মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
হকিতে বিশৃঙ্খলা

দায়ী কি শুধু খেলোয়াড়রা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দায়ী কি শুধু খেলোয়াড়রা

রাসেল মাহমুদ জিমি

হকির তারকা খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমি শাস্তি পেতে পারেন। ওয়ার্ল্ড হকি লিগ চলা অবস্থায় জিমি ফেডারেশন এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তার এ বক্তব্য বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করা হয়। যদিও জিমি কারও নাম ধরে মন্তব্য করেননি। তবে বোঝাই যাচ্ছিল তিনি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি খাজা রহমত উল্লাহকে ইঙ্গিত করেই আপত্তিকর মন্তব্য করেন। কারণ ওয়ার্ল্ড হকি লিগে বাংলাদেশের হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখে রহমত উল্লাহ মিডিয়াতে সিনিয়র খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। একজন কর্মকর্তা তার ব্যক্তিগত মতামত দিতেই পারেন। কিন্তু জিমি বলেন, ‘তথাকথিত হকি বিশেষজ্ঞরা আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার রাখেন না।’ টুর্নামেন্টে জিমি ছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক। সুতরাং ফেডারেশনের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না। তাছাড়া তিনি খেলোয়াড় হয়েও টুর্নামেন্টের পোস্টার লাগানো কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

এ ধরনের শৃঙ্খলা ভাঙার পর ফেডারেশন স্বাভাবিকভাবে শোকজ নোটিস পাঠায়। সেই নোটিসের জবাবও দিয়েছেন জিমি। ৮ এপ্রিল তিনি জাতীয় দলের সমন্বয়ক ও তিন নির্বাচকের মুখোমুখিও হন। জিমি তার বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিটি অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু সমন্বয়ক মাহবুব এহসান রানা, তিন নির্বাচক কামরুল ইসলাম কিসমত, মামুনুর রশিদ ও রফিকুল ইসলাম সন্তুষ্ট হতে পারেননি জিমির কথায়। তারা বলেছেন জিমি যে আপত্তিকর মন্তব্য দিয়েছেন তার প্রমাণ ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে রয়েছে। আমরা তার কথা ভিডিও করে রেখেছি। সুতরাং তার কর্মের জন্য শাস্তি পেতেই হবে।

শাস্তি হবে কি হবে না তা চূড়ান্ত করবে ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটি। তদন্ত কমিটি শাস্তির সুপারিশ করলে ওয়ার্কিং কমিটি তা নিয়ে আলোচনা করবে। পরে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে ফেডারেশনে। জিমি ২০১৫ সালেও নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু ভবিষ্যতে আর শৃঙ্খলা ভাঙবেন না অঙ্গীকারনামা দিয়েই শাস্তি থেকে মুক্ত হন। শৃঙ্খলা ভাঙলে খেলোয়াড়রা শাস্তি পাবেন এটাই স্বাভাবিক। ফুটবলের সুপার স্টার কাজী সালাউদ্দিনও নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও রেহাই পাননি। কথা উঠেছে জিমিকে যারা ইন্ধন যুগিয়েছেন তারা কেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকবেন। প্রশ্ন উঠতে পারে সেই ইন্ধনের কি প্রমাণ দেওয়া যাবে।

আসলে কারা বা কোন ব্যক্তি এই ইন্ধনের সঙ্গে জড়িত তা হকি ফেডারেশনের অজানা নয়। গত বছর লিগ চলাকালেই এ কর্মকর্তা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান। জার্মানি কোচকে নিয়েও অনেক নাটক করেন। তার আগে হকি খেলোয়াড়দের ক্যাম্প বর্জনের পেছনে নেপথ্যে এ কর্মকর্তা ভূমিকা রাখেন। এমনকি কয়েকটি ক্লাব লিগ বয়কটের নায়ক তিনিই। হকিতে পরিচিত মুখ নয়। তারপরও কার প্রভাবে তিনি একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছেন এটাই প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। হকিতে যতটুকু অস্বস্তি পরিবেশ নেপথ্য এই কর্মকর্তার হাত স্পষ্ট। তাহলে তাকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না? জিমি যদি শাস্তি পেয়েও থাকেন তাহলে কতটা লাভবান হবে ফেডারেশন। বিষয়টিতে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। ইন্ধনকারীদের শাস্তি না হলে হকিতে একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবেই। তা না হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর