সোমবার, ১৫ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

শেখ জামালের উড়ন্ত সূচনা

ফেডারেশন কাপ ফুটবল
শেখ জামাল ধানমন্ডি ৩-০ ফরাশগঞ্জ
চট্টগ্রাম আবাহনী ২-১ মোহামেডান

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শেখ জামালের উড়ন্ত সূচনা

গোলের পর তরুণ ফুটবলার আবসারকে ঘিরে সতীর্থদের উল্লাস। বড় জয় দিয়ে মৌসুম শুরু করল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে কালো স্যুট পরিহিত জোসেফ আফুসি বারবার হাত নাড়িয়ে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন মামাদো বাহ, নুরুল আবসার, সলোমন কিংদের। শিষ্যরাও কোচের নির্দেশনা বুঝে ক্ষণে ক্ষণে দিক পরিবর্তন করে, খেলার গতি বাড়িয়ে প্রতিপক্ষ ফরাশগঞ্জকে কোণঠাসা করতে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন মাঠে। গতিশীল পাসিং ফুটবল খেলে ফলও পেয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ফেডারেশন কাপের শিরোপার অন্যতম দাবিদার শেখ জামাল ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে পুরনো ঢাকার দল ফরাশগঞ্জকে। পুরনো ঢাকার দলটি এক বছর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফের ফিরেছে ঘরোয়া ফুটবলে। ২০১১, ২০১২ ও ২০১৪-১৫ মৌসুমের ফেডারেশন কাপ জয়ী শেখ জামাল এবার শিরোপা উদ্ধারের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে।

বাংলাদেশ ফুটবলের দুই পরিচিত শক্তিশালী দল আবাহনী ও মোহামেডান। দুই পরিচিত মুখকে হটিয়ে এখন দেশের ফুটবলের শক্তিশালী দুই দল শেখ জামাল ও শেখ রাসেল।  শেখ জামালের সভাপতি হয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ জামাল ক্রিকেট ও ফুটবলে শক্তিশালী দল গড়েছে। ওয়ালটন প্রিমিয়ার ক্রিকেটে দলটি খেলছে দাপটের সঙ্গে। ফুটবলে তরুণদের নিয়ে শক্তিশালী দল গড়েছে। দলটি যে এবারও শিরোপার দাবিদার, গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বড় জয় পেয়েছে দলটি। ৩-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এক পা দিয়েই ফেলেছে দলটি। খেলায় প্রথমার্ধে একটি এবং দ্বিতীয়ার্ধে দুটি গোল করে শেখ জামাল। ১০ মিনিটে এগিয়ে যায় শেখ জামাল। বাম প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ফরাশগঞ্জের রক্ষণভাগে ঢোকার সময় মালিক মেন্ডি ফাউল করেন শেখ জামালের গাম্বিয়ান স্ট্রাইকার মামোদুর বাহকে। রেফারি আনিসুর রহমান পেনাল্টির নির্দেশ দেন। মামাদো ঠাণ্ডা মাথায় স্পট কিকে শেখ জামালকে এগিয়ে নেন (১-০)। ওই গোলের পর আফুসির শিষ্যরা গোছালো ফুটবল খেলতে থাকেন। দুই উইং দিয়ে খেলতে থাকে শেখ জামাল। ৩৮ মিনিটে নিশ্চিত গোল বঞ্চিত হয় দলটি। বাম প্রান্ত থেকে ভেসে আসা বলে হেড করেন সলোমন কিং। কিন্তু বলটি অল্পের জন্য বারপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়। এক গোলের ব্যবধান নিয়েই বিরতির বাঁশি বাজান রেফারি। দ্বিতীয়ার্ধে শেখ জামাল আক্রমণের গতি বাড়াতে আফুসি মাঠে নামান সোহেল মিয়াকে। সোহেল মাঠে নামতেই খেলার গতি বেড়ে যায় দ্বিগুণ। ৫৬ মিনিটে গোলসংখ্যা দ্বিগুণ করে আফুসিবাহিনী। মধ্যমাঠ থেকে জাহেদ পারভেজ ডান দিকে বল বাড়িয়ে দেন আগুয়ান সোহেল মিয়াকে। সোহেল বল ধরে ডান প্রান্ত থেকে মাইনাস করেন। পুরনো ঢাকার দলটির রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে টোকা দেন নুরুল আবসার। বল ফরাশগঞ্জের গোলরক্ষক বোরহান উদ্দীনকে পরাস্ত করলেও সাইড বারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে ফের টোকা মারেন আবসার। এবার আর হতাশায় পুড়তে হয়নি শেখ জামালকে। বল জড়িয়ে যায় গোলপোষ্টে(২-০)। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ফরাশগঞ্জ আক্রমণে আসে। বেশ কয়েকটি আক্রমণও করে। কিন্তু শেখ জামালের রক্ষণভাগকে বিপদে ফেলার মতো কোনো আক্রমণ ছিল না। তাই গোল হয়নি। বিপরীতে জয় প্রায় নিশ্চিত হওয়ায় শেখ জামালও বল নিজেদের পায়ে রেখে খেলতে থাকে। এতে করে খেলার গতি একটু কমে যায়। কিন্তু তারপরও খেলার অন্তিম সময়ে ৯০ মিনিটে ফরাশগঞ্জের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুঁকে দেন আনিসুর আলম চোখ ধাঁধানো এক গোলে (৩-০)। ডি বক্সের বাম প্রান্ত থেকে আনিসুর আচমকা ভলি মারেন। গতি থাকায় শেষ মুহূর্তে বল অ্যাঙ্গেল পরিবর্তন করে জায়গা নেয় জালে। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন ফরাশগঞ্জের গোলরক্ষক বোরহান। ওই গোলের অল্প কিছুক্ষণ পরই খেলার শেষ বাঁশি বাজান রেফারি।

এদিকে দিনের দ্বিতীয় খেলায় চট্টগ্রাম আবাহনী ২-১ গোলে পরাজিত করেছে ঢাকা মোহামেডানকে। ৩৬ মিনিটে নাইজেরিয়ান আফেজ ওলা ওলে গোল করে আবাহনীকে এগিয়ে রাখেন। ৫৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন কৌশিক। ৭৪ মিনিটে তকলিস একটি গোল শোধ করলেও পরাজয় এড়াতে পারেনি সাদা কারোরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর