সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ক্রীড়াঙ্গনে বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্রীড়াঙ্গনে বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

ক্রীড়াবিদদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে টেস্ট অধিনায়ক মুশফিক ও ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফির হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বরাবরই খেলাপ্রেমী। ক্রিকেট হোক আর ফুটবল হোক, সময়-সুযোগ পেলে মাঠে চলে যান। বিদেশের মাটিতে খেলার সাফল্যে অধিনায়ক ও ভালো খেলোয়াড়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলে উৎসাহ দেন তিনি। ঘোষণা করেন পুরস্কারের। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন খেলায় সাফল্য অর্জনকারী খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দিতে গতকাল ৩৪৬ জন ক্রীড়াবিদকে গণভবনে ডেকেছিলেন। মেধার স্বাক্ষর রেখে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সুনাম অর্জনকারী ক্রীড়াবিদদের হাতে গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে গণভবনের পশ্চিম মাঠে ক্রীড়াবিদদের বসেছিল মিলনমেলা। সন্ধ্যা ৭টার সময় এই সংবর্ধনা দেওয়ার কথা থাকলেও বিকাল ৫টা থেকে গণভবনে প্রবেশ করতে থাকেন দেশের বিভিন্ন ক্রীড়াবিদ। নির্ধারিত জায়গায় আসন গ্রহণের এবং একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি সেলফি তোলেন তারা। ক্রীড়াবিদদের জন্য গতকাল ছিল এক অন্যরকম দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে সাফল্যের জন্য নিজ হাতে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন আগেও। তবে আগে পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল এক খেলার খেলোয়াড়দের জন্য। গতকাল ৩৪৬ জন ক্রীড়াবিদ একসঙ্গে একে একে গ্রহণ করেন পুরস্কার।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সাফল্যের ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা অনেক সাফল্য অর্জন করেছি। আরও সাফল্য অর্জন করতে হবে। যারা বাংলাদেশের সম্মান বয়ে এনেছেন, মেধার পরিচয় দিয়েছেন তাদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই। আপনারা বাঙালি জাতির জন্য গৌরব বয়ে এনেছেন। বাংলাদেশকে সম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে গেছেন। আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাতে আজ গণভবনের মাটি ধন্য হয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সবারই খেলাধুলা একান্তভাবে দরকার। আজকে প্রমাণ হয়েছে, খেলাধুলায় ছেলেমেয়েদের একটু সুযোগ দিলেই আমাদের ছেলেমেয়েরা যে সোনার ছেলেমেয়ে তা তারা প্রমাণ করতে পারে। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সমাজের অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি আছেন, তারা যদি খেলাধুলায় এগিয়ে আসেন-তাহলে আমরা আরও অনেক এগিয়ে যাব। এ সুযোগটি দিতে হবে।

নিজেকে ক্রীড়া পরিবারের সদস্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার দাদা বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। আব্বাও ফুটবল খেলতেন। আমার ভাইয়েরা ক্রিকেট, ফুটবল, হকিসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় পারদর্শী ছিল। সে কারণে খেলাধুলার প্রতি আমার একটু আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। তিনি বলেন, খেলার জন্য যা যা করা দরকার তাই করব, আওয়ামী লীগ সরকার তা করবে। শুরুতেই বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।

প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ক্রিকেট দল, নারী ক্রিকেট দল, হ্যান্ডবল, সাঁতার, যুব হকি, জাতীয় হকি দল, শুটিং, ভারোত্তোলন, মহিলা ফুটবল, অনূর্ধ্ব-১২ ছেলেদের ফুটবল, গলফ, আর্চারি, দাবা, জুনিয়র ব্যাডমিন্টন, ইনডোর হকিতে নারী-পুরুষ, রোলবলের ক্রীড়াবিদদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ ছাড়াও ২০১৬ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে স্বর্ণজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা, ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ও শুটার শাকিল আহমেদের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। স্বর্ণজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী তাদের ফ্ল্যাট পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পুরস্কারও প্রধানমন্ত্রী তুলে দেন। শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট, ওয়ানডে ও ২০-টোয়েন্টি সিরিজে ড্র করা বাংলাদেশ দলকে এক কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়। এ সময় গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান পাপনসহ ক্রীড়া সংস্থার শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর