রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় মোহামেডানের

ফুটবলে নতুন মৌসুম

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় মোহামেডানের

আমিরুল ইসলাম বাবু

১৫ বছর ধরে লিগ শিরোপা জিততে পারছে না মোহামেডান। এর চেয়ে বড় লজ্জা ঐতিহ্যবাহী এ দলের আর কি হতে পারে। ২০০২ সালে শেষ লিগ ট্রফি ঘরে তুলেছিল তারা। ঢাকা আবাহনী ৫, শেখ জামাল ধানমন্ডি ৩ ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র একবার করে চ্যাম্পিয়ন হলেও মোহামেডানের কাছে শিরোপা জেতাটা যেন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ফেডারেশন কাপ স্বাধীনতা দিবস বা বিলুপ্তি হওয়া সুপারকাপে ট্রফি জিতলেও পেশাদার লিগ অধরা থেকে গেছে। গত বছর মোহামেডান রেলিগেশন থেকে কোনোক্রমে বেঁচে গেছে। লিগে অবস্থান ছিল আটে। অবশ্য ১৯৭৪ সালে নবম ও ১৯৭৭ সালে সপ্তম স্থানে থাকার রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে মোহামেডান ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। ১৯৭৫ ও ১৯৭৬ টানা দুবার লিগ জিতেছে। ১৯৭৮ সালে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

তখনকার মোহামেডান আর এখনকার মোহামেডানের মধ্যে পার্থক্য অনেক। ক্লাবের ঐতিহ্য ম্লান হওয়ায় সমর্থকদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী একের পর এক সাফল্য পাচ্ছে। অন্যদিকে মোহামেডান ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। কিছুদিন আগে ক্লাবের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। আশা ছিল বিভেদ ভুলে ক্লাব উন্নয়নে সবাই মিলেমিশে কাজ করবেন। কিন্তু সেই ঐক্য ভেস্তে গেছে। এ জন্য দুই পক্ষই একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

তাহলে মোহামেডান কি আর মোহামেডান রূপে ফিরবে না? দলবদল চলছে। বড় বড় দল ইতিমধ্যেই ঘর গুছিয়ে নিয়েছে। অনেক ক্লাব অনুশীলনও শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু সেভাবে আলোচনায় আসছে না মোহামেডানের নাম। সমর্থকরাও ধোঁয়াশার মধ্যে আছেন তাদের প্রিয় দল নতুন মৌসুমে কাদের নিয়ে মাঠে নামবে। অবশ্য ক্লাবের ফুটবল দলের ম্যানেজার অভিজ্ঞ সংগঠক আমিরুল ইসলাম বাবু আসছে মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বাবু দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, মোহামেডান এবার শক্তিশালী রূপ নিয়েই মাঠে নামবে, যাদের দিয়ে শিরোপার আশা করা যায়। গতবার খারাপ রেজাল্ট করায় অধিকাংশ খেলোয়াড় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যোগ দিয়েছেন অভিজ্ঞ ও তরুণ ফুটবলার। বাবু বলেন, যারা আসছে তারা ঠিকমতো অনুশীলন করলেই শিরোপা জেতা সম্ভব। স্থানীয় ও বিদেশি মিলিয়ে নতুন ২৩ জন খেলোয়াড় মোহামেডানে যোগ দিতে যাচ্ছেন। গত বছর গোলরক্ষকের কারণে দলের বিপর্যয় নেমে এসেছিল বলে বাবু মনে করেন। তাই গোলকিপার হিসেবে মোহামেডানে দেখা যাবে শেখ রাসেলের লিটন, মুক্তিযোদ্ধার মামুন মিঞা ও রহমতগঞ্জের আল আমিনকে।

শেখ রাসেল থেকে নাসিরুল ইসলাম নাসির, মিন্টু শেখ, অনীক ইসলাম, মিঠুন চৌধুরী, কোসন, বাবলু ও দেশের অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার জাহিদ হোসেন এমিলি যোগ দিচ্ছেন। ব্রাদার্স থেকে আসছেন এনায়েত হোসেন ইমরুল, খান শরীফ ও মনির হোসেন, চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে শাকিল, তকলিশ আহমেদ, শেখ জামালের লিংকন, এনামুল হক শরীফ ও আশরাফুল। ঢাকা আবাহনীর ফয়সাল মাহমুদও মোহামেডানে যোগ দিচ্ছেন। বাবু জানান এবার দেখে শুনে বিদেশি ফুটবলারও নেওয়া হচ্ছে। এরা হলেন বিজেএমসির ফ্রান্সিস শেখ রাসেলের পল এমিলি ও রহমতগঞ্জের দাউদা। বাবু বলেন, শিরোপা জিতবই এমন নিশ্চয়তা দিতে পারব না। কিন্তু তরুণ ও অভিজ্ঞর মিশ্রণে মোহামেডান অনেক দিন পর ব্যালেন্সড দল গড়তে সক্ষম হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে মোহামেডান নতুন মৌসুমের প্রস্তুতি শুরু করে দেবে। তিনি বলেন, বড় দল থেকে আমরা খেলোয়াড় সংগ্রহ করেছি। এখন মাঠে তারা কেমন খেলবে তার ওপরই নির্ভর করছে আমাদের সাফল্য।

সর্বশেষ খবর