শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
ফুটবলে দলবদল শুরু আজ

তবু পারিশ্রমিক বেড়েছে

দেশের ফুটবলের মান নিচের দিকে নেমেই চলেছে। জাতীয় দল ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। এরপরও ঘরোয়া আসরে ফুটবলারদের পারিশ্রমিক কমছে না। বরং এবারও বাড়ছে।

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তবু পারিশ্রমিক বেড়েছে

বাফুফে শিডিউল দিয়েছে আর তা ঠিক সময়ে রক্ষা হয়েছে এমন নজির কমই পাওয়া যাবে। অতীতের কথা বাদই দিলাম। এবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপই বড় উদাহরণ হতে পারে। প্রথমে ঘোষণা এলো মার্চে এই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট মাঠে গড়াবে। কর্মকর্তারা যেভাবে কথা বলছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল তারিখ আর পেছাবে না। কিন্তু পারল না। এপ্রিলে দেওয়া হলো নতুন শিডিউল। দুই সপ্তাহ যেতে না যেতে তাও স্থগিত হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার নির্বাহী কমিটির জরুরি সভা ডেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ হবে। সংশয় রয়েছে, বাফুফে তাও রক্ষা করতে পারবে কিনা? কেননা একই সময়ে আবার বাংলাদেশে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়ার কথা। তাহলে ডিসেম্বরে দুটো বড় টুর্নামেন্ট হয় কীভাবে? প্রতিশ্রুতি দেয় অনেক কিছুই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাফুফে তা রক্ষা করতে পারে না। এবার অবশ্য একটা শিডিউলে ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঘোষণা অনুযায়ী বাফুফে সঠিক সময়ে আজ থেকেই আসন্ন ফুটবল মৌসুমে দলবদল শুরু করতে যাচ্ছে। রাত পর্যন্ত যখন নতুন কোনো ঘোষণা আসেনি তাতে নিশ্চিত করে বলা যায়, দলবদলের শিডিউলে পরিবর্তন আসছে না। আগে একাধিকবার দলবদলের পরিবর্তন হয়েছে। এবার সঠিক সময়ে তা করতে পারছে বলে বাফুফে বা লিগ কমিটি ধন্যবাদ পেতেই পারে। আগে দলবদল হতো তিন দিন। ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে কি যে উত্তেজনা থাকত তা বর্তমান প্রজন্মে ক্রীড়ামোদীদের বিশ্বাস করানোটাই মুশকিল হবে। বিকালে দলবদল শুরু হলেও দুপুর থেকেই হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমী ভিড় জমাত। মোহামেডান আর আবাহনীর ফুটবলাররা যেদিন দলবদল করতেন সেদিন যেন স্টেডিয়াম এলাকায় যুদ্ধ বেধে যেত।

পেশাদার লিগ শুরুর পর প্রথমদিকে দলবদল হতো ১৫ দিনের। এখন হয় এক মাসের। নিরুত্তাপভাবে চলে ফুটবলারদের ঘরবদলের পালা। তবে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র কিছুটা ব্যতিক্রম করছে। গত দুই বছরে ঘোড়ার গাড়ি চড়ে আর ব্যান্ড বাজিয়ে খেলোয়াড়রা দলবদল করছে। যাক দলবদল আজ শুরু হলেও অধিকাংশ ক্লাব অনেক আগেই ঘর গুছিয়ে নিয়েছে।

শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র, লে. শেখ জামাল ধানমন্ডি ছাড়াও বেশকটি ক্লাব মাঠে নামার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে। নবাগত সাইফ স্পোর্টিং তো দেশের বাইরে কলকাতায় অনুশীলনের পাশাপাশি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলছে। শেখ রাসেল, শেখ জামাল, চট্টগ্রাম আবাহনী, সাইফ স্পোর্টিং, ঢাকা আবাহনী শক্তিশালী দল গড়েছে। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানে যোগ দিচ্ছেন বেশকজন অভিজ্ঞ ফুটবলার। একাধিক ক্লাব শক্তিশালী হওয়ায় এবারের প্রতিটি আসর হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।

দেশের ফুটবলের মান নিচের দিকে নেমেই চলেছে। জাতীয় দল ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। এরপরও ঘরোয়া আসরে ফুটবলারদের পারিশ্রমিক কমছে না। বরং এবারও বাড়ছে। তবে তরুণদেরও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। সত্যি বলতে কি গত কয়েক মৌসুমে শীর্ষস্থানীয় দলগুলো বিদেশি ফুটবলারদের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ঢাকা আবাহনী সর্বোচ্চ পাঁচবার, শেখ জামাল তিন ও শেখ রাসেল একবার পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর পেছনে বড় অবদান ছিল বিদেশিদেরই।

এবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন স্থানীয় ফুটবলাররা। কেননা আগে চারজন করে বিদেশি ফুটবলার খেলতেন। এবার পারবেন দুজন। আর রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন তিনজন। কয়েকটি ক্লাব তিনজন বিদেশি নামানোর অনুমতি চেয়ে লিগ কমিটির কাছে আপিল করতে পারে। বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী বলেন, দেশের ফুটবলের স্বার্থের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুতরাং সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর