শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিদায়ী ম্যাচে নায়ক পোডলস্কি

ক্রীড়া ডেস্ক

বিদায়ী ম্যাচে নায়ক পোডলস্কি

গোলের পর পোডলস্কিকে ঘিরে উল্লাস

অধিকাংশ বিদায়ই কান্না মেশানো। আনন্দের পরিমাণ খুবই কম। জার্মান ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য লুকাস পোডলস্কির বিদায়টা হয়েছে অসাধারণ আনন্দমুখর পরিবেশে। এরচেয়ে ভালো বিদায়, এরচেয়ে ভালো উদযাপন শুধু কল্পনাতেই সম্ভব। এক যুগের (১৩ বছর) বেশি ধরে জার্মান ফুটবলের অন্যতম সফল যোদ্ধা পোডলস্কি বিদায় জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলকে। মাত্র ৩১ বছর বয়সে বিদায় জানিয়েছেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক প্রীতিম্যাচে। প্রীতিম্যাচে যে এক গোলে জিতেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা, সেটাও করেছেন পোডলস্কি। এরচেয়ে ভালো আর কি হতে পারে? ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার, গার্ড মুলার, কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগা কিংবা লুথার ম্যাথিউসদের মতো কিংবদন্তির ফুটবলার হয়তো নন পোডলস্কি। কিন্তু কমও নন। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যের বিদায়টা তাই রূপকথার মতোই হলো!

জার্মানির হয়ে তিন তিনটি বিশ্বকাপ ও ইউরো খেলেছেন পোডলস্কি। আশ্চর্য হলেও সত্যি কোনো আসরেই তিনি সেমিফাইনালের আগে বিদায় নেননি। জার্মানি যে দুই যুগ পর ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ জয় করে, তার অন্যতম কারিগরও পোডলস্কি। ১৯৮৬ সালে এর আগে জার্মানি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ম্যাথিউসের নেতৃত্বে। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলার মতো বয়স ছিল পোডলস্কির। কিন্তু ঘরোয়া ফুটবলে বেশি সময় দিতেই সরে দাঁড়ান জাতীয় দল থেকে। আর প্রাপ্তির কোনো কিছুই কম ছিল না। পরশু রাতে ডর্টমুন্ডে একদল নবাগত নিয়ে খেলতে নামে জার্মানি। প্রতিপক্ষ অভিজ্ঞ ইংল্যান্ড। ইংলিশদের বিপক্ষে তার বিদায়ী ম্যাচটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সবকিছুই করে রেখেছিল জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। অধিনায়কত্বের আর্ম ব্যাণ্ডটা পরিয়ে দেওয়া হয় পোডলস্কির হাতে। অধিনায়ক হিসেবে দারুণ নেতৃত্ব দিয়েছেন দলকে। ম্যাচের ব্যবধানসূচক একমাত্র গোলটিও করেছেন তিনি ৬৯ মিনিটে। ওই একটি গোলই ম্যাচের নিয়ামক ছিল। বিদায়ী ম্যাচের জয়ের নায়ক হওয়ায় যারপরনাই উচ্ছ্বসিত পোডলস্কি বিষয়টিকে সিনেমার সঙ্গে তুলনা করেছেন, ‘ম্যাচে যা হলো, সেটা আমার মনে হচ্ছে একটি সিনেমা! ম্যাচটি আমরা জিতেছি। আর জয়ের গোলটিও আমারই করা। এরচেয়ে ভালো আর কি হতে পারে।’ এক গোলে জিতলেও ম্যাচটিতে তুলনামূলক ভালো খেলেছে ইংল্যান্ড। ইংলিশ স্ট্রাইকার অ্যাডম লালানার শট জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নুইয়্যায়ের পরিবর্তে খেলতে নামা মার্ক টার স্টেগেনকে ফাঁকি দিলেও জালে প্রবেশ করতে পারেনি বারপোষ্টে লাগায়। মাত্র ৩১ বছরেই বিদায় জানান জাতীয় দলকে। এরইমধ্যে তিনি খেলেছেন ১৩০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তিনটি বিশ্বকাপ ও তিনটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। সাফল্য ইউরো ও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। বিদায়ী ম্যাচে গোল করেছেন। ক্যারিয়ারেও তার গোলসংখ্যা কিন্তু হিংসে করার মতোই। ৪৯টি। হাফসেঞ্চুরি হলে হয়তো রূপকথা পুরোপুরি স্বার্থক হতো। তারপরও বিশ্বকাপ ও ইউরোজয়ী দলের সদস্য লুকাস পোডলস্কির সাফল্যের হার কিন্তু কম নয়।

সর্বশেষ খবর