শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সেমিফাইনালে মাদ্রিদ ডার্বি

আসিফ ইকবাল

সেমিফাইনালে মাদ্রিদ ডার্বি

সুইজারল্যান্ডের নিয়নে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ট্রফি হাতে উয়েফা সভাপতি আলেকসান্দার সেফরিন —এএফপি

শুধু স্প্যানিশ ফুটবল নয়, বিশ্ব ফুটবলেও দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। শিল্প, নান্দনিকতা ও তারকা ফুটবলারদের জন্য যেমন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে ফুটবল বিশ্ব বিভাজিত, তেমনই রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা নিয়ে বিভাজিত ফুটবলপ্রেমীরা। দুনিয়ার হেন কোনো কাপ নেই, যার স্বাদ নেয়নি ক্লাব দুটি। এবারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দাবিদার ছিল দুই ক্লাব। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালেই স্বপ্নভঙ্গ হয় বার্সেলোনার। কোয়ার্টার ফাইনালের বেড়া ডিঙাতে পারেননি লিওনেল মেসি, নেইমার, সুয়ারেজরা। তাই মৃতুপুরীতে পরিণত হয়েছে বার্সেলোনা নগরী। অথচ বিপরীত চিত্র মাদ্রিদ শহরের। উৎসবের নগরী এখন স্পেনের রাজধানী। রাজধানী মাদ্রিদের দুই ফুটবল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ফের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে খেলবে। ২০১৪ ও ২০১৬ সালে রিয়াল ও অ্যাথলেটিকো ক্লাব দুটি মুখোমুখি হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। এবার লড়বে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে। দুই ক্লাব সেমিতে জায়গা নেওয়ায় যেমন উৎসবের নগরী বিশ্বের অন্যতম সুন্দর রাজধানীটি, একই সঙ্গে ফুটবল লড়াই নিয়েও বিভাজনের সূক্ষ্ম তার বয়ে গেছে নগরীর মাঝ বরাবর। ৩ জুন কার্ডিফে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। ‘রোড টু কার্ডিফ’ লড়াইয়ে রিয়াল-অ্যাথলেটিকোর মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আরেক সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ ইতালির জুভেন্টাস ও ফ্রান্সের মোনাকো। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ের প্রথম সেমিফাইনাল ২ ও ৩ মে। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ পরের সপ্তাহে। ২ মে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দিয়াগো সিমিওনের অ্যাথলেটিকোকে আতিথেয়তা দেবে জিদানের রিয়াল। ৩ মে মোনাকো স্বাগত জানাবে দিবালাদের জুভেন্টাসকে।

গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোরা। গত বছর ইতালির সান সিরো স্টেডিয়ামে ফাইনালে রিয়াল টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে হারিয়েছিল নগর প্রতিপক্ষ অ্যাথলেটিকোকে। নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও কোনো দল গোল পায়নি। ফলে টাইব্রেকারে গড়িয়েছিল ফাইনাল। অবশ্য নির্ধারিত সময়ে গ্রিজম্যান যদি পেনাল্টি মিস না করতেন তাহলে চ্যাম্পিয়ন হতো অ্যাথলেটিকো। ২০১৪ সালেও দুর্ভাগ্য সঙ্গী হওয়ায় চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি অ্যাথলেটিকো। এবার যদি দুর্ভাগ্যের গণ্ডি পেরোতে পারেন কাভানিরা। অবশ্য কার্ডিফে শিরোপা আকাশ পানে তুলে ধরার আগে হারাতে হবে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের। না হলে ১১ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ ১৫ বারের মতো ফাইনাল খেলবে। রিয়াল সেমিতে জায়গা নিয়েছে পাঁচবারের ইউরো সেরা দল বায়ার্ন মিউনিখকে দুই লেগে বিধ্বস্ত করে। প্রথম লেগে ২-১ গোলে জয় পেয়েছিল বায়ার্নের মাটিতে। দ্বিতীয় লেগে রোনালদোর হ্যাটট্রিকে ৪-২ গোলে ধরাশায়ী করে জার্মান ক্লাবকে। দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচের ফল ৬-৩। অ্যাথলেটিকো সেমিতে জায়গা নেয় ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন লিস্টার সিটির স্বপ্নভঙ্গ করে। কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম লেগে ঘরের মাঠে সিমিওনের দল জিতেছিল ১-০ গোলে। দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি ১- গোলে ড্র হয়। ফলে প্রথম লেগ জেতার সুবিধায় সেমিতে জায়গা নেয় অ্যাথলেটিকো। লা লিগার বাইরে ফুটবলপ্রেমীরা ফের মজে উঠবেন ডার্বি লড়াইয়ে। আরেক সেমিফাইনালে ফেবারিট জুভেন্টাসের প্রতিপক্ষ মোনাকো। দুবার ইউরো সেরা ক্লাব হয়েছে জুভেন্টাস। রানার্সআপ হয়েছে ৬ বার। এবার নবমবারের মতো ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামবেন দিবালারা। সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে ইতালিয়ান ক্লাবটি হারিয়েছে পাঁচবারের ইউরো সেরা বার্সেলোনাকে। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করার পরের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে আলেগ্রির দল। মোনাকো দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ হারায় জার্মানির বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে। প্রথম লেগে মোনাকো জয় পায় ৩-২ গোলে এবং দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠে জয় পায় ৩-১ গোলে। মোনাকো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে একবারই ফাইনাল খেলেছিল। সেটা ২০০৪ সালে। তাই এবার দলটি মরিয়া পুনরায় ফাইনাল খেলতে এবং শিরোপার স্বাদ নিতে। ৩ জুন ‘রোড টু কার্ডিফ’। তার আগেই ফুটবলপ্রেমীরা ফের উপভোগ করবেন টানটান উত্তেজনার সেমিফাইনাল।

সর্বশেষ খবর