বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

হকিতে দরকার ঐকমত্যের কমিটি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হকিতে দরকার ঐকমত্যের কমিটি

প্রতাপ শঙ্কর হাজরা

গণতান্ত্রিক রাস্তায় হাঁটতে হলে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। হকি ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। এখন নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দায়িত্ব নেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অক্টোবরে ঢাকায় এশিয়া কাপের মতো মেগা আসর। তার আগে ২০ আগস্ট নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করাটা কোনোমতেই ঠিক হয়নি। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এই কথাই বললেন, হকি ব্যক্তিত্ব প্রতাপ শংকর হাজরা। ঢাকা মোহামেডান, ঢাকা আবাহনীসহ বিভিন্ন দলে সুনামের সঙ্গে খেলেছেন তিনি। খেলছেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জাতীয় দলেও। খেলা থেকে অবসর নিলেও হকির মায়া ছাড়তে পারেননি। বিভিন্ন সময়ে হকি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটিও ছিলেন। বাংলাদেশে হকিতে প্রতাপের অবদান কখনো ভুলবার নয়। হকির কাউন্সিলর হয়েছেন। তবে প্রতাপ জানালেন, নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছি না। তিনি বলেন, ভোটতো হবেই তা যদি এশিয়া কাপের পরে হতো তাহলে কি হকির গণতন্ত্র বিলীন হয়ে যেত? এশিয়া কাপে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও জাপানের মতো শক্তিশালী দেশ অংশ নিচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশের শিরোপা তো দূরের কথা সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আয়োজক দেশ বলে বাংলাদেশের দায়িত্ব অনেক। এখানে দেশের সুনামও জড়িত। তাই দরকার মিলেমিশে কাজ করা। নির্বাচনের কারণে কাজে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটার শঙ্কা রয়েছে। প্রতাপ বলেন, এমন মেগা আয়োজনের দম ফেলানোর সুযোগ নেই। অথচ নির্বাচন ঘিরে সংগঠকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তারিখ যখন ঘোষণা হয়েছে তখন নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই। পেছালেই কোনো না কোনো পক্ষ আপত্তি তুলবে। তবে ক্রীড়া পরিষদের উচিত ছিল এশিয়া কাপের কথা চিন্তা করে নভেম্বরের দিকে নির্বাচন দেওয়া। যারা হারবে তারা কি এশিয়া কাপের জন্য পরিশ্রম করবে? আর যারা জিতবে তারা কি পরাজিত প্রার্থীদের কাজে লাগাবে। এবার ফ্লাডলাইটে এশিয়া কাপ হবে। যা বাংলাদেশ অভ্যস্ত নয়। এখানে কত কাজ, হয়তো আমার কথা কারও খারাপ লাগতে পারে তারপরও বলছি যারা নির্বাচন করবেন তাদের মাথায় এশিয়া কাপের বিষয়টি কাজ করছে কি? তারা তো নির্বাচনী প্রচার নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আর এটাই স্বাভাবিক। তাই ক্রীড়া পরিষদ এশিয়া কাপের আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করল কেন? অনেক ফেডারেশনে তো দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন হচ্ছে না। সেই ক্ষেত্রে হকির নির্বাচন আরও পর হলে হকির কি বড় ক্ষতি হয়ে যেত? যেভাবে এগুচ্ছে তাতে হকির নির্বাচনে দুটো প্যানেল যে হবে তা নিশ্চিত। এক্ষেত্রে সমঝোতা বা ঐক্যমতের প্যানেলের প্রয়োজন ছিল না। প্রতাপ বলেন, আমরা বলি স্পোর্টসের লোকরা স্পোর্টিং মাইন্ডের। বাস্তবে কি তাই, সমঝোতামূলক নির্বাচিত কমিটি হলে আমি খুশি হতাম। আমিও চাই কোনো প্যানেলে না গিয়ে ঐক্যমতের কমিটি হোক। শুনেছি কেউ কেউ এ উদ্যোগ নিয়েছেন। সফল হলে ভালো, কোনো ঝামেলা হবে না। কিন্তু সমঝোতায় আসা যাবে কিনা সেটাই প্রশ্ন। কারণ এখানে কাউকে ছাড় দিতে হবে। যারা বড় পদে প্রার্থী হচ্ছেন তাদের ভিতর কি ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রয়েছে। যদি থাকে তাহলে তো ভালো। আমি কোনো মতেই চাই না দুটো প্যানেলে বিভক্ত হয়ে নির্বাচন হোক। এতে বিভেদ বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। আবারও বলছি সামনে এশিয়া কাপের মতো মেগা আসর। এখানে দেশের হকির বৃহত্তর স্বার্থে এবার অন্তত সমঝোতামূলক নির্বাচিত কমিটি হোক।

সর্বশেষ খবর