সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিদেশি ক্রিকেটার কোটা নিয়ে বিতর্ক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিদেশি ক্রিকেটার কোটা নিয়ে বিতর্ক

দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা। ওয়ানডে অধিনায়ক বাংলাদেশের। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে গত চার আসরে তিনবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দল। এবার নেতৃত্ব দিবেন রংপুর রাইডার্সকে। গতকাল দলটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সেরেছেন দেশসেরা এই ক্রিকেটার। রংপুর এবার চ্যাম্পিয়ন হবে কি না, এ নিয়ে আগাম কিছু বলতে চাননি তিনি। কিন্তু একাদশে বিদেশি ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়িয়ে দেশের ক্রিকেটার কমানো মেনে নিতে পারেননি। রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক মনে করেন, আগের মতো প্রতিটি দলে সাত দেশি ক্রিকেটার খেললে দেশেরই লাভ হতো। ব্যাকআপ ক্রিকেটারের সংখ্যাটা বাড়তো। শুধু মাশরাফি নন, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অনেকেই দেশি ক্রিকেটার কমিয়ে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর পক্ষে সম্মত নন।

বিদেশি ক্রিকেটারের কোটা বাড়ানোর বিষয়ে বেশ অনেকদিন ধরেই আলাপ-আলোচনা করছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। আজ সভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে গভর্নিং কাউন্সিল। বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল বিদেশি ক্রিকেটারের কোটা বাড়ানোর বিষয়ে আগামীকাল (আজ) সভা করে চূড়ান্ত করবে। অধিকাংশ ফ্র্যাঞ্চাইজি যা চাইবে, তাই হবে।’ শোনা যাচ্ছে আট ফ্র্যাঞ্চাইজির পাঁচটি বিদেশি ক্রিকেটার বাড়ানোর বিপক্ষে। তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি মাত্র পক্ষে। কিন্তু বিসিবি পরিচালক বিষয়টি মানতে রাজি নন, ‘আমি যতটুকু জানি পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজি বিদেশি ক্রিকেটার বাড়ানোর পক্ষে। একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি কোনো মত দেয়নি। দুটি বিপক্ষে।’ আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে বিপিএলে এবার প্রতি দলে পাঁচ বিদেশি খেলবেন। এর ফলে কমবে দেশি ক্রিকেটারের সংখ্যা। আগের মৌসুমে ৭জন করে সাত ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ৪৯ জন দেশি ক্রিকেটার খেলেছেন কমপক্ষে। এবার দল বাড়লেও দেশি ক্রিকেটারের সংখ্যা কমে দাঁড়াচ্ছে ৪৮-এ। কথা হচ্ছে, বিদেশি ক্রিকেটার বাড়ালে তাদের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। ক্রিস গেইল, শহীদ আফ্রিদী, মোহাম্মদ আমিরদের মতো মানসম্মত ক্রিকেটার খেললে দেশের ক্রিকেটের লাভ। কিন্তু মানহীন ক্রিকেটার আনলে তাতে দেশের ক্রিকেট কত লাভবান হবে? গত মৌসুমে ৫৪ বিদেশি ক্রিকেটার খেলে গেছেন বিপিএলে। কিন্তু পারফরমার ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন। এবার সংখ্যা এমনিতেই বাড়ছে। কমপক্ষে খেলবেন ৫৬ ক্রিকেটার। সংখ্যা আরও বাড়তে পারে আসর শেষে। বিদেশি ক্রিকেটার বাড়ানোর বিষয়ে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক মাশরাফি জানান বিদেশি ক্রিকেটার বেশি খেলালে বাংলাদেশের ক্রিকেটের কতটা লাভ হবে বিষয়টি বুঝতে পারছেন না, ‘লোকাল ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ বিপিএলে। এবার যদি পাঁচ বিদেশির সঙ্গে ৬ জন স্থানীয় ক্রিকেটার থাকেন, তাহলে জানি না, কতটা কি হবে? আট দলে যদি সাতজন স্থানীয় ক্রিকেটার খেললে সংখ্যা হতে পারে ৫৬ জন। পুরো আসরে ক্রিকেটারদের সংখ্যাটা হবে ১০০। সেখান থেকে যদি দুজন ক্রিকেটারও বের হন, তাহলে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কারণ আমাদের ব্যাকআপ ক্রিকেটার নেই।’

দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের কথা ভেবে যদি বিদেশি ক্রিকেটারের কোটা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল, তাহলে একই সঙ্গে ভাবা উচিত দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ পাইপলাইন শক্তিশালী করার বিষয়টিও।

সর্বশেষ খবর