বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখলেন এনামুল জুনিয়র

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখলেন এনামুল জুনিয়র

এই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে টেস্ট ক্রিকেটে হারানোর স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। এই প্রথম আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে ক্রিকেটার, কোচ, টিম ম্যানেজমেন্ট ও সাবেক ক্রিকেটাররা বলছেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর ক্ষমতা রয়েছে টাইগারদের। দিন কয়েক আগে কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে পরিষ্কার করেই জানিয়েছেন, তার টার্গেট ‘ওয়ান অ্যান্ড অনলি’-অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ ব্যবধানে হারানো। সেটা কি সম্ভব স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, ওসমান খাজা, জশ হ্যাজল ওডদের বিপক্ষে? বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের নায়ক এনামুল হক জুনিয়র সরাসরি হারানোর কথা না বলে শুধু জানালেন, ২০০৬ সালের চেয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক গোছানো দল এবং সিরিজে পুরোপুরি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন মুশফিকুর রহিমরা।

অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর নিয়ে গত একমাস নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে নানাভাবে। মোট আয়ের লভ্যাংশের বণ্টন নিয়ে দেশটির ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বোর্ডের অনড় অবস্থানে ভেস্তে যেতে বসেছিল সিরিজটি। যদিও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কখনো সিরিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগাম কিছু বলেনি। তারপরও অতীতের কথা মাথায় রেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। অবশেষে ক্রিকেটার ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সমঝোতা হওয়ায় সিরিজটি হচ্ছে এবং দুই টেস্ট সিরিজ খেলতে ১৮ আগস্ট ঢাকায় আসবে অস্ট্রেলিয়া। রিকি পন্টিংয়ের অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেছিল ২০০৬ সালে। সব মিলিয়ে দুই দেশ এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে চারটি এবং তিনটিতে বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে এবং ফতুল্লায় লড়াই করে হেরেছিল ৩ উইকেটে। ফতুল্লায় খেলেছিলেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের নায়ক এনামুল হক জুনিয়র। দুই ইনিংসে বোলিং করে উইকেট নিয়েছিলেন ৩টি। ৩১ বছর বয়স্ক বাঁ হাতি স্পিনারের ক্যারিয়ার খুব বেশি উজ্জ্বল নয়। ১৫ টেস্টে উইকেট সংখ্যা ৪৪টি। তারপরও দেশের প্রথম টেস্ট জয়ের নায়ক এনামুল স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছেন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্ট জয়ের নায়ক এনামুল আসন্ন সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মুশফিকদের এগিয়ে রেখেছেন। এগিয়ে রাখার পেছনে যুক্তি দিয়েছেন নানা ধরনের। ২৭-৩১ আগস্ট প্রথম টেস্ট মিরপুর স্টেডিয়ামে এবং ৪-৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট চট্টগ্রামে। চলতি বছর বাংলাদেশ ঘরের মাঠে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। ঘূর্ণি উইকেট বানিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামরা ঘূর্ণিতে কুপোকাত করেছেন ইংলিশদের। এবারও ঘূর্ণি উইকেট বানাবে বলেই বিশ্বাস এনামুলের, ‘অস্ট্রেলিয়ার পেস অ্যাটাক বিশ্বসেরা। উপমহাদেশের উইকেটগুলোতে সাধারণত স্পিনাররা সুবিধা পেয়ে থাকেন। স্বাগতিকরা সুবিধা নিয়ে আমার বিশ্বাস আমাদের উইকেটগুলো স্পিনিং হবে। সেখানে তিন স্পিনার সাকিব, মিরাজ ও তাইজুল স্বাগতিকতার সুযোগকে পুরোপুরি কাজে লাগাবেন বিশ্বাস করি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়াকে কাবু করতে হলে স্পিনারদেরই ভালো করতে হবে। আমি মনে করি স্পিনাররাই সিরিজের ট্রাম্প কার্ড।’

শুধু স্পিনারদের কাজ সারলেই হবে, সেটা নয়। অস্ট্রেলিয়াও এখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ডারউইনে স্পিনিং উইকেট বানিয়ে অনুশীলন করছে। ফলে সাকিব, মিরাজ, তাইজুলদের জন্য কাজটি সহজ হবে না। আবার এখানকার উইকেটে মানিয়ে নেওয়ার মতো স্পিনারও থাকছে স্মিথ বাহিনীতে। তাই তামিম ইকবাল, মুশফিক, ইমরুল কায়েস, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুমিনুল হকদের জোর লড়াই করতে হবে নাথান লিওন, স্টেপশনদের ঘূর্ণির বিপক্ষে। অসি স্পিনারদের বিপক্ষে জোর লড়াই করতে হবে টাইগার ব্যাটসম্যানদের। তারপরও আত্মবিশ্বাসী এনামুল, ‘২০০৬ সালের দলের সঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশের ব্যাপক পার্থক্য। এখনকার দল অনেক গোছানো। দলের ব্যাটসম্যান তামিম, মুশফিকরা ফর্মে রয়েছেন। দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা যখন ফর্মে থাকেন, তখন দল এমনিতেই আত্মবিশ্বাসী থাকে।’ 

সর্বশেষ খবর