রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

তবু আশাবাদী বিসিবি

বিরোধ মেটেনি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টানেলের শেষ প্রান্তে আলো দেখার মতো সূক্ষ্ম একটি সম্ভাবনা ছিল। পরশু ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও ক্রিকেটারদের সংগঠনের মধ্যে বৈঠক শেষে সেই সম্ভাবনা ভেসে গেছে তাসমান সাগরের উত্তাল জলে। দুই পক্ষের অনড় অবস্থানে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজগুলোর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঢাকা পড়তে যাচ্ছে কোনো সন্দেহ নেই। ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেটারদের এমন কঠোর অবস্থানে দেশটির বাংলাদেশ সফর এখন কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি ক্রিকেট অনলাইন জানিয়েছে, সিরিজ নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া নাকি একটি সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছে বিসিবি বরাবর। বার্তায় জানানো হয়েছে, সফর বাতিল হতে পারে। বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া থেকে এমন কোনো বার্তা পাঠানো হয়নি। এমনকি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে কোনো কথাও বলেনি। বরং ২৫ জুলাই বোর্ডের একটি পরিদর্শক দল সফর করবে বাংলাদেশে। এতে করেই সিরিজ মাঠে গড়ানোর আশায় বুক বেঁধে আছে বিসিবি। 

২০১০ সালে বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ খেলে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১৪ সালে টি-২০ বিশ্বকাপেও খেলেছে দেশটি। টেস্ট খেলেছে ২০০৬ সালে। এরপর গত ১১ বছরে দুই দেশ আর কোনো টেস্ট সিরিজ খেলেনি। ২০১৫ সালের অক্টোবরে দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজ খেলার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে শেষ মুহূর্তে সফর স্থগিত করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য ভবিষ্যতে সফর করবে বলে জানিয়েছিলেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও জেমস সাদারল্যান্ড। সেই নিশ্চয়তার ভিত্তিতে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দুই টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফর করার কথা অস্ট্রেলিয়ার। বোর্ডটির নিরাপত্তা পরিদর্শক দল বাংলাদেশ সফর করে সন্তুষ্ট হয়। এরপর দুই বোর্ডের আলোচনা সাপেক্ষে সিরিজের তারিখ চূড়ান্ত করে দুই টেস্টের। ২৭-৩১ আগস্ট প্রথম টেস্টের ভেন্যু মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম এবং ৪-৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম। দুই টেস্ট সিরিজের জন্য আবার ১৩ সদস্যের স্কোয়াডও ঘোষণা করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। এ পর্যন্ত সবই ঠিক আছে। কিন্তু ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) নতুন সভাপতি হওয়ার পর থেকেই টানাপড়েন শুরু। নতুন সভাপতি জানিয়েছেন, লভ্যাংশের ৩০ শতাংশ ক্রিকেটারদের মধ্যে ভাগ করা হবে না। আগে লভ্যাংশের ৩০ শতাংশ ২৩০ ক্রিকেটারদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হতো। নতুন সভাপতি বলছেন, শুধুমাত্র জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যেই ভাগ করে দেওয়া হবে। ক্রিকেটারদের সংগঠন এটা মানেনি। তাই টানপড়েন। টানাপড়েনের জন্য শুধু বাংলাদেশ সিরিজ নয়, অ্যাসেজও ভেস্তে যেতে পারে। ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বাতিল করে। বোর্ড ও ক্রিকেটারদের টানাপড়েনের জন্য বাংলাদেশ সিরিজ সংশয়াচ্ছন্ন। এটা ভালো করেই জানেন বিসিবি সিইও। জেনেই বলেছেন, ‘আমরা সবাই দেখছি অস্ট্রেলিয়ায় একটি সমস্যা চলছে। তারপরও দেশটির ক্রিকেট বোর্ড আমাদের এখন পর্যন্ত কিছুই জানায়নি। সুতরাং সিরিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগাম কিছু বলা সম্ভব নয় আমাদের। সিরিজের নিরাপত্তা ও লজিস্টিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার একটি পরিদর্শক দল ঢাকায় আসছে ২৫ জুলাই। সুতরাং আশা একেবারে ছেড়ে দিই কিভাবে? সিরিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই কিছুই বলা উচিত হবে না।’  বিসিবি সিইও সিরিজ নিয়ে আগাম কিছুই বলতে রাজি হননি। তবে এটা সত্যি, ক্রিকেটারদের সঙ্গে লভ্যাংশ নিয়ে বোর্ডের সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারই বলা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর