শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

অভিজ্ঞতায় এগিয়ে মাশরাফিরা

আসিফ ইকবাল

অভিজ্ঞতায় এগিয়ে মাশরাফিরা

ক্রিকেটে সাফল্য পেতে টেকনিক না টেম্পারমেন্ট—কোনটা জরুরি? গুণীজনের নানামত। কারও বাজি টেকনিক। আবার কারও বাজি টেম্পারমেন্টের ওপর। তবে একটি বিষয়ে সবাই একমত—সাফল্য পেতে অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি খেলতে নামবেন মাশরাফি বিন মর্তুজারা। প্রথম দুই ওয়ানডে ডাম্বুলার রানগিরি স্টেডিয়ামে। শেষটি কলম্বোয়। কলম্বোর পি সারা ওভাল স্টেডিয়ামে নিজেদের শততম টেস্টে ঐতিহাসিক জয়ের পর আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় অবস্থান করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে স্বাভাবিকভাবেই ফেবারিট হিসেবে নামছে টাইগাররা। শুধুই কি শততম টেস্টে ঐতিহাসিক জয়ের জন্য ফেবারিট? অভিজ্ঞতায় কিন্তু মাশরাফিরা বেশ এগিয়ে স্বাগতিকদের চেয়ে। ওয়ানডে সিরিজের জন্য বাংলাদেশ স্কোয়াডের ১৭ ক্রিকেটারের ওয়ানডে ম্যাচের যোগফল ১০৩১। বিপরীতে লঙ্কান স্কোয়াডের ওয়ানডে ম্যাচ ৬২৩টি। টাইগার ক্রিকেটারদের মোট রান ২২০২৫ এবং উইকেট ৬৭১টি। অপরদিকে স্বাগতিকদের রান ১২৮৬১ এবং উইকেট ২৭৩টি। ম্যাচ, রান এবং উইকেট মিলিয়ে পার্থক্য যোজন যোজন।

এই প্রথম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফেবারিটের তকমাটা গায়ে সেঁটে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। যদিও পরিসংখ্যান বলছে টাইগারদের চেয়ে বেশ এগিয়ে লঙ্কানরা। এই ম্যাচের আগে দুই দল ওয়ানডে খেলেছে ৩৮টি। বাংলাদেশের জয় ৪টি। ৩৩ জয় শ্রীলঙ্কার। একটি পরিত্যক্ত। শ্রীলঙ্কার মাটিতে ১৬ ম্যাচে টাইগারদের জয় মাত্র একটি। তাও ২০১৩ সালে পাল্লেকেলেতে ডিএল মেথড ম্যাচে তামিম ইকবালের সেঞ্চুরিতে। ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে দুই দলের পরিসংখ্যান এমনটাই বলছে। তারপরও ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে থাকা টাইগাররা আজ আত্মবিশ্বাসী এবং ফেবারিট। মাঠে নামার আগে অধিনায়ক মাশরাফি নিজেদের ফেবারিটই বললেন, ‘ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কা শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। তারপরও আমরা আত্মবিশ্বাসী সিরিজ নিয়ে। আমার বিশ্বাস নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে না জেতার কোনো কারণ নেই।’

সামর্থ্যের প্রয়োগ কিংবা ভাগ্যের সহায়তা যাই লাগুক না কেন, অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেট দল কোনো সন্দেহ নেই। দেড়শর উপরে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্রিকেটারের সংখ্যা চারজন। অধিনায়ক মাশরাফি ১৬৯ ওয়ানডেতে রান করেছেন ১৫৪০ এবং উইকেট ২১৯টি। সহঅধিনায়ক সাকিব আল হাসান ১৬৬ ম্যাচে রান করেছেন ৪৬৫০ এবং উইকেট ২২০টি। টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকের ওয়ানডে সংখ্যা ১৬৫ এবং রান ৪১১৮। তামিম ইকবাল ৫১২০ রান করেছেন ১৬২ ম্যাচে। শয়ের উপর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদেরও। ১৩৪ ম্যাচে রান ২৮৫৮ এবং উইকেট ৭০টি। পেস বোলারদের মধ্যে মাশরাফির পরে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলেছেন রুবেল হোসেন ৬৯টি। উইকেট ৮৮টি। এ ছাড়া দলে আছেন ইমরুল কায়েশ ৬৫, সাব্বির রহমান ৩২, সৌম্য সরকার ২০, তাসকিন আহমেদ ২৩, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৮, মুস্তাফিজুর রহমান ১১, শুভাগত হোম ৪, নুরুল হাসান সোহান ২ ও শুভাশিষ রায় ১। অভিষেকের অপেক্ষায় মেহেদি হাসান মিরাজ ও সানজামুল ইসলাম। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের শয়ের উপর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা তিন ক্রিকেটারের। উপল থারাঙ্গা ১৯৮ ম্যাচে ৫৮১০ রান। দুই দল মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে ও রান বেশি থারাঙ্গার। দিনেশ চান্ডিমালের ১২২ ম্যাচে রান ৩০৯৫। থিসারা পেরেরা ম্যাচ খেলেছেন ১১৪টি। ১২১৩ রানের পাশাপাশি উইকেট ১২৭টি। এ ছাড়া সুরঙ্গা লাকমলের ম্যাচ ৫৮টি। স্বাগতিক বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট থিসারা পেরেরার ১২৭টি। এরপর লাকমলের ৮০টি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি উইকেট সাকিবের ২২০ এবং মাশরাফির ২১৯টি। এরপর রুবেলের ৮৮ এবং রিয়াদের ৭০টি।

মোট ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতায় এগিয়ে বাংলাদেশ। শততম টেস্টে ঐতিহাসিক জয়ের পর দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা অধীর অপেক্ষায় ওয়ানডে সিরিজ জয়ের। এখন মাঠে মাশরাফি বাহিনী অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কতটা করতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়।

সর্বশেষ খবর