আবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এএফসি কাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচে ঢাকা আবাহনী লড়বে মালদ্বীপ চ্যাম্পিয়ন মার্জিয়া স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে। ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। স্টার স্পোর্টসে ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচারের কথা।

আবাহনী বাংলাদেশ আর মার্জিয়া মালদ্বীপ চ্যাম্পিয়ন। কে জিতবে আজকের ম্যাচে? আশি দশক হলে ফুটবলপ্রেমীরা অঙ্ক কষতেও মালদ্বীপের দল কটা গোল খাবে। কোনো গল্প নয়, সত্যিকারের এক ঘটনা বলছি। ১৯৮৯ সালে মালদ্বীপ চ্যাম্পিয়ন রেডিয়ান্ট ক্লাব ঢাকায় এশিয়ান ক্লাব কাপে বাছাইপর্ব খেলতে আসে। সেই ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান। দুই দল মাঠে নামার আগে মালদ্বীপের টিম ম্যানেজার মোহামেডান কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ রাখেন গোল যেন বেশি না হয়। অতিথি দল বলে হয়তো সেই অনুরোধ ফেলতে পারেনি মোহামেডান। কিন্তু গুনে গুনে গোল দিয়েছিল ৮টি। এখনতো তা স্বপ্নই মনে হবে। গোল উৎসব তো দূরের কথা মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পাওয়াটা বাংলাদেশের কাছে স্বপ্নও বললেও ভুল হবে না।

আবাহনী দলের ম্যানেজার সত্যজিত দাশ রুপু দৃঢ় কণ্ঠেই বলেছেন এএফসি কাপে তাদের লক্ষ্য পরবর্তী রাউন্ডে ওঠা। দলের অধিনায়ক কাল বললেন জয় দিয়ে আমরা আসর শুরু করতে চাই। ঘরের মাঠে সবকিছুই আবাহনীর অনুকূলে থাকবে। কিন্তু মার্জিয়াকে কি হারানো সম্ভব? এটা ঠিক মার্জিয়া ইউরোপ বা এশিয়ার কোনো সেরা দল না যে তাদের হারানো সম্ভব নয়। কিন্তু মানের কথা বললে তো ভয়ই লাগে। ফুটবলে মালদ্বীপ যতটা এগিয়েছে তার চেয়ে অনেক অনেক পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। তাদের বিপক্ষে লড়াই দেখলে মনে হয় বাংলাদেশ যেন বিশ্বের সেরা কোনো দলের সঙ্গে লড়ছে।

মার্জিয়াকে মালদ্বীপের জাতীয় দল বললেও ভুল হবে না। কেননা আট জন জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছাড়াও তিন জন উঁচুমানের খেলোয়াড় রয়েছে। অবশ্য আবাহনীও যথেষ্ট শক্তিশালী। লি টাক ও সানডের মতো নির্ভরযোগ্য বিদেশি না থাকলেও সামাদ জোনাথন ও ডার্লিংটনকে নিয়ে আবাহনী তা পুষিয়ে নিয়েছে। সমস্যা হচ্ছে লোকালদের ঘিরে। টুর্নামেন্টের জন্য আবাহনী যাদের নাম রেজিস্ট্রেশন করেছে তাদের অনেকে আবার নতুন মৌসুমে আবাহনী ছেড়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে আরিফুল ইসলাম, তপু বর্মণ, জুয়েল রানা, হেমন্ত বিশ্বাস ও শাকিল প্রথম দিকে আবাহনীর অনুশীলনে যোগ না দিলেও এএফসি কাপ খেলতে আবাহনীতে আসেন। কিন্তু তাদের নাকি ক্লাব না করে দিয়েছে। এখন তারা যদি মাঠে না নামেন তাহলে আবাহনী চাপে থাকবে কোনো সন্দেহ নেই। তবু আবাহনী আজ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। সত্যি বলতে কি ফুটবলে যে রুগ্ন দশা তাতে মালদ্বীপ চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে আবাহনী শুভ সূচনা করলে ফুটবলে কিছুটা হলেও স্বস্তি নেমে আসবে। প্রতিপক্ষ মার্জিয়াও আবাহনীকে ফেবারিট বলেই মাঠে নামছে।

পরবর্তী রাউন্ডে উঠতে হলে আবাহনীকে বড় বাধা অতিক্রম করতে হবে। কেননা ‘ই’ গ্রুপে দলগুলো হোম আর অ্যাওয়ে ভিত্তিতে দুটো করে ম্যাচ খেলবে। মার্জিয়া ছাড়াও আবাহনীর গ্রুপে রয়েছে বেঙ্গালুরু জেএস ডব্লিউ ও কলকাতার মোহনবাগান। দেশের ফুটবলে সবচেয়ে সফল দল ঢাকা আবাহনী। কিন্তু আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারছে না। দেখা যাক এএফসি কাপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা কত দূর যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর