রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বড় বাধা পেরোল চট্টগ্রাম আবাহনী

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বড় বাধা পেরোল চট্টগ্রাম আবাহনী

এমন মাঠেও ফুটবল: কর্দমাক্ত মাঠে হাঁটার উপায় নেই। তবু পেশাদার লিগে শেখ রাসেল ও চট্টগ্রাম আবাহনীকে লড়তে হয়েছে। লিগ কমিটি খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই দলগুলো মাঠে নামছে। যে কোনো সময় ফুটবলাররা বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফ্লাড লাইটের আলোয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠ দেখে মনে হচ্ছিল, কিছুক্ষণ আগে হাল-চাষ করা হয়েছে। সারা দিনের বৃষ্টিতে মাঠে পানি জমেছিল জায়গায় জায়গায়। মাঠ হয়ে উঠেছিল ভারী। এমন ভারী মাঠে চট্টগ্রাম আবাহনী ও শেখ রাসেলের ফুটবলারদের অংশগ্রহণই ছিল কঠিন। তার ওপর দুই দলের ফুটবলারদের চষে বেড়িয়ে খেলায় প্রায় অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে মাঠ। এমন অনুপযুক্ত কর্দমাক্ত মাঠে চার ম্যাচে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। বিপরীতে টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এল চট্টগ্রাম আবাহনী। বাংলাদেশ পেশাদার লিগের একমাত্র খেলায় চট্টগ্রাম আবাহনী ৩-১ গোলে হারিয়েছে শেখ রাসেলকে। এ জয়ে বড় বাধা পেরোল গতবারের রানার্সআপরা। দলটির টানা চার জয়ে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে জোড়া গোল করেছেন নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার আফিজ ওলাওয়ালে ওলাডিপো। এখন পর্যন্ত লিগে ওলাডিপো গোল করেছেন তিনটি এবং তওহিদুল আলম সবুজ টানা চার ম্যাচে চার গোল করে এককভাবে সবার ওপরে অবস্থান করছেন। আগের ম্যাচে দুর্ভাগ্যজনকভাবে অন্তিম মুহূর্তের গোলে শেখ জামালের কাছে হেরেছিল শিরোপা প্রত্যাশী শেখ রাসেল। অথচ দলটি পেশাদার লিগ শুরু করেছিল মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে অসাধারণ এক জয়ে। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি পরের ম্যাচগুলোতে। দ্বিতীয় ম্যাচে ড্র করে ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে। তৃতীয় ম্যাচে হেরে যায় শেখ জামালের কাছে। পরে গতকালের ম্যাচটি ছিল মরণবাঁচন। ভারী মাঠে সাইফুল বারী টিটুর কৌশলের সঙ্গে পেরে উঠেননি শফিকুল ইসলাম মানিক। খেলার ১১ মিনিটে ম্যাচের বন্ধ্যত্ব ঘুচায় চট্টগ্রাম আবাহনী। বাঁ প্রান্ত থেকে অধিনায়ক জাহিদ হোসেনের কর্নারে ওলাডিপোর হেডে বল তার নির্ধারিত জায়গা খুঁজে নেয় (১-০)। ওই গোলের পর ভারী মাঠে আক্রমণের ধার বাড়াতে চেষ্টা করে বন্দরনগরীর দলটি। অন্যদিকে সমতায় ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ২০১৩ সালের পেশাদার লিগের চ্যাম্পিয়নরা। ২৫ মিনিটে দুর্ভাগ্য সঙ্গী হওয়ায় সমতাসূচক গোলটি পায়নি শেখ রাসেল। দলটির গাম্বিয়ান স্ট্রাইকার দাওদা সিসের ফ্রি কিক প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে পরাস্ত করলেও সাইডপোষ্টে লেগে মাঠের বাইরে চলে যায়। এভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধে মাঠ পুরোপুরি অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে খেলার। বল আটকে যাচ্ছিল মাঠে। কর্দমাক্ত মাঠে সমতা আনতে দাওদা সিসে, মেহবুব হাসান নয়ন, মোনায়েম খান রাজুরা বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। কিন্তু ফিনিশারের অভাবে গোল পাচ্ছিল না। ৫২ মিনিটে ডুকাকো উডোকা অ্যালিসনের আত্মঘাতী গোলে সমতায় ফেরে শেখ রাসেল।  মধ্য মাঠ থেকে শেখ রাসেলের এক খেলোয়াড়ের বাড়ানো বলে ওডোকা হেড করে গোলরক্ষক রানার হাতে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল রানাকে ফাঁকি দিয়ে জালে জায়গা নেয় (১-১)। সমতা আসার পর খেলা মাঝমাঠেই হতে থাকে। ৭৩ মিনিটে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। ডান প্রান্ত থেকে মনসুর আমিনের শূন্যে ভাসানো ক্রসে ওলাডিপোর দুর্দান্ত হেড বোকা বানায় রাসেলের গোলরক্ষক জিয়াউর রহমানকে (২-১)। লিগে ওলাডিপোর এটা তৃতীয় গোল।  ৮০ মিনিটে জয় নিশ্চিত করে নেয় চট্টগ্রাম আবাহনী। বাঁ প্রান্ত থেকে সতীর্থের ডিফেন্স চেড়া বল ধরে সবুজ ঠাণ্ডা মাথায় গোলরক্ষককে পরাস্ত করে জালে পাঠান (৩-১)। লিগে এটা সবুজের চার নম্বর গোল। এই জয়ে চট্টগ্রামের পয়েন্ট ১২ এবং রাসেলের পয়েন্ট ৪।

 

সর্বশেষ খবর