সোমবার, ২২ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

আয়ারল্যান্ডে দুরন্ত ফর্মে মুস্তাফিজ সৌম্য

মেজবাহ্-উল-হক

আয়ারল্যান্ডে দুরন্ত ফর্মে মুস্তাফিজ সৌম্য

মুস্তাফিজ - সৌম্য

আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজে এখন সাতক্ষীরার জয়জয়কার! অবাক হচ্ছেন? জাতীয় দলের দুই তারকা ক্রিকেটার কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান এবং ওপেনার সৌম্য সরকারের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায়। আর ত্রিদেশীয় সিরিজে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার উপরে সৌম্যর নাম, বোলারদের তালিকায় আছেন মুস্তাফিজ। এবার বাকিটা নিজ দায়িত্বে বুঝে নিন।

প্রায় দীর্ঘ দেড় বছর পর রানে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। পর পর দুই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি। আইরিশদের বিরুদ্ধে বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ম্যাচে সবুজ উইকেটের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে মাত্র ৫ রানেই আউট হয়েছিলেন। তারপর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলেছেন ৬১ রানের ইনিংস এবং সব শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে করেছেন অপরাজিত ৮৭ রান। গড় ৭৬.৫। এ যেন সেই চেনা সৌম্য। পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলা সেই ড্যাসিং সৌম্য।

কাটার মাস্টার দেখাচ্ছেন তার ক্যারিশমা। দীর্ঘ ইনজুরি থেকে ফেরার পর মুস্তাফিজের সামর্থ্য নিয়ে হয়তো অনেকের মনেই সংশয় ছিল। কিন্তু ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজে আবার নতুন করে ফোকাস করছেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে ৩৩ রানে দুই উইকেট। যোগ্য সঙ্গীর অভাবে সে ম্যাচে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে পারেননি। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে সব শেষ ম্যাচে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন। নিয়েছেন ২৩ রানে ৪ উইকেট। এমন স্বপ্ন্নিল বোলিংয়ের পর প্রতিপক্ষকে হারাতে আর খুব বেশি কিছু করার দরকার হয় না।

প্রথম ম্যাচের জন্য আফসোস হতে পারে মুস্তাফিজের। কেন না উইকেটে যে সুন্দর সবুজ ঘাস ছিল, হয়তো এই দুই ম্যাচের তুলনায় আরও ভালো বোলিং করতে পারতেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বোলিং করতে পারেননি তিনি। ম্যাচটিতে বাংলাদেশ টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৩১ ওভার খেলার পর বৃষ্টি নামে। পরে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

অভিষেকের পর থেকে মুস্তাফিজ যে কতটা ভয়ঙ্কর সেটা তার ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে কাটার মাস্টার মাত্র দুই ম্যাচে কোনো উইকেট পাননি। আর এক ম্যাচে পেয়েছেন মাত্র একটি উইকেট। এছাড়া সব ম্যাচেই একাধিক উইকেট নিয়েছেন তিনি। উইকেট তুলে নিতে তাকে মোটেও সংগ্রাম করতে হয়নি। বরং ব্যাটসম্যানরা তার বলে বিভ্রান্ত হয়ে উইকেট দিতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু ইনজুরি থেকে ফেরার পর মুস্তাফিজ স্বরূপে ফিরতে কিছুটা সময় নিচ্ছিলেন। গত মার্চে শ্রীলঙ্কা সিরিজে দেশের হয়ে খেলার পর সরাসরি গেলেন ভারতে আইপিএলে খেলতে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ না বুঝে পরিশ্রান্ত মুস্তাফিজকে প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামালেন। ফলাফল হলো উল্টো। অনেক রান দিলেন কাটার মাস্টার। সান রাইজার্স হায়দরাবাদ কর্তৃপক্ষ আর তার ওপর ভরসা রাখতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত রিজার্ভ বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করতে করতেই ইউরোপে চলে গেলেন মুস্তাফিজ। ভক্তরাও যেন কিছুটা সংশয়ে পড়ে যাচ্ছিল, সত্যিই কি আগের মুস্তাফিজকে আর দেখা যাবে! অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মুস্তাফিজের বিপক্ষে তাদের বয়ান উপস্থাপন করলেন। তাদের দাবি, অভিষেকের পর ব্যাটসম্যানরা মুস্তাফিজ সম্পর্কে জানতেন না এই সুযোগে মুস্তাফিজ টপাটপ উইকেট তুলে নিয়েছেন। এখন আর পারবেন না! এখন সবাই তার বোলিংয়ের গোপন রহস্য ভেদ করতে পেরেছেন।

সর্বশেষ খবর