সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আরেকটি ইতিহাস ফেদেরারের

রাশেদুর রহমান

আরেকটি ইতিহাস ফেদেরারের

চিরচেনা সেই হাসিমুখ। রজার ফেদেরারের এমন রূপ দেখতে অভ্যস্ত অল ইংল্যান্ড টেনিস কোর্টের দর্শকরা। গতকাল উইম্বলডনে আবারও চিরচেনা ফেদেরারকে দেখলেন ভক্তরা —এএফপি

ফেদেরার দুরন্ত দুর্বার। তাকে রুখবে, সাধ্য কার! শৈল্পিক ব্যাকহ্যান্ড এবং ফোরহ্যান্ডগুলো ম্যারিন চিলিচের মতো নাবালকের বোঝার সাধ্য ছিল না। সুইস কিংবদন্তির সাভগুলোও ছিল চিলিচের জন্য দুর্বোধ্য। নাদালের মতো কেউ হলে হয়তো ম্যাচটা বেশ জমত। কিন্তু নাদাল তো আউট হয়েছেন বহু আগেই। ফেদেরারের যোগ্য কেউ এমনকি উইম্বলডনের ফাইনালেও উঠতে পারলেন না! চিলিচের ডাবল এরর আর বিক্ষিপ্ত ডিফেন্সগুলো সহজেই পয়েন্ট উপহার দিচ্ছিল ফেদেরারকে। শেষ পর্যন্ত সুইস কিংবদন্তি ম্যাচটা জিতে নেন ৬-৩, ৬-১, ৬-৪ সরাসরি সেটে। খুব সহজেই জিতে গেলেন ফেদেরার। টেনিস দুনিয়া দারুণ এক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ পেল। উইম্বলডনে রেকর্ড অষ্টম এবং ক্যারিয়ারে রেকর্ড ১৯তম গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা জিতলেন রজার ফেদেরার। তাছাড়া উইম্বলডনের বুড়ো চ্যাম্পিয়নের খেতাবটাও নিজের করে নিলেন ফেদেরার। আর্থার অ্যাশ ১৯৭৬ সালে প্রায় ৩২ বছর বয়সে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। ফেদেরার আর্থার অ্যাশকে পেছনে ফেললেন পাঁচ বছর পর উইম্বলডন জয় করে। ৮ আগস্ট ৩৬ পূর্ণ হচ্ছে এ সুইস তারকার। নিজেকে জন্মদিনের উপহারটা বেশ আগেই দিয়ে রাখলেন তিনি।

ক্রোট তারকা ম্যারিন চিলিচ প্রথম সেটে শেষ গেমের শেষ পয়েন্টটা ডাবল এরর করে হেরে যাওয়ার পর খেলোয়াড়ি দৃষ্টিভঙ্গিতে এক গুরুতর অপরাধ করে বসলেন। সাইডলাইনে গিয়ে নিজের চেয়ারের উপর র্যাকেট দিয়ে সজোরে আঘাত করলেন তিনি। এর জন্য জরিমানা হতে পারে ক্রোট টেনিস তারকার। চিলিচ সম্ভবত নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছিলেন। ম্যাচের পরবর্তী অংশে এর প্রভাব স্পষ্টই দেখা গেছে। চিলিচের ডাবল এরর আর অসংখ্য ভুল থেকে ফেদেরার পয়েন্টগুলো থলেতে পুরছিলেন খুব সহজেই। পুরো ম্যাচেই চিলিচ ছিলেন নার্ভাস। এ যেন ম্যাচে নামার আগেই পরাজয় স্বীকার করে নেওয়া! এর অবশ্য কারণও ছিল। বাম পায়ে ব্যথা ছিল চিলিচের। দ্বিতীয় সেট শেষ হওয়ার পর দীর্ঘ একটা বিরতি নেন তিনি চিকিৎসার জন্য। নতুন করে ব্যান্ডেজ নিয়েই ফেদেরারের মুখোমুখি হন চিলিচ। মেডিকেল ট্রিটমেন্ট নেওয়ার পর কিছুটা ছন্দে ফিরেন চিলিচ। ততক্ষণে তিনি ম্যাচ থেকে বহু দূরে চলে গেছেন। ফেদেরার একের পর এক পয়েন্ট সংগ্রহ করে শেষ সেটটাও অনায়াসে জয় করে নেন। ম্যাচ পয়েন্টটা জেতার পর ফেদেরার গ্যালারিতে বসে থাকা স্ত্রীর দিকে উড়ন্ত চুমু ছুড়ে দেন। লাফিয়ে নিজের আনন্দ প্রকাশ করেন। ফেদেরারের জয়ে পুরুষ এককের র‌্যাঙ্কিংয়েও বেশ বড় রকমের রদবদল হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দুই ধাপ এগিয়ে তিন নম্বর স্থানে উঠে এসেছেন তিনি। শীর্ষে থাকা অ্যান্ডি মারের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান মাত্র (৭৭৫০-৬৫৪৫) ১২০৫। এই ব্যবধান দূর করতে হয়তো খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না ফেদেরারকে। ভক্তরা আরও একবার সিংহাসনে দেখতে পাবেন সুইস কিংদন্তিকে! ম্যাচটা হেরে কোনোভাবেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি ক্রোয়েশিয়ান ম্যারিন চিলিচ। রানার্সআপের পুরস্কার হাতে পেয়ে কেঁদেই ফেলেন তিনি। অবশ্য প্রতিপক্ষ রজার ফেদেরারের প্রশংসা করতে মোটেও ভুললেন না। অন্যদিকে রজার ফেদেরার জানালেন, এভাবেই আরও বহুদিন খেলে যেতে চান তিনি। ভক্তদের জন্য সুখবরই বটে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর