বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

টাইগারদের উত্থান ঈর্ষণীয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টাইগারদের উত্থান ঈর্ষণীয়

খুলনা টাইটানসের জার্সি হাতে দলের কোচ শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে ও দলের কর্ণধার কাজী ইনাম আহমেদ। পাশে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, হাবিবুল বাসারসহ অন্য কর্মকর্তারা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাখ ঢাক না করে লঙ্কান কিংবদন্তি ক্রিকেটার মাহেলা জয়বর্ধনে বলে দিলেন ‘ক্রিকেটে বাংলাদেশের উত্থান ঈর্ষণীয়’! কোচের দায়িত্ব নিয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন করার পর এবার জয়বর্ধনে দায়িত্ব নিয়েছেন বিপিএলের দল খুলনা টাইটানসের। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাবটি গতকাল রাজধানীর এক পাঁচতারা হোটেলে নতুন কোচ মাহেলা জয়বর্ধনের সঙ্গে মিডিয়ার পরিচয় করিয়ে দেন। সেখানেই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ভুয়সী প্রশংসা করেন লঙ্কান কিংবদন্তি।

মাহেলা জয়বর্ধনে বলেন, ‘মাশরাফিদের উত্থান ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশ দল ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ থেকেই এগিয়ে যাচ্ছে। তবে গত ছয় বছরে তারা দ্রুত উন্নতি করেছে। বেশ কয়েকজন প্রখর প্রতিভাবান ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলে অনেক দিন থেকে খেলছে। এর সঙ্গে যে তরুণ ক্রিকেটাররা দলে এসেছে তারাও খুবই দায়িত্বশীল। তবে গোপন রহস্য হচ্ছে বাংলাদেশ দলের ‘লঙ্কান কোচিং স্টাফ’ —যারা ব্যবধান তৈরি করে দিয়েছে। বাংলাদেশের সাফল্যে বড়       ভূমিকা রাখছে।’

বিপিএলের গত আসরে মাহেলা ক্রিকেটার হিসেবে খেলেছেন। এক বছরের ব্যবধানে এবার কোচ। খুলনা টাইটানসকে চ্যাম্পিয়ন করার স্বপ্ন নিয়েই কোচের দায়িত্ব নিয়েছে। নিজের পরিকল্পনা সম্পর্কে মাহেলা বলেন, ‘ক্রিকেট একটি পেশাদার খেলা। আর বাংলাদেশের তরুণরা খুব দ্রুত বুঝে যায়, কিভাবে ভালো খেলতে হবে। টুর্নামেন্ট ছয় সপ্তাহের। ক্রিকেটাররা পরিকল্পনা করার    সময় পান।’

খুলনা টাইটানস গত বিপিএলে নিজেদের অভিষেক আসরেই দারুণ চমক দেখিয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থেকে তারা গ্রুপ পর্ব শেষ করেছিল। তবে ফাইনালে উঠতে পারেনি। প্লে-অফেই বাদ পড়ে যায়। এবার তারা শক্তিশালী দল গঠন করছে। অধিনায়ক হিসেবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকেই রেখে দিয়েছে। তবে ক্রিকেটারদের মধ্যে পাকিস্তানি তারকা বোলার জুনায়েদ খানকে রেখে দিয়েছে। বাকিরা সবাই নতুন। বিপিএলের নিয়ম অনুযায়ী গত আসরে দলে খেলা স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে চারজনকে রেখে দিতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজি। আইপিএলের প্রত্যেক ক্রিকেটারের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করতে পারে দলগুলো। কিন্তু বিপিএলে এক বছর। এই কম সময়ে ক্রিকেটাররা দলের কৃষ্টি-কালচারই ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারেন না। তাই বিপিএলে কোচিং করানো অনেক কঠিন। এই কঠিন কাজটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন মাহেলা, ‘আমি কোচিং করানোকে চাকরি হিসেবে দেখছি না। এটা আমার ব্যক্তিগত একটা চ্যালেঞ্জ। আমি এই কাজ করতে ভালোবাসি, সেটা যেখানেই হোক—ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, কিংবা ভারত।’

মাহেলা জয়বর্ধনে মনে করেন, খুলনা টাইটানসের হয়ে কাজ করা অনেকটা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের দায়িত্ব পালন করার মতোই। লঙ্কান কোচ বলেন, ‘মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে অধিকাংশ বিদেশি ক্রিকেটার এসে পৌঁছাতো টুর্নামেন্ট শুরুর ৪-৫ দিন আগে। তবে আমি স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে অনেক দিন কাজ করার সুযোগ পেতাম। এখানে অকশনে যাদের পাব সেই সব স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করতে হবে। সবাই নতুন। বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে জুনায়েদ খান ছাড়া বাকিরা সবাই নতুন। তাই কাজ করাটা চ্যালেঞ্জ। এখানকার সংস্কৃতি বুঝতে হবে, স্থানীয় ক্রিকেটারকে সঙ্গে সম্পর্কে জানতে হবে, চেষ্টা করতে হবে যাতে দ্রুত এখানকার পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া যায়।’

মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে চ্যাম্পিয়ন করার পর শ্রীলঙ্কার মিডিয়ায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, মাহেলা নাকি লঙ্কান ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে গোপনে চুক্তি করেছেন! এ কথা গতকাল উড়িয়ে দিয়েছেন মাহেলা, ‘প্রতিবেদনটি বানোয়াট। আমি মানুষকে বলি, আপনারা এসব ভিত্তিহীন সংবাদ বিশ্বাস করবেন না। আর আমি এসব ভিত্তিহীন সংবাদের কোনো জবাবও দেই না। কেউ আমাকে কোচ হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করেনি। আমি নিজের ইচ্ছায় এই কাজ করছি। তা ছাড়া ফুলটাইম কাজ হিসেবে আমি কোচিং করাবো না।’ তবে কোচ হিসেবে বাংলাদেশে এসে অভিভূত জয়বর্ধনে, ‘১৯৯৪ সালে আমি প্রথম বাংলাদেশে খেলতে এসেছিলাম। তারপর এখানে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছি। তবে এবার কোচ হিসেবে এসে আমি রোমাঞ্চিত। আমি মনে করি এটা আমার জন্য বড় সুযোগ। আমি চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমাকে কোচের দায়িত্ব দেওয়ায় খুলনা টাইটানসকে ধন্যবাদ।

সর্বশেষ খবর