মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রিমিয়ারে সেঞ্চুরির দিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রিমিয়ারে সেঞ্চুরির দিন

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলামের সেঞ্চুরিতে জয় পেয়েছে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ। লিগে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয় —বাংলাদেশ প্রতিদিন

একদিনে তিন সেঞ্চুরি। গতকাল ছিল প্রিমিয়ার লিগে সেঞ্চুরিময় একদিন। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪ নম্বর মাঠে শেখ জামাল ধানমন্ডির বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলাম। ৩ নম্বর মাঠে আরেক ম্যাচে পারটেক্সের বিরুদ্ধে অপরাজিত সেঞ্চুরি করেছেন আবাহনীর ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মাত্র এক রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন প্রাইম দোলেশ্বরের ইমতিয়াজ হোসেন। দুর্ভাগ্যবশত ৯৯ রানে ইমতিয়াজ আউট না হলে আরও একটি সেঞ্চুরি বাড়ত। তবে সেঞ্চুরির আক্ষেপ থাকলেও দলকে ঠিকই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৪ উইকেটে হারিয়েছেন প্রাইম দোলেশ্বর।

মুশফিক-নাঈমের সেঞ্চুরিতে শেখ জামালের বিরুদ্ধে ৬৮ রানের বড় জয় পেয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। নাজমুলের শতকে পারটেক্সকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে আবাহনী।

গতকাল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। খেলেছেন ১৩৪ বলে ১৩৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। একটি বিশাল ছক্কার সঙ্গে ১৪টি বাউন্ডারি। আরেকটি দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছেন নাঈম ইসলাম। ১১৮ বলে করেছেন ১০৩ রান। একটি ছক্কার সঙ্গে ৭টি বাউন্ডারি। দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাটে ভর করেই কাল ৩০৫ রানের পাহাড় গড়েছিল রূপগঞ্জ। অথচ দলটির ব্যাটিং শুরুটা হয়েছিল খুবই বাজেভাবে। দলীয় ১৩ রানের মাথায় দুই ওপেনার সাজঘরে ফিরে যান। এরপর মুশফিকের সঙ্গে ২২৫ রানের জুটি গড়েন নাঈম ইসলাম। শেখ জামালের দুই বোলার শাহাদাত হোসেন ও আবদুর রাজ্জাক দুটি করে উইকেট নেন।

৩০৬ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেখ জামালের শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় ১০ রানেই প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। ৭ রানে আউট হয়ে যান তারকা ওপেনার ইমরুল কায়েস। তবে দ্বিতীয় উইকেটে মাহবুবুল করিম ও ফজলে রাব্বি মিলে ৫৪ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কাটা সামাল দেন। তবে এতে বড় কোনো জুটি গড়ে ওঠেনি। নিয়মিত বিরতিতে পড়তে থাকে শেখ জামালের উইকেট। শেষ পর্যন্ত ২৩৭ রানেই অলআউট হয়ে যায়। সর্বোচ্চ ৪২ রান এসেছে জিয়াউর রহমানের ব্যাট থেকে। রূপগঞ্জের নাঈম ইসলাম ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর বল হাতেও দেখিয়েছেন ক্যারিশমা। মাত্র ২১ রানে নিয়েছেন দুই উইকেট। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আসিফ হাসান, মোশাররফ হোসেন ও শরীফ।

আবাহনীর নাজমুল হোসেন ১০৯ বলে খেলেছেন ১০১ রানের হার না মানা ইনিংস। অধিনায়ক মাহমুুদুল্লাহ রিয়াদ ৫২ বলে খেলেছেন ৭৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। দুই ব্যাটসম্যানের দাপুটে ব্যাটিংয়েই ৬৯ বল হাতে রেখে জিতে যায় আবাহনী। তবে এই ম্যাচের জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল বোলাররা। কাল আবাহনীর বোলারদের অসাধারণ নৈপুণ্যে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৩৪ রানের বেশি করতে পারেনি পারটেক্স। সর্বোচ্চ ৫০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন জুবায়ের আহমেদ। এ ছাড়া ওপেনার সাজ্জাদ হোসেন করেছিলেন ৪৪ রান। আবাহনীর দুই বোলার সাইফ উদ্দিন ও শুভাগত হোম দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন ব্রাদার্সের দুই ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিক ও মিজানুর রহমান। এক ছক্কা ও ৫ বাউন্ডারিতে জুনায়েদ করেছেন ৮৭ রান, আর মিজানুরের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৬ রান। ওপেনিং জুটিতেই এসেছিল ১১৩ রান। তারপরও কাল ব্রাদার্স ২৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি। অসাধারণ বোলিং করেছেন প্রাইম দোলেশ্বরের আরাফাত সানি। ৪৫ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

২৪৭ রানের জয়ের টার্গেটে খেলতে নেমে ৪ উইকেটে জিতে যায় দোলেশ্বর। মাত্র ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন ইমতিয়াজ। তবে তার ৯৯ রানের ইনিংসে ভর করেই জিতেছে দোলেশ্বর। তাই ম্যাচসেরা পুরস্কারও উঠেছে ইমতিয়াজের হাতেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শেখ জামাল-লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ

রূপগঞ্জ : ৩০৫/৫ (৫০ ওভার) (মুশফিক ১৩৪, নাঈম ১০৩, সাক্সেনা ২৩*; শাহাদাত ২/৫২, রাজ্জাক ২/৬৩, ইলিয়াস সানি ১/৬৩)। শেখ জামাল : ২৩৭/১০ (৪৬.২ ওভার) (জিয়া ৪২, মাহবুবুল ৩৬, ফজলে রাব্বি ৩৩; নাঈম ২/২১, শরীফ ২/৩১, আসিফ ২/৪০, মোশাররফ ২/৫৬)। ফল : লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৬৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : মুশফিকুর রহিম।

আবাহনী-পারটেক্স

পারটেক্স : ২৩৪/৭ (৫০ ওভার) (জোবায়ের ৫০*, সাজ্জাদ ৪৪, ইয়াশ ৩৩; শুভাগত ২/৪৫, সাইফ উদ্দিন ২/৫৬, সানজামুল ১/৩০)। আবাহনী : ২৩৭/৩ (৩৮.৩ ওভার) (নাজমুল ১০১*, মাহমুদুল্লাহ ৭৭, মোসাদ্দেক ২৩*; মামুন ১/২০, হাফিজ ১/২৭, রাজিবুল ১/৩২)। ফল : আবাহনী ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : নাজমুল হোসেন।

প্রাইম দোলেশ্বর-ব্রাদার্স ইউনিয়ন

ব্রাদার্স : ২৪৬/৯ (৫০ ওভার) (জুনায়েদ ৮৭, মিজানুর ৫৬, মাইশুকুর ৪৭; আরাফাত সানি ৪/৪৫, মোহাম্মদ এনামুল ২/৪৫, শরীফ উল্লাহ ২/৪৭)। দোলেশ্বর : ২৪৭/৬ (৪৮.৩ ওভার) (ইমতিয়াজ ৯৯, মজিদ ৪৫, মার্শাল ৩৩; সাদ্দাম ৩/৫৫, নেহাদুজ্জামান ২/৫০, নাঈম হাসান ১/২১) ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : ইমতিয়াজ হোসেন।

সর্বশেষ খবর