সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

হকির নির্বাচনী প্রচারণায় জিমি!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হকির নির্বাচনী প্রচারণায় জিমি!

আগস্টেই নাকি হকি ফেডারেশনের নির্বাচন। তবে এখন পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। জানা গেছে, ক্রীড়া পরিষদ মনোনীত যে পাঁচজনকে কাউন্সিলর করা হয়েছে তার অনুমোদন লাগে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে। এই অনুমোদন হওয়ার পরই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হবে। তাই বলে থেমে থাকেনি প্রচার-অভিযান। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোট চাইতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। এই পদে এখন পর্যন্ত দুজন সংগঠকের নাম জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে।

হকির দুই পরিচিত মুখ খাজা রহমত উল্লাহ্ ও রশিদ শিকদার নিজেরাই ঘোষণা দিয়েছেন তারা সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। রহমত উল্লাহ্ শুধু সংগঠক নন, মাঠ কাঁপানো খেলোয়াড়ও ছিলেন। সাধারণ বীমা, মোহামেডান ও আবাহনী— যখন যে দলে খেলেছেন শিরোপা জেতার অংশীদার ছিলেন। জাতীয় দলেও তার অবদান  ভোলার নয়। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারের ইতি টানলেও হকির মায়া ছাড়তে পারেননি। যার রক্তে হকি মিশে গেছে তিনি মায়া ছাড়েন কীভাবে? আবাহনী থেকে সাংগঠনিক ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরবর্তীতে ফেডারেশনে জড়িয়ে পড়েন। যুগ্ম সম্পাদক থেকে হকির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হন। বর্তমানে তিনি সহ-সভাপতি। অন্যদিকে রশিদ শিকদারও দেশের হকির পরিচিত মুখ। ঊষা ক্রীড়া চক্রে তার সাংগঠনিক দক্ষতা ফেডারেশনে নিয়ে আসেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি হকির বিভিন্ন পদে জড়িয়ে আছেন। রহমত ও রশিদ দীর্ঘদিন ধরে কমিটিতে আছেন। এবার দুজন একে অপরের প্রতিপক্ষ। লড়াই যে হাড্ডাহাড্ডি হবে এ নিয়ে কারও সংশয় নেই। তবে রহমত উল্লাহ্র তুলনায় নির্বাচনী প্রচারে কিছুটা এগিয়ে আছেন রশিদ। এদিকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হলেও এখনই বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। ক্রিকেট ও ফুটবলের পর হকির নির্বাচনে নাকি টাকা উড়ছে। যদিও বিষয়টি কেউ স্বীকার করছেন না। বলছেন ভিত্তিহীন। কিছুদিন আগে নির্বাচনকে ঘিরে রশিদ এক অনুষ্ঠানও করেন। অনেকে একে শোডাউন বললেও রশিদ বলেন, ‘আমি হকির মুরব্বিদের ডেকে তাদের কাছে দোয়া ও পরামর্শ চেয়েছি। সাধারণ সম্পাদক গুরুত্বপূর্ণ পদ। এখানে অনেক পরিকল্পনা ও বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করতে হয়। মতবিনিময় সভায় এ ব্যাপারে মুরব্বিদের পরামর্শ চেয়েছি। এখানে তো দোষের কিছু দেখছি না।’ একজন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারে একাধিক অনুষ্ঠান করতে পারেন। কিন্তু কথা উঠেছে সেই অনুষ্ঠানে রাসেল মাহমুদ জিমির উপস্থিতি দেখে। জিমি বর্তমানে জাতীয় দলের খেলোয়াড়ই নন, অধিনায়কও। তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ থাকলেও স্বয়ং ফেডারেশনের সভাপতি দেশের কথা ভেবে তাকে এশিয়া কাপের ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। জিমি দেশের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় এ নিয়ে কারও সংশয় নেই। কিন্তু তিনি তো কারেন্ট ন্যাশনাল টিমের প্লেয়ার। এ অবস্থায় কারও নির্বাচনী প্রচারে বা অনুষ্ঠানে যোগ দেন কীভাবে? এই বিধি রাসেল বা রশিদ ভঙ্গ করেন কীভাবে?

রশিদ বলেন, ‘কারা এ ধরনের অভিযোগ তুলতে পারেন তা আমার জানা আছে। কোনটা ভুল বা ঠিক তা কি আমার জানা নেই? সত্যি বলতে কি, জিমিকে সেদিন নিমন্ত্রণই করা হয়নি। অনুষ্ঠান শেষে জিমিকে দেখে আমিও অবাক হয়েছি।  সে-ই আমাকে জানায়, অসুস্থ বাবাকে বাসায় নিয়ে যেতে এসেছি। হ্যাঁ, সেদিনের অনুষ্ঠানে দেশের হকি ব্যক্তিত্ব সোনা ভাইকে (সোনা মিঞা) আমন্ত্রণ জানানো হয়। উনি খুবই অসুস্থ, ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না। সোনা ভাইয়ের ছেলে জিমি। এখন আপনারাই বলুন, ছেলে যদি তার অসুস্থ বাবাকে নিতে আসেন তা কি বিধি ভঙ্গের মধ্যে পড়ে? এখানে কি মানবতা বলে কিছু নেই।’ যাক রশিদ বললেও জিমি নাকি আগে থেকেই ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন। তবে আরেক রুমে। কোনটা যে সত্য এটাই রহস্য থেকে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর