সোমবার, ১০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

অস্ট্রেলিয়ার সফর নিয়ে আশাবাদী বিসিবি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অস্ট্রেলিয়ার সফর নিয়ে আশাবাদী বিসিবি

অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্রিকেটার অ্যালান বোর্ডার। তার অধিনায়কত্বেই ১৯৮৭ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ট্রফি জিতে অস্ট্রেলিয়া। ক্যারিয়ার শেষে বোর্ডার এখন ক্রিকেটে বাইরে। কিন্তু ক্রিকেটের খোঁজখবর যে রাখেন না, সেটা নয়। দেশের ক্রিকেটার ও দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে অর্থের বিলিবন্টন নিয়ে যে ঝামেলা চলছে, সেটা নিয়ে বিস্মিত এই সাবেক অধিনায়ক। শুধু বোর্ডার নন, দেশটির সাবেক ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই অবাক বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। দুই পক্ষের জটিল পরিস্থিতির সমাধান হয়নি বলে দেশটির ‘এ’ দল সফরে যায়নি দক্ষিণ আফ্রিকায়। তারচেয়েও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন এখন দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড স্পষ্ট করে জানিয়েছে, উদ্ভূত সমস্যার সমাধান না হলে তারা অ্যাসেজ খেলবে না। এমন পরিস্থিতি যখন অ্যাসেজ নিয়ে, তখন বাংলাদেশের ক্রিকেটার থেকে ক্রিকেটপ্রেমীরা শঙ্কিত অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের আসন্ন সফর নিয়ে। যদিও দেশটির ক্রিকেট বোর্ড বাংলাদেশ সফর নিয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জানায়নি বিসিবিকে। কিন্তু বিষয়টি এখন অনেকটাই ঘর পোড়া গরুর মতো। সিঁদুরে মেঘ দেখে যেন ভয় পাচ্ছে! দুই টেস্ট সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ১৮ আগস্ট। তাই সফর নিয়ে বিসিবি আত্মবিশ্বাসী। সফর নিয়ে গতকাল আত্মবিশ্বাসের কথাই শোনান বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন।

২০১৫ সালের অক্টোবরে দুটি টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সফর স্থগিত করে নিরাপত্তার অজুহাতে। অস্ট্রেলিয়ার ওই সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছিল বিসিবি। সফর স্থগিত করলেও বাতিল করেনি। তাই এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে ১৮ জুলাই দুটি টেস্ট খেলতে ঢাকায় আসার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। ২৭-৩১ আগস্ট মিরপুরে প্রথম টেস্ট এবং ৪-৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্ট খেলার ফিকশ্চার চূড়ান্ত হয়। শুধু তাই নয়, স্টিভ স্মিথকে অধিনায়ক করে টেস্ট স্কোয়াডও ঘোষণা করে। এখন পর্যন্ত এসব ঠিক আছে। কিন্তু দেশটির আর্থিক লভ্যাংশের ২৫ শতাংশের বন্টন নিয়ে ক্রিকেটারদের সংগঠন এবং বোর্ডের সম্পর্ক এখন দা-কুমড়ো। তাই দেশটির ভবিষ্যৎ সিরিজগুলো এখন অন্ধকারে।

ক্রিকেটার ও বোর্ডের অনড় অবস্থানে বাংলাদেশ সফর অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আটকে পড়েছে। বিসিবি বিষয়টির ওপর তীক্ষ নজর রাখছে। কিন্তু চিন্তিত নয়। কেননা সফর নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো কিছুই জানায়নি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তাই সিরিজ হবে না-এমন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিসিবি সিইও, ‘দেখুন বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ এখনো অনেকদিন বাকি। দেশটির ক্রিকেট বোর্ড আমাদের সিরিজ নিয়ে এখনো কিছু বলেনি। তাহলে কিভাবে বলি সিরিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে।’ সিরিজ হবে-এ নিয়ে ভীষণ আশাবাদী বিসিবির সিইও, ‘এই মাসে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রি ট্যুর ইনস্পেকশন কমিটি বাংলাদেশে সফরে আসার কথা। আমরা সেই কমিটির সফরের অপেক্ষায় রয়েছি। তারা আসলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।’ অ্যাসেজ না হলে আড়াই লাখ ডলার বা ২ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তেমনি অস্ট্রেলিয়া না আসলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বিসিবিকেও। কিন্তু বিসিবি আর্থিক বিষয়টি নিয়ে ভাবতে চাচ্ছে না। টেস্ট সিরিজ হউক, এটাই চাচ্ছে বলেন সিইও, ‘ টেস্ট সিরিজ না হলে আর্থিক ক্ষতি হবেই। কিন্তু আমরা সেসব নিয়ে ভাবতে চাইছি না। আমাদের ভাবনায় শুধুই ক্রিকেট। অস্ট্রেলিয়া সিরিজটি অনেক গুরুত্ব বহন করে। তাই আমরা চাচ্ছি দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজটি হউক।’ শুধু বিসিবি নয়, ক্রিকেটার থেকে শুরু করে বাংলাদেশের আম-জনতাও চাচ্ছে সিরিজটি যেন ভেস্তে না যায়।

সর্বশেষ খবর