শনিবার, ২০ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাকুতে কাবু ক্রীড়াবিদরা

ইসলামী সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এস এ গেমসে সোনা জয় করে আলোড়ন তুলেছিলেন মাহফুজা খাতুন শিলা ও মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। শিলা সাঁতারে ২টি ও সীমান্ত ভারোত্তোলনে ১টি সোনা জয় করেন। অন্ধকারে ডুবে থাকা সাঁতারে আশার আলো জাগিয়েছিলেন শিলা। আর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মাবিয়া ভারোত্তোলনকে চেনান নতুনভাবে। কাতারে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় মাবিয়া সোনা জেতেন। প্রত্যাশা ছিল আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে ইসলামী সলিডারিটি গেমসে এই দুই মহিলা ক্রীড়াবিদ দেশকে পদক উপহার দেবেন। কিন্তু তা আর হয়নি। তবে মান রেখেছেন শুটাররা। কেননা এই গেমসে ২টি পদকই এসেছে শুটিংয়ে। একসময় শুটিংয়ে ধারাবাহিক সাফল্য ছিল। ১৯৯০ সালে প্রথমবারের মতো কমনওয়েলথ গেমসে শুটিংয়ে সোনা জেতে বাংলাদেশ। ২০০২ সালে ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমসে সোনা উপহার দেন আসিফ। এ ছাড়া কমনওয়েলথ শুটিংয়ে বাংলাদেশের সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মতো। হঠাৎ করে শুটিং যেন থমকে গেল। এতটা খারাপ অবস্থা যে সাউথ এশিয়ান গেমসে পদক জেতাটাই স্বপ্নে পরিণত হয়। অন্যান্য গেমসের কথা বাদই দিলাম।

গতবার এস এ গেমসে শুটাররা ঘুরে দাঁড়ান। শাকিল বাংলাদেশকে এনে দেন কাঙ্ক্ষিত সোনা। ঢাকা ছাড়ার আগে শুটাররা বলে যান ইসলামী সলিডারিটি গেমসে পদক জেতার কথা। কথা রেখেছেন তারা। ১০ মিটার এয়ার মিটারে অল্পের জন্য সোনা হাতছাড়া হয়ে যায় রাব্বির। রুপা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকেন তিনি। এই আক্ষেপ অবশ্য পরের দিনই দূর হয়ে যায়। প্রথমবারের মতো বাকুতে বেজে ওঠে ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে পাওয়া জাতীয় সংগীত। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে মিশ্র দলগত ইভেন্টে সোনা জেতেন বাকি ও দিশা। ব্যস, এই পর্যন্তই। ইসলামী সলিডারিটি গেমসে শুটাররাই দেশের মান রেখেছেন। অথচ সাঁতার, ভারোত্তোলন ও অ্যাথলেটিকসকে ঘিরেও প্রত্যাশা ছিল। শিলা ও মাবিয়া কেন পারলেন না এটাই প্রশ্ন। তাদের প্রস্তুতিতে কি ঘাটতি ছিল? আসলে বিভিন্ন গেমসে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা যে ধরনের প্রস্তুতি নেন তা পদক জেতার জন্য যথেষ্ট নয়। শিলা ও মাবিয়ার ব্যাপারে তাদের ফেডারেশন কতটা গুরুত্ব দিয়েছিল তাও প্রশ্নসাপেক্ষ। শুটিং ছাড়া বাকুতে বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।

অ্যাথলেটিকসে সময়টা খুবই খারাপ যাচ্ছে। গেমসগুলোয় পারফরম্যান্স খুবই হতাশাজনক। ইসলামী সলিডারিটি গেমসে এক প্রবাসী অ্যাথলেটকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান এই অ্যাথলেট আলিদা সিকদার ট্র্যাকে চমক দেখাবেন এই আশা অনেকেরই ছিল। অথচ তিনি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেননি। ১০০ মিটার ও লং জাম্পে পেটের পীড়ায় তিনি নামতে পারেননি। চিকিৎসকদের বক্তব্য আবার অন্যরকম। আলিদা এমন কোনো অসুস্থ ছিলেন না যে খেলতেই পারতেন না। তাহলে কি ভয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ট্র্যাকে নামেননি? যদি তাই হয় তাহলে ঢাকঢোল পিটিয়ে আলিদাকে নেওয়া হলো কেন?

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেছেন, এবার ইভেন্টের গুরুত্ব বুঝে ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাই হওয়া উচিত। সম্ভাবনা আছে এমন খেলাকে গুরুত্ব দিলে ভবিষ্যতে সাফল্যের আশা করা যায়। সামনে এস এ গেমস, এশিয়ান গেমস ও কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশ অংশ নেবে। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উচিত হবে এখনই ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। শুধু তাই নয়, প্রবাসীদের মান যাচাই না করে অযথা তাদের দলে যেন নেওয়া না হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর