শিরোনাম
সোমবার, ২০ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাঘের গর্জন শুনল বিশ্ব

মেজবাহ্-উল-হক

বাঘের গর্জন শুনল বিশ্ব

শততম ওয়ানডে জয়ের পর এবার শততম টেস্টেও জিতল বাংলাদেশ। ২০০৪ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডেতে ভারতকে হারিয়ে মাইলফলক স্পর্শ করেছিল টাইগাররা। এবার শ্রীলঙ্কাকে তাদের নিজেদের মাটিতে টেস্টে ৪ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন মুশফিকরা। শুধু শ্রীলঙ্কা নয়, বাঘের গর্জন শুনল বিশ্ব। টেস্টে বাংলাদেশের নবম জয় এটি। তবে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে প্রথম। চতুর্থ দিনের খেলা শেষেই জয়ের পূর্বাভাস পেয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু গতকাল সকালে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল শ্রীলঙ্কার নবম উইকেট জুটি। দিলরুয়ান পেরেরা ও সুরঙ্গা লাকমল মিলে ৮০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বিপাকে ফেলে দিয়েছিলেন। শেষ দিনে মুশফিকদের টার্গেট দাঁড়ায় ১৯২ রান। ব্যাটিংয়ে নেমেই মাত্র ২২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে যেন খাদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমানের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের বন্দরে পৌঁছে যান মুশফিকরা। তামিম খেলেছেন ৮২ রানের অসাধারণ ইনিংস, সাব্বিরের ব্যাট থেকে এসেছে ৪১ রান।  তামিমের ইনিংসে টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশি কোনো ওপেনারের সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড। তবে সব মিলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০০৯ সালে গ্রানাডা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চতুর্থ ইনিংসে অপরাজিত ৯৬ রান করেছিলেন সাকিব। অসাধারণ ইনিংসের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তামিম। শ্রীলঙ্কা সফরের প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের পর চতুর্থ দল হিসেবে শততম টেস্টে জয়ের রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে তামিম বলেন, ‘আমাদের এই জয়টা কিন্তু শুরু হয়েছিল গল টেস্টে হারার পরই। কোচের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছি। তারপরেও আমরা উজ্জীবিত হয়েছি। প্রথম ইনিংসে আমাদের বোলাররা অসাধারণ বোলিং করেছেন। তারপরই খেলার গতি বদলে গেছে। তবে আজ (কাল) তখন রান তাড়া করতে নামি, লক্ষ্য ছিল কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়ে খেলব। সাব্বিরের সঙ্গে আলোচনা করে সেভাবেই ব্যাটিং করেছি। যদিও প্রথম দিকে কিছু চাপ ছিল। তবে জয়ের ব্যাপারে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম।’

শততম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন। দুই ইনিংস মিলে বল হাতেও নিয়েছেন ৬ উইকেট। তারপরেও ম্যাচ সেরা হতে পারেননি সাকিব। তবে সিরিজ সেরা হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সাকিব বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট জয়ের এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ১০০তম টেস্ট জিতেছি। এখন আমরা শুধু ঘরের মাঠে নয়, বিদেশের মাটিতেও জিততে পারি। সত্যি এটা একটা অন্যরকম মুহূর্ত।’

এই টেস্টে সবচেয়ে বেশি খুশি হওয়ার কথা মুশফিকের। নেতৃত্ব দিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়ার পাশাপাশি নিজে ব্যাট হাতে মাঠে থেকে জয় নিশ্চিত করেছেন। প্রতিক্রিয়ায় টাইগার দলপতি বলেন, ‘অবশ্যই খুবই ভালো লাগছে। এই ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও অসাধারণ বোলিং করেছেন মুস্তাফিজ ও সাকিব। এই ম্যাচে দল হিসেবে আমরা পারফর্ম করেছি। চাপের মধ্যে থেকেও ছেলেরা অসাধারণ খেলেছে। সত্যিই আমি ভীষণ উপভোগ করেছি ম্যাচটি।’

দারুণ খুশি কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহেও। বাংলাদেশের শততম জয়ে বড় অবদান যে তারই। প্রতিক্রিয়ায় হাতুরা বলেন, ‘এই জয়টি ছেলেদের প্রাপ্তই ছিল। তারা অনেক অনেক বেশি পরিশ্রম করেছে। তাদের এই অর্জনে আমি খুবই খুশি। অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন তামিম। দলের একজন সিনিয়র ক্রিকেটারের যে ভূমিকা হওয়া উচিত তার সবই যথাযথ পালন করছেন তামিম। এই ম্যাচে ছেলেরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। তারপরেও তো চাপ মাথায় নিয়ে সর্বোচ্চ পযায়ে অসাধারণ পারফর্ম করেছে। ছেলেদের পারফরম্যান্সে আমি মুগ্ধ।’ শততম টেস্ট জয়ে মুশফিকদের ১ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর