শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

তামিমকে নিয়ে ধোঁয়াশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তামিমকে নিয়ে ধোঁয়াশা

হঠাৎ তামিমের দেশে ফেরা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। যদিও ড্যাসিং ওপেনার নিজের ফেসবুক ফ্যানপেজে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন, তাকে কেউ হুমকি দেয়নি! কারণ একান্তই ব্যক্তিগত! তবে মিডিয়ায় হুমকির বিষয়টি চলে আসায় সংশয় বেড়ে গেছে। গতকাল ইংলিশ মিডিয়ায় তামিমের নিউজিটি গুরুত্ব সহকারেই ছাপিয়েছে। ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’, ‘দ্য সান’, ‘ডেইলি মিরর’ এর মতো শীর্ষ স্থানীয় ইংলিশ পত্রিকাগুলো তাদের প্রতিবেদনে ভিন্ন ইঙ্গিত দিয়েছে।

সত্যিই কি তামিম ও তার স্ত্রীকে ধাওয়া করা হয়েছিল? যে কারণে দ্রুত দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন দেশসেরা ব্যাটসম্যান! নাকি তামিমের হুমকি পাওয়ার বিষয়টি বিশেষ কারণে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকেও কোনো কিছু জানানো হচ্ছে না। আবার তামিমের পরিবারের কেউ মুখ খুলছেন না।

তামিমের সঙ্গে ইংলিশ কাউন্টি ক্লাব এসেক্সের চুক্তি ছিল ৮ ম্যাচের। কিন্তু তামিম এক ম্যাচ খেলেই দেশে ফিরেছেন। এমনকি এক ম্যাচের টাকাও তিনি ক্লাবের কাছ থেকে নেননি। তাহলে কি এমন কারণে তামিমকে এভাবে দেশে ফিরতে হলো! সব কিছুর মধ্যে কেমন যেন রহস্যের গন্ধ।

ইংলিশ পত্রিকা ইন্ডিপেনডেন্টের দাবি, তামিম চাপের কারণেই তার পরিবারের ওপর হামলার বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন! যদিও ইংলিশ পত্রিকাগুলো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট পত্রিকার বরাত দিয়ে। তাই ঘটনার সত্যতা বোঝা যাচ্ছে না। সব কিছু মিলে তৈরি হচ্ছে বিভ্রান্তি! তবে ঘটনা যাই ঘটুক না কেন, বিষয়টির সঙ্গে নিরাপত্তা জড়িত। সে কারণেই এই স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কেউ পরিষ্কার করে কিছু বলতে চাচ্ছে না।

ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) হচ্ছে বিসিবির বন্ধু! হলি আর্টিজান হামলার পর যখন অন্য দলগুলো নাক ছিটকাচ্ছিল, তখন ইংল্যান্ড কিন্তু ঠিকই বাংলাদেশে এসে সফর করে গেছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভূয়সী প্রশংসাও করেছে তারা। তাই ইংল্যান্ডের প্রতি বাংলাদেশের একটা কৃতজ্ঞতা বোধ আছেই। সে কারণেই সামান্য একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাক সেটাও কারও কাম্য নয়।

তা ছাড়া আগামী নভেম্বরেই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে সেলিব্রেটি টি-২০ ক্রিকেট লিগ-বিপিএল। ওই টুর্নামেন্টে অনেক ইংলিশ ক্রিকেটার খেলবেন। তাই এ সময় দুই বোর্ডের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেলে ইসিবি তাদের ক্রিকেটারদের বাংলাদেশের আসার ছাড়পত্র নাও দিতে পারেন। এমনিতেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তাদের ক্রিকেটারদের বাংলাদেশে খেলার অনুমতি দেন না। যদি ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও না আসে সেক্ষেত্রে কিছুটা রঙ হারাতে পারে বিপিএল।

তাই তামিমের বিষয়টি নিয়ে জল ঘোলা করতে চায় না বিসিবি। তাদের চাওয়া, ঘটনা যাই ঘটুক না তা এখানেই শেষ হয়ে যাক। তবে বিসিবির দাবি, তামিমের এই ঘটনা নাকি বিপিএলের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। গতকাল বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দীন চৌধুরী সুজন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে বিপিএলে কোনো প্রভাব পড়ার সুযোগ নেই। এটা তো তামিমের ব্যক্তিগত বিষয়। বিসিবির সঙ্গে ইসিবির সম্পর্কে টানাপড়েন ঘটার কোনো কারণ নেই।’ এদিকে তামিমের বিষয়টি ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে উৎকণ্ঠা! তাই বিসিবির উচিত হবে, এখনই তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে এক বিবৃতি দেওয়া। যাতে সাধারণ মানুষের ভিতর আর কোনো উৎকণ্ঠা কাজ না করে। তা না হলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলতেই থাকবে। আর এই বিষয়টি যতই আলোচনা হবে, সেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য শুভ হবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর