বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

উপভোগ্য ম্যাচে শেখ জামালের জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

উপভোগ্য ম্যাচে শেখ জামালের জয়

৯ মিনিটেই এগিয়ে গেল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। গাম্বিয়ান স্ট্রাইকার মোমোদো চমৎকার হেডে শেখ রাসেলের জালে বল পাঠান —বাংলাদেশ প্রতিদিন

শোকের মাস আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ তার তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ পেশাদার লিগের দুই ফুটবল জায়ান্ট ক্লাবের নাম বঙ্গবন্ধুর দুই ছেলে শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের নামে। শেখ কামালের নামে সরাসরি কোনো ক্লাব নেই। কিন্তু দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব ঢাকা আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামাল। ফুটবল বিশ্বের ইতিহাসে তিন ভাইয়ের নামে ফুটবল ক্লাব আছে কি না, সেটা ইতিহাস ঘেঁটে বের করাও সম্ভব নয়! শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের দায়িত্বে দুই ভাই। যা বিরল ঘটনা। শেখ রাসেলের চেয়ারম্যান বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান এবং শেখ জামালের সভাপতি বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান। দুই্ ভাই দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের ফুটবলের অন্যতম দুই শক্তিশালী দলে রূপ নিয়েছে শেখ রাসেল ও শেখ জামাল। পেশাদার লিগের দশম আসরে গতকাল দুই ফুটবল জায়ান্ট অংশ নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকালে দুই দলই উপভোগ্য ম্যাচ উপহার দেন মাঠে উপস্থিত ফুটবলপ্রেমীদের। উত্তেজনায় ঠাঁসা উপভোগ্য ম্যাচে শেখ জামাল অন্তিম মুহূর্তে ২-১ গোলে হারিয়েছে শেখ রাসেলকে। টানা তিন জয়ে জোসেফ আফুসির দল এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে। লিগে প্রথম হারে শেখ রাসেলের পয়েন্ট ৩ ম্যাচে ৪।

পেশাদার লিগে শেখ জামাল তিন বারের চ্যাম্পিয়ন এবং শেখ রাসেল একবারের। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় এবার দুই দলই শিরোপা জয়ের মতো দল গড়েছে। শেখ রাসেল প্রথম ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধাকে উড়িয়ে লিগ শুরু করে। অবশ্য পরের ম্যাচে পয়েন্ট হারায় ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে ড্র করে। শেখ জামাল প্রথম দুই ম্যাচে মোহামেডান ও টিম বিজেএমসিকে হারিয়ে খেলতে নামে গতকাল। দুই দলই আত্মবিশ্বাসী ফুটবল খেলতে শুরু করে ম্যাচের বাঁশি বাজাতেই। নবম মিনিটে দর্শকরা প্রথম গোল দেখতে পান। এগিয়ে যায় শেখ জামাল। ডান প্রান্ত  থেকে এনামুল হকের কর্নারে শেখ জামালের গাম্বিয়ান স্ট্রাইকার মোমোদো বোহ হেড করেন। বলটি শেখ রাসেলের গোলরক্ষক জিয়াউর রহমানকে পরাস্ত করে জালে ঠাঁই নেয়(১-০)। এগিয়ে যাওয়ার পর খেলায় আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় শেখ জামাল। ১৩ মিনিটে গোলসংখ্যা দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল শেখ জামাল। কিন্তু দলটির নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার রাফায়েল ওডোইনের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে গোল পায়নি তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা। দুই মিনিট পর ফের সুযোগ সৃষ্টি করে ধানমন্ডি পাড়ার দলটি। এনামুলের ফ্রি কিক কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন জিয়াউর। প্রথমার্ধে গতিশীল ফুটবল খেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণটা নিজেদের করে নেয় আফুসির দল। এর মধ্যেই ৩৭ মিনিটে চলতি লিগের সেরা গোলটি করেন খালেকুজ্জামান সুবজ। কাউন্টার অ্যাটাকে বল পেয়ে ডি বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে শেখ জামালের গোলরক্ষক মিতুল হোসেনকে পরাস্ত করেন (১-১)। সমতার ফেরার পর দুই দল নিজেদের পায়ে বল রাখার চেষ্টা করে। পরে প্রথমার্ধে আর গোল হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই গোছানো ফুটবল খেলতে চেষ্টা করে। দুই দলই চেষ্টা করে এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল হচ্ছিল না। ৫৫ মিনিটে মোমোদো বোহ’র ক্রসে রাফায়েল ব্যর্থ হন হেড করতে। ফলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি শেখ জামালের। ৬০ মিনিটে শেখ রাসেল সুযোগ নষ্ট করে। বিশ্বনাথের ক্রসে দাওদা সিসে ভলি নেন। কিন্তু বল তার ঠিকানা খুঁজে পায়নি। এভাবেই খেলা শেষের দিকে এগোতে থাকে। ৯৩ মিনিটে রক্ষণভাগের ভুলে গোল হজম করে শেখ রাসেল। ডি বক্সের বাইরে থেকে মোমোদ বোহ হেড করে বল দেন আগুয়ান বদলি হিসেবে খেলতে নামা সলোমন কিংকে। সলোমন বাঁ পায়ের ভলিতে জয়োৎসবে ভাসান শেখ জামালকে (২-১)। গোলের পরই খেলার সমাপ্তি বাঁশি বাজান রেফারি। এই গোলে ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে শেখ জামাল।

এদিকে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রহমতগঞ্জ ১-০ গোলে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে পরাজিত করে পুরো পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। ২৫ মিনিটে শারহান হালদারের কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করেন মোহাম্মদ ইলিয়াস। এরপর আরও কয়েকটি সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি পুরান ঢাকার দলটি। এটি পেশাদার লিগে রহমতগঞ্জের দ্বিতীয় জয়। প্রথম ম্যাচে আরামবাগকে ৪-২ গোলে হারালেও দ্বিতীয় ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধার কাছে হেরে যায়। অন্যদিকে ব্রাদার্স আগের দুই ম্যাচে টিম বিজেএমসি ও শেখ রাসেলের সঙ্গে ড্র করেছিল। অর্থাৎ গতকালই এবারের লিগে প্রথম হার মানল গোপীবাগের দলটি।

সর্বশেষ খবর