সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

দুই বন্ধুর বীরত্ব

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দুই বন্ধুর বীরত্ব

হাস্যোজ্জ্বল সাকিব ও তামিম

প্রথম ওয়ানডের একাদশ সাজাতে ছোটখাটো একটি ঝড় বয়ে গেছে টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর। কাকে রেখে কাকে খেলাবেন, এ নিয়ে বিস্তর সময় পার করেছেন চন্ডিকা হাতুরাসিংহে, মাশরাফি বিন মর্তুজা, খালেদ মাহমুদ সুজনরা। তিন মস্তিষ্ক অবশ্য আস্থা রেখেছেন সেরা পারফরমারদের ওপর। তাই রঙিন পোশাকে অভিষেক হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের। যদিও দলে ছিল শুভাগত হোমের মতো কার্যকরী ক্রিকেটার। প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে দল হলেও টাইগারদের মূল ভরসায় কিন্তু সিনিয়র ক্রিকেটাররাই। মাশরাফি, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরাই এখন ভরসা। এদের ব্যাট-বলের উপরই পুরোপুরি নির্ভরশীল টাইগারদের সাফল্য। তবে মূল ভরসা কিন্তু দুই বন্ধু সাকিব ও তামিম। শনিবার অসাধারণ জয়ের ম্যাচে দুই বন্ধুর বীরত্ব ফের সেটাই প্রমাণ করল। ডাম্বুলার রানগিরি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ যে ৩২৪ রান করেছে, তার সিংহভাগই এসেছে দুই সিনিয়র ব্যাটসম্যান তামিম ও সাকিবের ব্যাট থেকে। ভালো ব্যাটিং করেছেন সাব্বির রহমান রুম্মনও। কিন্তু তামিমের সেঞ্চুরি ও সাকিবের হাফ সেঞ্চুরিই দলকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের স্কোর গড়তে সহায়তা করেছে। শেষ দিকে আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ৭ বলের ১৩ রানের ইনিংসটি দলকে এগিয়ে দিয়েছে বেশ। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ৯ বলে ২৪ রানে ইনিংসটি কম ছিল না। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নেমে সাব্বির বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৫৬ বলে ৯৬.৪২ স্ট্রাইক রেটে খেলেন ৫৪ রানের ইনিংস। সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন তামিম। পিছিয়ে ছিলেন না সাকিবও। কলম্বোয় ১০০তম টেস্ট জয়ে অবদান রাখেন দুই সিনিয়র। প্রথম ইনিংসে সাকিব খেলেছিলেন ১১৬ রানের নান্দনিক ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১৫ রান। দুই ইনিংসে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। সাকিবের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের পরও টেস্ট সেরা হয়েছিলেন তামিম। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮২ রানের ইনিংসটিই তাকে ম্যাচসেরা বানিয়ে দেয়। দেশের শততম টেস্টে ঐতিহাসিক জয়ের পর পরিবারের সঙ্গে জন্মদিন পালন করতে তামিম উড়ে যান মুম্বাইয়ে। সেখান থেকে ফিরেই আবার জ্বলে ওঠেন ব্যাট হাতে। রানগিরি স্টেডিয়ামে ক্যারিয়ারের ১৬৩ নম্বর ওয়ানডেতে খেলেন ১২৭ রানের নান্দনিক ইনিংস। ১৪২ বলের ইনিংসটিতে ছিল ১৫টি চার ও একটি ছক্কা। ক্যারিয়ারে যা অষ্টম সেঞ্চুরি। বাঁ হাতি ওপেনারের শুরুটা ছিল ধীরগতির। প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন ৭৬ বলে ৫ চারে। পরের হাফসেঞ্চুরি আগ্রাসী মেজাজে মাত্র ৫১ বলে। চলতি বছরে এটাই প্রথম সেঞ্চুরি তামিমের। অবশ্য এটা টাইগারদেরও প্রথম ওয়ানডে। তামিমের সর্বশেষ সেঞ্চুরি ২০১৬ সালে ঢাকায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ওই সেঞ্চুরিই পেছনে ফেলেন সাকিবকে। সাকিবের সেঞ্চুরি ৬টি। শনিবার একটি মাইলফলকও গড়েন তামিম। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান। বর্তমানে ওয়ানডে, টেস্ট ও টি-২০-তিন ফরম্যাটে তার রান ১০১২৬। ডাম্বুলার ম্যাচের আগে ওয়ানডে, টেস্ট ও টি-২০ মিলে তার রান ছিল ৯৯৯৯। সুরঙ্গা লাকমলের প্রথম ওভারে পৌঁছে যান মাইলফলকে। ১৬৩ ওয়ানডেতে রান ৫২৪৭। ৪৯ টেস্টে রান ৩৯.৫৩ গড়ে ৩৬৭৭ রান এবং ৫৫ টি-২০ ম্যাচে রান ১২০২। জন্মদিনের পরের দিন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব খেলেন ৭২ রানের ইনিংস। ৭১ বলে ৪ চার ও এক ছক্কার ইনিংসটি ১৬৭ ম্যাচ ক্যারিয়ারে ৩৩তম হাফসেঞ্চুরি। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাকিবের এটা তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। এর আগে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৯ ও মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সব মিলিয়ে সাকিবের রান ১৬৭ ওয়ানডেতে ৪৭২২। বল হাতেও ছিলেন সফল। উইকেট নেন একটি। আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম অবশ্য ব্যর্থ হন। কিন্তু ইদানীং দারুণ সফল মুশফিক। আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার মাশরাফি ব্যাটিংয়ে না নামলেও শুরুতেই আঘাত হানেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর